E-Paper

এক রাতে পাঁচটি মৃত্যু, বেপরোয়া বাইক সামলাতে ‘ব্যর্থ’ ট্র্যাফিক

লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ৩টে নাগাদ দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার প্রিন্সেপ ঘাটের কাছে একটি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারলে মৃত্যু হয় এক তরুণী ও এক যুবকের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৮
An image of Death

—প্রতীকী চিত্র।

রাতের শহরে ফের মোটরবাইকের বেপরোয়া গতির বলি হলেন পাঁচ জন। মঙ্গলবার রাতে চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের নজরদারি নিয়ে।

লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ৩টে নাগাদ দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার প্রিন্সেপ ঘাটের কাছে একটি মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারলে মৃত্যু হয় এক তরুণী ও এক যুবকের। মৃত তরুণীর নাম মেরি মার্গারেট (২৪) এবং যুবকের নাম মহম্মদ ইসলাম (২৩)। জানা গিয়েছে, বন্ধুদের সঙ্গে প্রমোদভ্রমণে বেরিয়েছিলেন ওই যুবক। পিছনে তরুণী ছাড়াও আরও এক যুবক ছিলেন। প্রিন্সেপ ঘাট গেটের কাছে বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা জখম তিন জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে গেলে বাইকচালক ও তরুণীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অন্য দিকে, কাজ থেকে ফেরার পথে ওই রাতে গরফা থানার কালিকাপুর বাজারের কাছে মৃত্যু হয় বাইকচালক এক যুবকের। বিশাল সর্দার (২৩) নামে ওই যুবক কসবার রাজডাঙার বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিনা হেলমেটে বাইক চালিয়ে কালিকাপুর ক্যানাল সাউথ রোড ধরে আসার সময়ে দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাস্তার বাঁ দিকে একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। সেই গাড়ির চালক দরজা খুলে বেরোতে গেলে পিছন থেকে দ্রুত গতিতে এসে বাইকটি গাড়ির দরজায় ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। বিশালকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

ওই রাতেই সাড়ে ১১টা নাগাদ পশ্চিম বন্দর থানার সি জি আর রোডে একটি স্কুটার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে পিছনে থাকা লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় স্কুটারচালকের। মৃতের নাম মেহেতাব হোসেন (২৭)। দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল থেকে লরি নিয়ে পালান চালক। পুলিশ জানায়, ওই রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বাসন্তী হাইওয়েতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারে আরও একটি মোটরবাইক। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয় মোটরবাইকের আরোহীর। মৃতের নাম দীপায়ন মণ্ডল (৫৫)।

এক দিনে এতগুলি দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। যদিও প্রতি বারই বর্ষশেষের উৎসবে শহরে বেপরোয়া গাড়ির দৌরাত্ম্য বাড়ে। এর জেরে দুর্ঘটনাও ঘটে। এই নিয়ে লালবাজারের তরফে বিভিন্ন গার্ডকে সতর্ক করা হয়েছিল বলেও খবর। কিন্তু সেই দৌরাত্ম্য থামাতে ব্যর্থ পুলিশ— এক রাতে পাঁচটি মৃত্যুর পরে তেমন অভিযোগই উঠেছে।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই বুধবার সকালে লালবাজার থেকে ট্র্যাফিক গার্ডগুলির কাছে নির্দেশ পৌঁছেছে, বেপরোয়া গতির বাইক ঠেকাতে দিনে ও রাতে বিশেষ অভিযান চালাতে হবে। আগামী দু’সপ্তাহ ওই বিশেষ অভিযান চালানোর জন্য ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা গার্ডগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন। বেপরোয়া গতিতে বা মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালালে বা হেলমেটহীন অবস্থায় বেরোলে বাইকচালক ও আরোহীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, শহরের বহু রাস্তায় আলো অপর্যাপ্ত। এর ফলে দৃশ্যমানতা বিভিন্ন জায়গায় কম রয়েছে। দুর্ঘটনার সেটিও একটি কারণ হতে পারে। তবে রাস্তার মাঝে থাকা গার্ডরেল ও পথ-বিভাজিকায় রিফ্লেক্টর টেপ লাগাতে গার্ডগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, রেলিং ও গার্ডরেলে লাগানো রিফ্লেক্টর টেপে আলো পড়লে চালক আগেই সতর্ক হতে পারবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Deaths Road Accident Kolkata Police Kolkata Traffic Police Kolkata Traffic

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy