Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
NRS Hospital

রোগীর আত্মীয়দের হাতে আক্রান্ত, এনআরএস-এ তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ জুনিয়র ডাক্তারদের

সোমবার গভীর রাত থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের এই অবস্থান বিক্ষোভের জেরে হাসপাতালের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। আউটডোর বন্ধ। দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা এসে চিকিত্সা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার গেটের বাইরে অপেক্ষা করছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায়।

এনআরএসের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ জুনিয়র ডাক্তারদের। নিজস্ব চিত্র।

এনআরএসের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ জুনিয়র ডাক্তারদের। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৯ ১০:৪৩
Share: Save:

রোগীর পরিজনদের হাতে আক্রান্ত হয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসলেন এনআরএস হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবার সকালেই হাসপাতালের মূল গেটে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা। নিরাপত্তা যত ক্ষণ না সুনিশ্চিত করা হবে এই অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে তাঁদের দাবি।

Advertisement

সোমবার গভীর রাত থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের এই অবস্থান বিক্ষোভের জেরে হাসপাতালের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। আউটডোর বন্ধ। দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা এসে চিকিত্সা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার গেটের বাইরে অপেক্ষা করছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায়। ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে এ দিন সকালে ছুটে আসেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র। ডাক্তারদের অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানান। তাঁদের নিরাপত্তা কী ভাবে দেওয়া যায় তা নিয়েও কথা বলেন ডাক্তারদের সঙ্গে। তা সত্ত্বেও অবস্থানে অনড় তাঁরা।

ডাক্তারদের অভিযোগ, রোগীর মৃত্যু হলেই চিকিত্সকদের মারধর করা হয়। প্রতি বারই এমন ঘটনা ঘটছে। তাই আগে তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে, তার পর অবস্থান তুলবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ট্যাংরার বাসিন্দা বছর পঁচাত্তরের মহম্মদ শহিদ অসুস্থ হয়ে পড়ায় রবিবার রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার রাতে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এর পরই চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ডাক্তারদের উপর চড়াও হন। দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা, তার পর সেটা এক সময়ে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। লাঠিচার্জ করা হয় বলেও অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মারধরের ঘটনায় আহত দুই জুনিয়র ডাক্তার আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।

চিকিত্সকদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে আসেন স্বস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা। নিজস্ব চিত্র।

মৃতের ভাইপো আফরোজ আলমের অভিযোগ, কাকাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কাকা সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। চিকিত্সকরাও জানান, সব ঠিক আছে। কিন্তু সোমবার আচমকাই তাঁদের জানানো হয় রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আরও অভিযোগ, দেহ আটকে রেখে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে ডাক্তাররা সেই অভিযোগ নস্যাত্ করে তাঁদের উপর হামলা চালানোর পাল্টা অভিযোগ এনেছেন রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে। এক জুনিয়র ডাক্তার ইন্দ্রজিত্ মালিক জানান, ডাক্তারদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এর পরই তাঁর প্রশ্ন, এ ভাবে মারধর করলে কী ভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব! সেই সঙ্গে তিনি জানান, নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

এর আগেও ডাক্তাররা আক্রান্ত হয়েছেন, অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন, কিন্তু গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান বিক্ষোভের নজির এই প্রথম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.