কলকাতা শহরের ছোট জমিতে বাড়ি নির্মাণের পথে বড়সড় পদক্ষেপ করল পুরসভা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নবান্নে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ছোট জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পদক্ষেপ করল কলকাতা পুরসভা। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে জমির আয়তনের সীমাবদ্ধতার কারণে বাড়ি নির্মাণে জটিলতার মুখে আটকে পড়া রাস্তা খুলে গেল বলেই মত পুরসভা বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের। বুধবার কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ছোট জমিতে বাড়ি নির্মাণের জন্য বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের বিষয়টি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট আয়তনের প্লটেও বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে। আজ থেকেই আমরা সেই বিল্ডিং প্ল্যান স্যাংশন দেওয়া শুরু করেছি।”
এ পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং রুলস অনুযায়ী ন্যূনতম জমির আয়তনের শর্ত পূরণ না করলে বাড়ি নির্মাণের অনুমতি মিলত না। এর ফলে শহরের ভিড়ভাট্টা ও জমির উচ্চমূল্যের কারণে ছোট আকারের জমির মালিকেরা বাড়ি তৈরি করতে পারছিলেন না। বিশেষত পুরনো বস্তি পুনর্গঠন, পরিবারের মধ্যে জমি ভাগ হয়ে যাওয়া, অথবা পুরনো এলাকার সংকীর্ণ জমিতে নতুন নির্মাণের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। রাজ্য সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তে সেই বাধা দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফিরহাদের মতে, “এতে শুধু সাধারণ মানুষের বাড়ি তৈরির স্বপ্নই পূরণ হবে না, বরং পুরনো এলাকার সংস্কার ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।” তিনি আরও জানান, ছোট জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে পুরসভার বিল্ডিং সেফটি ও ফায়ার সেফটির নিয়ম মানা বাধ্যতামূলক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ শহরের আবাসন ক্ষেত্রে নতুন গতি আনবে। এতে একদিকে যেমন অল্প আয়তনের জমির ব্যবহার বাড়বে, তেমনই নতুন আবাসন প্রকল্প এবং ক্ষুদ্র নির্মাণ ব্যবসায়ীদের জন্যও সুযোগ তৈরি হবে। তবে একই সঙ্গে তাঁরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের নির্মাণে যথাযথ পরিকাঠামো, রাস্তা, নিকাশি ও জল সরবরাহ নিশ্চিত করাও জরুরি।