Advertisement
E-Paper

মামার সঙ্গে ছক কষে নিজেকে ‘অপহরণ’ কিশোরের, দাবি ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ

১৩১ সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা ১৫ বছরের পীযূষ ভগতের পরিবার জোড়াসাঁকো থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে, গত রবিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:৩১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফিল্মি কায়দায় অপহরণকারীদের তাড়া করল পুলিশ। তার পর তাদের পাকড়াও করে অপহৃতকে উদ্ধার করা হল।

১৩১ সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা ১৫ বছরের পীযূষ ভগতের (নাম পরিবর্তিত) পরিবার জোড়াসাঁকো থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে, গত রবিবার। পুলিশকে জানানো হয়, পীযূষ নিখোঁজ। তার পর পীযূষের ফোন থেকেই কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ফোন করে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

জোড়াসাঁকো থানার পাশাপাশি তদন্তে নামে গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখাও। পুলিশের পরামর্শে অপহৃত কিশোরের বাবা-মা অপহরণকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ৩০ লক্ষ টাকা থেকে কমে মুক্তিপণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ লক্ষ টাকা। অপহরণকারীরা ওই মুক্তিপণ নিয়ে আসানসোলে যেতে বলে পীযূষের মা, বাবাকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, সেই মতো শনিবার রাত ৮টা নাগাদ অপহৃতের বাবা এবং কাকাকে নিয়ে আসানসোল রওনা হয় গুন্ডা দমন শাখার আধিকারিক সুব্রত পালের নেতৃত্বে একটি দল। প্রথমে অপহরণকারীরা আসানসোলে টাকা নেওয়ার কথা বললেও, সেখানে পৌঁছতেই পীযূষের বাবাকে অপহরণকারীরা জশিডিতে যেতে বলে। তাঁরা সেখানে গেলে ফের ফোন আসে অপহরণকারীদের। তারা জশিডি থেকে তাঁদের ঝাঁঝায় যেতে বলেন। রবিবার ভোরে ঝাঁঝায় পৌঁছন পীযূষের বাবা, কাকা। সঙ্গে ছিল সাদা পোশাকের পুলিশ। সেখানে রেললাইনের ধারে নির্জন একটি জায়গায় অপহরণকারীদের নির্দেশ মেনে টাকা রেখে চলে আসেন পীযূষের বাবা।

আরও পড়ুন- কাজ না করলে নকুলের জামা ছিঁড়ে নেবেন! ছেলের প্রচারে গিয়ে বললেন কমল নাথ​

আরও পড়ুন- অপহরণ-তদন্তে নম্বর প্লেট নিয়ে বিভ্রান্তি পুলিশের

পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরই অপহরণকারীরা ফোন করে বলে, পীযূষকে তারা কলকাতায় ফেরত পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু ছেলের খোঁজখবর জানতে চান পীযূষের বাবা। তিনি ঝাঁঝাতেই অপেক্ষা করতে থাকেন। সূত্রের খবর, তদন্তের সময় পুলিশ দেখে অপহরণকারীদের ফোন মূলত ঝাঁঝা থেকেই আসছিল। তাই তাঁদেরও সন্দেহ হয়, ঝাঁঝা থেকেই গোটা অপারেশন চালাচ্ছে অপহরণকারীরা। সেই অনুযায়ী ঝাঁঝাতে নজরদারি শুরু করে পুলিশ। আর তখনই একটি নির্জন রাস্তায় পীযূষের মামাকে দেখতে পান পীযূষের বাবা। পীযূষের মামার হাতে ছিল টাকার ব্যাগ, যে ব্যাগে করে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।

পীযূষের বাবা নিজের শ্যালককে চিনতে পারার পরই সঙ্গে থাকা পুলিশ তাঁকে তাড়া করতে শুরু করে। বেশ কিছু ক্ষণ চোর-পুলিশ খেলার পর, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে পাকড়াও করা হয় পীযূষের মামা মণীশ চৌরাশিয়াকে। বিহারের সিওয়ানের বাসিন্দা মণীশের সঙ্গে পাকড়াও করা হয় তাঁর এক বন্ধু সুমিত কুমার দুবেকে। দু’জনকে জেরা করে উদ্ধার করা হয় মুক্তিপণের পুরো টাকা। অপহরণকারীদের জেরা করে জানা যায়, পীযূষ পটনায় রয়েছে। রবিবার বিকেলে পটনা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে পীযূষকে।

অপহরণকারীদের প্রাথমিক ভাবে জেরা করে জানা গিয়েছে, অপহরণের পরিকল্পনায় সামিল ছিল অপহৃত পীযূষও। মামা এবং মামার বন্ধুকে নিয়ে সে অপহরণের নাটক তৈরি করে। পীযূষের বাবা কর্মসূত্রে থাকেন আফ্রিকার কঙ্গোতে। ছেলে এবং তার মামার ধারণা হয়েছিল, বিদেশ থেকে অনেক টাকা নিয়ে ফিরেছে বাবা। সেই কারণেই ওই টাকা হাতাতে অপহরণের ছক কষা হয়। তিন জনকেই কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

kidnapping crime asansol অপহরণ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy