Advertisement
২১ মে ২০২৪

ঠান্ডা মাথায় খুন? না খুনোখুনি? নেপথ্যে কি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক?

দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত এলাকা পাম অ্যাভিনিউয়ে বেশ বড়সড় ফ্ল্যাট ভাড়া করেই থাকত ফনসেকা পরিবার। নিল ফনসেকার ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের যে ব্যবসা, তার অফিস শেক্সপিয়র সরণিতে। মেয়ে পড়াশোনা করেন বিদেশে। দুই যমজ ছেলে কলকাতার দুই নামী এবং দামী স্কুলের ছাত্র। সন্দেহ নেই, বেশ বিত্তশালী এই সিংহলি পরিবার।

নিল এবং জেসিকা। পারিবারিক অ্যালবাম থেকে।

নিল এবং জেসিকা। পারিবারিক অ্যালবাম থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৬ ১৪:২০
Share: Save:

দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত এলাকা পাম অ্যাভিনিউয়ে বেশ বড়সড় ফ্ল্যাট ভাড়া করেই থাকত ফনসেকা পরিবার। নিল ফনসেকার ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের যে ব্যবসা, তার অফিস শেক্সপিয়র সরণিতে। মেয়ে পড়াশোনা করেন বিদেশে। দুই যমজ ছেলে কলকাতার দুই নামী এবং দামী স্কুলের ছাত্র। সন্দেহ নেই, বেশ বিত্তশালী এই সিংহলি পরিবার।

গত বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, নিল এবং জেসিকার বিবাহবার্ষিকী ছিল। বাড়িতে এবং বাড়ির বাইরে মাঝেমধ্যেই পার্টি চলত এঁদের। শুক্রবার রাতেও পার্ক স্ট্রিটের এক অভিজাত ক্লাবে পার্টি করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে ফেরার পরেই শুরু হয় প্রবল ঝগড়া। তারপরই খুন বা খুনোখুনি।

হাসপাতালে নিল জানিয়েছেন, ঝগড়ার মধ্যেই নাকি দুই ছেলেকে খুন করে বসেন জেসিকা। এর পর তিনি খুন করেন জেসিকাকে। জেসিকার মারা ছুরিতেই তাঁর গলা কেটেছে বলেও দাবি করেছেন নিল।

শুক্রবার রাতে যে ওই ফ্ল্যাটে প্রচণ্ড ঝগড়াঝাটি চলছিল তা প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন। কিন্তু কী নিয়ে অশান্তি? প্রতিবেশীদেরই কেউ কেউ বলছেন, নিলের কোনও এক বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মাঝেমধ্যেই চেঁচামেচি, ঝগড়া কানে এসেছে তাঁদের। সেই দ্বিতীয় নারী কি নিলের শ্যালিকা শাবানা? সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।

বছর তিরিশের অবিবাহিত শাবানার নিজের পরিবার কলকাতাতেই থাকে। শনিবার সকালে এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানার পর, শাবানা তাঁর ভাই জাভেদকেই প্রথম ডেকে পাঠান। তিনি এসেই জামাইবাবু নিলকে স্থানীয় এক নার্সিং হোমে ভর্তি করেন। কড়েয়া রোডে নিজের পরিবারের সঙ্গে না থেকে শাবানা কেন দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে থাকতেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, শাবানাকে নিয়েই নিল আর জেসিকার মধ্যে বিবাদ চলছিল কি না।

জেসিকা আর তাঁদের যমজ ছেলের নৃশংস খুনের কথা প্রথম জানা যায় সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ। পুলিশ আসে সকাল ন’টা দশে। ইতিমধ্যেই নিলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখে, খাটের উপর পড়ে আছে তিন জনের লাশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ভারী কিছু দিয়ে আঘাত এবং ধারাল অস্ত্রের কোপেই মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। কিন্তু কে কাকে খুন করল? সেটাই এখন পুলিশের কাছে সব খেতে বড় প্রশ্ন। নিলের দাবি, জেসিকা খুন করেছে দুই ছেলেকে। বদলা নিতে তিনি মেরেছেন জেসিকাকে। আর তিনি নিজে জখম হয়েছেন জেসিকার আঘাতে। কিন্তু পুলিশ তদন্তে নেমে অনেক অসঙ্গতি খুঁজে পাচ্ছে এই বক্তব্যের মধ্যে।

সেক্ষেত্রে ঠান্ডা মাথায় স্ত্রী আর দুই ছেলেকে খুনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। তা হলে নিলকে আঘাত করল কে? বাঁচতে চেয়ে জেসিকা বা দুই ছেলের কেউ? না কি পুলিশকে ভুল পথে চালাতে নিল নিজেই নিজেকে আহত করেছেন! এও কি সম্ভব? অসম্ভব নয় একেবারেই, মনে করছেন পুলিশ কর্তারা।

আরও খবর:
পাম অ্যাভিনিউয়ে নৃশংস খুন, মা আর দুই ছেলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

palm avenue murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE