Advertisement
E-Paper

‘ফ্রি’ সিলিন্ডারও নিচ্ছেন না হাওড়ার দোকানিরা

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এককালীন সহায়তা হিসেবে ২৬১১ জন চিহ্নিত দোকানিকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল হাওড়া পুরসভা। কিন্তু প্রথম দফায় কেউ আগ্রহ না দেখানোয় গোটা পরিকল্পনাটাই কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৩০
হাওড়ায় জি টি রোডের পাশে হোটেলে উনুনে চলছে রান্না। নিজস্ব চিত্র

হাওড়ায় জি টি রোডের পাশে হোটেলে উনুনে চলছে রান্না। নিজস্ব চিত্র

রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার নিখরচায় পেয়েও তা নিতে আগ্রহী নন হাওড়া শহরের ছোট হোটেল, মিষ্টি বা চায়ের দোকানিরা। জ্বালানি হিসেবে কয়লা, ডিজেল ও কেরোসিনই ব্যবহার করতে আগ্রহী তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, এলপিজি অনেক খরচসাপেক্ষ। তাই প্রথম দফায় নিখরচায় পেলেও পরবর্তীকালে ওই খরচ বহন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এককালীন সহায়তা হিসেবে ২৬১১ জন চিহ্নিত দোকানিকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল হাওড়া পুরসভা। কিন্তু প্রথম দফায় কেউ আগ্রহ না দেখানোয় গোটা পরিকল্পনাটাই কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে। পুরসভা এখন নতুন করে বায়ুদূষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

হাওড়া পুর এলাকায় রাস্তার ধারে ছোট-বড় অসংখ্য খাবারের দোকান ও স্টলে জ্বালানি হিসেবে কয়লা, কেরোসিন ও ডিজেল ব্যবহার করা হয়। গত বছর পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের দায়ের করা একটি

মামলার প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দেয়, যাঁরা এখনও দূষণ সৃষ্টিকারী জ্বালানি ব্যবহার করছেন, তাঁদের অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গেই আদালত নির্দেশ দেয়, দোকানিদের পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে এলপিজি সংযোগ দিতে হবে।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকে পাওয়া ১৩ লক্ষ টাকায় গত ৪ ডিসেম্বর ২২৪ জন ছোট দোকানিকে নতুন এলপিজি সংযোগের নথিপত্র দেওয়া হয়। ঠিক হয়, এর পরে আরও ২৩৮৭টি ছোট দোকান চিহ্নিত করে তাদেরও সিলিন্ডার দেওয়া হবে। কিন্তু ওই অনুষ্ঠানের দু’মাস পরেও দেখা যায়, রাস্তার পাশের অধিকাংশ ছোট খাবারের দোকানে আগের মতোই কয়লা, কেরোসিন বা ডিজেলের ব্যবহার হচ্ছে। এলপিজি নেননি দোকানিরা।কিন্তু কেন?

প্রশ্ন করতেই থতমত খেয়ে বেনারস রোডের এক মিষ্টির দোকানের মালিক বললেন, ‘‘সিলিন্ডার পেয়েছিলাম ঠিকই। আসলে ডিজেলে রাঁধলে খরচ কম হয়। তাই সিলিন্ডার আর আনতে যাইনি।’’ একই বক্তব্য বেনারস রোডের একটি পাইস হোটেলের মালিক বুলু হালদারের। তিনি বলেন,

‘‘বোঝেনই তো, এক জনকে ২০ টাকায় এক প্লেট ভাত-তরকারি দিতে হয়। এলপিজি-তে রাঁধলে খাবারের দাম বাড়াতে হবে। তখন তো খদ্দেরই পাব না! তাই সিলিন্ডার নিইনি।’’

শরৎ চ্যাটার্জি রোডের একটি মিষ্টির দোকানের মালিকের ছেলে বুবুন ঘোষ অবশ্য সরাসরি সিলিন্ডার নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে অবশ্য বললেন, ‘‘আসলে কাগজপত্রে কিছু সমস্যা আছে। তাই নেওয়া হয়নি।’’ কিছুটা দূরেই ভুজিয়ার দোকান মোহন সাউয়ের। তিনি বলেন, ‘‘আমি আন্দুল রোডের গ্যাসের দোকানে গিয়ে কাগজ দিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে জানাল, সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তাই আর যাইনি।’’

যাঁরা সিলিন্ডার আনতে যাননি বা আগ্রহ দেখাননি, তাঁরা এখনও সেই কয়লা, কেরোসিন বা ডিজেলেই রান্না করে চলেছেন। এ ব্যাপারে হাওড়ার পুর কমিশনার বলেন, ‘‘পুরসভার কাজ পুরসভা করেছে। যাঁরা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন নন, তাঁদের ফের সচেতন করতে হবে।’’

Howrah LPG
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy