প্রতীকী ছবি।
পরিকাঠামোর খামতি তো রয়েছেই। অভাব আধুনিক যন্ত্রপাতিরও। মূলত এই দুই কারণের জন্য এখনও ‘ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ়’ (এনএবিএল)-এর স্বীকৃতি পায়নি কলকাতা পুরসভার খাদ্য পরীক্ষাগার। সেই তকমা আদায় করতে যাতে পুর কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হন, তার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক একাধিক বার চিঠি দিয়েছে রাজ্যকে। যদিও কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভার ফুড ল্যাবরেটরি যাতে এনএবিএল-এর স্বীকৃতি পায়, তার জন্য কেন্দ্রে আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই ওই স্বীকৃতি মিলবে।’’ স্বীকৃতি না থাকার ফলে ওই পরীক্ষাগারে হওয়া যাবতীয় পরীক্ষা কার্যত লোক দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে পুরসভার অন্দরেই।
প্রথম থেকেই জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি নেই এই পরীক্ষাগারের। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পরীক্ষাগারের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মাপকাঠির উপরে এই স্বীকৃতি নির্ভর করে। পুরসভার এক ফুড ইনস্পেক্টরের কথায়, ‘‘দু’বছর ধরে ওই পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না। যাবতীয় খাবারের নমুনা পাঠানো হচ্ছে এন্টালির কনভেন্ট রোডে স্টেট ড্রাগ্স কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে (এসডিআরএল)। সেটি এনএবিএল-স্বীকৃত।’’
অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার পরীক্ষাগারে জৈবিক পরীক্ষার (মাইক্রোবায়োলজিক্যাল টেস্ট) পরিকাঠামো নেই। রয়েছে শুধুমাত্র রাসায়নিক পরীক্ষার (কেমিক্যাল টেস্ট) ব্যবস্থা। অর্থাৎ কোনও খাবারে কৃত্রিম রং মেশানো আছে কি না, সেটা বোঝা যায় যে পরীক্ষায়। এক ফুড ইনস্পেক্টরের অভিযোগ, ‘‘খাবারের গুণমান যাচাইয়ে পুর পরীক্ষাগারে ব্যবস্থাই নেই। পুরোটাই লোক দেখানোর পর্যায়ে পরিণত হয়েছে।’’ আরও অভিযোগ, অভাব রয়েছে উন্নত যন্ত্রপাতিরও। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এনএবিএল-এর স্বীকৃতি না থাকলে কোনও খাবারের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন সংশ্লিষ্ট বিক্রেতা। সে ক্ষেত্রে জাতীয় তকমা না থাকলে আদালত সেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টকে গুরুত্ব দিয়ে না-ও বিচার করতে পারে।’’
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এনএবিএল-এর স্বীকৃতি না থাকায় বছরখানেক আগে চিঠি দিয়ে রাজ্য ফুড কমিশনারকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অবিলম্বে এই তকমা পেতে পুরসভা যাতে আবেদন করে, মন্ত্রকের তরফে সে কথাও জানানো হয়েছিল। তার পরে তৎকালীন মেয়র ফিরহাদ হাকিম কেন্দ্রকে লেখা এক চিঠিতে আর্জি জানিয়েছিলেন, পুরসভার সেন্ট্রাল ফুড ল্যাবরেটরির কেন্দ্রীয় তকমা পাওয়ার আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তাদের যেন ছ’মাস সময় দেওয়া হয়। সেই ছ’মাস সময় কেটে যাওয়ার পরে ফের এক বছরের সময় চেয়ে নেন পুর কর্তৃপক্ষ। যদিও পুরসভার এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘বর্তমানে ল্যাবরেটরির যা পরিকাঠামো, তাতে কেন্দ্রীয় স্বীকৃতি মিলতে আবেদন করা হলেও তা আদৌ গ্রাহ্য হবে কি না, সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy