Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

তারাশঙ্করের টালা পার্কের বাড়ির বিবরণ দিতে গিয়ে স্মৃতিতে ফিরছিলেন পৌত্র অমলশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বাড়িতেই আড্ডা জমাতেন মানিক, বিভূতিভূষণ, গৌরকিশোর, নরেন মিত্র, গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, শৈলজানন্দ, সজনী দাস, বিমল করের মতো দিকপাল।

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

রক্ষা পেল তারাশঙ্করের বাড়ি

দোতলার বারান্দায় পড়তে বসেছি, বসন্তের বাতাস বইয়ের পাতাগুলো ফড়ফড় করে উলটে উলটে যাচ্ছে; বাঁ দিকের অশ্বত্থ গাছের পাতায় অশান্ত আওয়াজ। সামনের রাস্তার ওপারে পুকুরের জলে চাঁদের আলো পড়ে চিকচিক করছে।’ তারাশঙ্করের টালা পার্কের বাড়ির বিবরণ দিতে গিয়ে স্মৃতিতে ফিরছিলেন পৌত্র অমলশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বাড়িতেই আড্ডা জমাতেন মানিক, বিভূতিভূষণ, গৌরকিশোর, নরেন মিত্র, গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, শৈলজানন্দ, সজনী দাস, বিমল করের মতো দিকপাল। আসতেন দলমতনির্বিশেষে রাজনীতির রথীমহারথীরাও। ১৯৪৭ সালের ২০ ডিসেম্বর সিআইটির কাছ থেকে ৬ কাঠা সাড়ে ১১ ছটাক জমি কেনা হয়। ১৯৪৮ সালের রথের দিন হয় গৃহপ্রবেশ। দ্বিতল বাড়িটিতে মোট বারোটা ঘর। এই বাড়ি বানাতে গিয়েই তারাশঙ্কর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বরানগরের বাড়ি বিক্রির টাকা ও তার সঙ্গে আরও কিছু ধারদেনা করে এই জমিটি কিনেছিলেন। বাড়ি তৈরির সময় এলআইসি-র কাছে ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ঋণ ১৯৬৭ সালে জ্ঞানপীঠের টাকা পাওয়ার আগে শোধ হয়নি। তারাশঙ্করের ঐতিহাসিক বাড়িটি সম্প্রতি অধিগ্রহণ করল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ। এ বাড়িতেই ১৪ মার্চ সকাল ১১টায় সাহিত্য পরিষদের অছিপরিষদ এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সঙ্গের ছবিতে বাড়ির এক তলায় তারাশঙ্করের কাজের ঘর। বর্তমানে এই ঘরের বিভিন্ন সংগ্রহ সাহিত্য পরিষৎ, ভারতীয় সংগ্রহালয় ও পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে ছড়িয়ে গিয়েছে। ঘরটি কি এ বার পুরনো চেহারায় ফিরবে?

রাজনীতির এক জীবন

আদ্যন্ত বামপন্থী, আরও একটু নির্দিষ্ট করে বললে, যুক্তিবাদী, ভিন্ন মত, এমনকী বিরুদ্ধ মত শোনার মতো সহিষ্ণু বামপন্থী সন্তোষ রাণা। ষাটের দশকে রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে গবেষণারত সন্তোষ বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ শুনেছিলেন। একদা প্রেসিডেন্সি কলেজের উজ্জ্বল সেই ছাত্র তাঁর গবেষণা অসমাপ্ত রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েন অতি বামপন্থী আন্দোলনে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোপীবল্লভপুরের ধরমপুর তাঁর জন্মস্থান। ১৯৪৩-এ, সুবর্ণরেখায় ভয়াবহ বন্যার বছরে জন্ম সন্তোষের। অবশ্য তাঁর গোটা রাজনৈতিক জীবনটাই তো যেন বন্যার আবেগে মোড়া। এই জীবন নিয়েই সন্তোষ রাণা রচনা করেছেন রাজনীতির এক জীবন (আনন্দ)। সমাজের প্রান্তদেশ থেকে উঠে আসা এক রাজনৈতিক নেতার এই জীবনকাহিনি আড়ালে থাকা দীর্ঘ সময়কালের মাটি-মানুষের ইতিহাসও বটে।

নারী চিত্রমালা

‘মানুষের মরালিটি থাকা দরকার। আর শিল্পী যদি মানুষ হন, তবে তার মধ্যেও সেই আদর্শ নিশ্চয় থাকে।’ এই মন্তব্যের সূত্রে কে জি সুব্রহ্মণ্যন (১৯২৪-২০১৬) নাগার্জুনের গল্প উল্লেখ করে নৈতিকতার প্রসঙ্গটি স্পষ্ট করেছিলেন (সাক্ষাৎকার/ কে. জি. সুব্রহ্মণ্যন। দেবভাষা)। হিমালয় সফরের সময় নিদারুণ ঠান্ডায় শীতার্ত নাগার্জুনকে শরীর দিয়ে উষ্ণ করেছিল এক রমণী। ‘সেই নারী এক্ষেত্রে একটি চাদরের ভূমিকায় প্রাণ রক্ষা করছে নাগার্জুনের।’ মনে করেন কে জি। মেয়েদের নিয়েই তাঁর একক প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে বিড়লা অ্যাকাডেমিতে: ‘ড্রইংস অব উইমেন’। ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায়, চলবে ১৪ এপ্রিল অবধি, প্রতি দিন ৩-৮টা। ১৬ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে তাঁর উপর তৈরি কেরলের বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার শাজি এন করুন-এর ছবিটিও দেখানো হবে। বিড়লা অ্যাকাডেমির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিগাল ফাউন্ডেশন ফর দি আর্টস। সঙ্গে তারই একটি ছবি।

উজানিয়ার আড্ডা

এক সময় কলকাতায় নিয়মিত সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক আড্ডার আসর বসত। আর এই গঠনমূলক আড্ডার মধ্য দিয়েই তৈরি হত মানবিক ও উন্নততর জীবনবোধ। এখন আর এই রকম আড্ডা বসে বলে খুব একটা শোনা যায় না। সে দিক থেকে ‘উজানিয়া’ লোকগানের ব্যান্ডটির ভাবনা অভিনব। মূলত তারা লোকায়ত ভাবনা থেকেই শহরে নিয়মিত আড্ডা গানের আসর বসাচ্ছে। এই আড্ডায় থাকছেন কবি-সাহিত্যিক-ক্রীড়াবিদ-আবৃত্তিকার ও শিল্পীবন্ধুরা। তাঁরা চাইছেন, এই আসর থেকেই উঠে আসুক লোকগানের নতুন প্রজন্ম। এবং তাঁদের নতুন গানের পরিবেশন। ১৭ মার্চ নটী বিনোদিনী অ্যাম্ফিথিয়েটারে (স্টার থিয়েটার) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ে উজানিয়ার আড্ডা গানের আসর। থাকবে নতুন গান এবং তা প্রকাশের সুযোগও।

বিতর্কিত

‘আমার ছবি যাতে কেউ দেখতে না পায়, সেজন্যে ভারত সরকার তাঁদের আইনবিদের জন্যে যা খরচ করেছেন তা আমার ছবি তৈরির খরচের চেয়ে বেশি।’— বলছিলেন সনলকুমার শশিধরন। চিত্রবাণী-র প্রেক্ষাগৃহে সম্প্রতি ‘সেন্সরশিপ ইন ইন্ডিয়া’ বিষয়ক সেমিনার রীতিমত চিন্তার খোরাক হয়ে উঠেছিল শহরের শ্রোতাদের কাছে, তাঁর আর সোমেশ্বর ভৌমিকের পারস্পরিক কথোপকথনে। কেরলের এই চলচ্চিত্রকারের ‘এস দুর্গা’ ছবিটি সদ্য সরকারের প্রদর্শন-ছাড়পত্র পেলেও কম জল ঘোলা হয়নি এ নিয়ে। ছবিটির আদত যে নামটির ব্যবহার এ দেশে নিষিদ্ধ, সেই ‘সেক্সি দুর্গা’ নামেই চল্লিশটির বেশি আন্তর্জাতিক ফিল্মোৎসবে দেখানো হয়েছে ছবিটি, সেরা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে রটারডাম ফেস্টিভ্যালে। ‘‘যে কাঠামো বা পদ্ধতিতে ভর করে ভারত সরকার ছবি কাটাছেঁড়া করে, তা ‘ইল্‌লিগাল অ্যাফেয়ার’ তো বটেই, এমনকী সার্টিফিকেশন-এর নামাঙ্কিত বোর্ড তাদের অথচ সেন্সরশিপ চালায়।’’ গলদগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছিলেন সোমেশ্বর। ঋতা দত্ত সম্পাদিত ‘ফিল্মবাফ’ পত্রিকার উদ্যোগ ছিল এটি।

সমকালীন

নাটকের মঞ্চ থেকে সত্য প্রায়ই এসে দাঁড়ায় রোজকার জীবনে। সন্ত্রস্ত জীবন আমাদের, কাগজ খুললেই শিক্ষাঙ্গনের কাছে বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে পড়ুয়াদের, বা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতার রাজনীতির কাছে শিক্ষকদের নিগৃহীত হওয়ার খবর। ১৯৫০-এ হাওয়ার্ড ফাস্ট লিখেছিলেন উপন্যাস সাইলাস টিম্বারম্যান, সেখানে মার্ক টোয়েন পড়াতে গিয়ে রোষের শিকার হন শিক্ষক। ‘বেলঘরিয়া অভিমুখ’-এর নাটক ‘কোজাগরী’-তে সাইলাস টিম্বারম্যান রূপান্তরিত শৈলেশ কাষ্ঠ-তে, কলেজের কাছে শালবন কাটতে বাধা দেওয়ায় আর ক্লাসে রবীন্দ্রনাথ পড়াতে গিয়ে যে শিক্ষকের ভীত নিশ্চিন্ত জীবন মুখোমুখি হয় এক অন্তর্বিপ্লবের। কৌশিক চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত এই নাটক সমসময়ের অভিজ্ঞান। ২০১৬-তে যাত্রা শুরু হয়েছিল, আর বিপুল দর্শকপ্রিয়তার জোরে ১৪ মার্চ বুধ-সন্ধ্যায় মধুসূদন মঞ্চে পঞ্চাশতম অভিনয় ‘কোজাগরী’র।

রোমাঞ্চকর

এভারেস্ট যেন তাঁর পদতলে। এক-দু’বার নয়, ২১ বার এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেছেন নেপালের আপা শেরপা। কিন্তু তাঁর পাহাড়ে চড়ার শুরুটা কেমন ভাবে হয়েছিল? না, নিজের ইচ্ছায় নয়, দারিদ্রের চাপে বাধ্য হয়ে মাত্র ১২ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে এই পেশায় আসতে হয়েছিল আপাকে। শুরু করেছিলেন মোটবাহক হিসাবে। তার পরে বাকিটা ইতিহাস। পর্বতারোহণের এই কিংবদন্তি কিন্তু চান না কেউ যেন তাঁর মতো পরিস্থিতির চাপে এই পেশাকে বেছে নেয়। শেরপাদের সেই নীরব অশ্রুজলের কথাই বলেছে ‘লাভড বাই অল: দ্য স্টোরি অব আপা শেরপা’ ছবিটি। দেখতে হলে মহাজাতি সদনে আসতে হবে ১৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। সেখানে এমনই বেশ কয়েকটি ছবি নিয়ে হাজির ‘বাঁফ মাউন্টেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ওয়ার্ল্ড ট্যুর-২০১৮’। হিমালয়ান ক্লাবের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই ফেস্টিভ্যালে শুধু আপা নয়, এমন হরেক কিসিমের ১৩টি ছবি রয়েছে।

বিদ্যাসুন্দরের গান

বিদ্যাসুন্দর প্রবাদ: ‘কালা পেড়ে ধুতি আর বিদ্যাসুন্দর পুঁথি কখনো পুরনো হয় না’। জন্মের তিনশো বছর পেরিয়ে গিয়েছেন সে পুঁথির রূপকার ভারতচন্দ্র রায় (১৭১২-৬০)। অন্নদামঙ্গল কাব্যের উপাখ্যানে বিদ্যাসুন্দরের প্রাচীনতম পুঁথি পাড়ি দেয় প্যারিসে, ১৭৮৪। প্রেক্ষিত বদলালেও বাঙালির সংস্কৃতিতে আজও অমলিন বিদ্যাসুন্দর... ধর্মচেতনা-বাবু সংস্কৃতি-জনপ্রিয় সাহিত্য— সবেরই অনুষঙ্গ এ-কাব্য। ১৭৯৫-এ লেবেদফের প্রথম বাংলা থিয়েটার থেকে বঙ্কিমের নভেল বা মধুসূদন-দ্বিজেন্দ্রলালের প্রহসনে বিদ্যাসুন্দরের পরম্পরা। সবাক সিনেমার প্রথম ধাপে কৃষ্ণচন্দ্রের সুরে মেতেছে হেমেন্দ্রকুমারের বিদ্যাসুন্দর। আকস্মিক প্রয়াণে প্রণব রায়ের চিত্রনাট্য পরদা-প্রকাশ না পেলেও রূপ পেয়েছিল গান। ভারতচন্দ্র থেকে প্রণব রায়, তিন শতকের এমত পরিক্রমা ঘিরেই দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্মাণ ‘বিদ্যাসুন্দরের গান’। গানে দেবজিত্ ও ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। আইসিসিআর-এর নিবেদনে সেখানে আসর বসবে ১৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।

নাট্যকর্মী

পরাধীন বাংলায় ভারতীয় গণনাট্য সংঘ যে নাটকের আন্দোলন শুরু করেছিল তা-ই আবার স্বাধীনতার অব্যবহিতে পশ্চিমবঙ্গে নতুন রূপে নতুন মাত্রায় আলোড়ন তোলে, সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত গ্রুপ থিয়েটার-এর যে চর্চা বাঙালির সংস্কৃতিকে ধারাবাহিক ভাবে ঋদ্ধ করে চলেছে, তারই এক সক্রিয় অথচ নেপথ্যকর্মী ছিলেন নৃপেন্দ্র সাহা। জীবনের শুরুতে মেতে ছিলেন ফুলের চাষ, নতুন চারা নিয়ে,
এ জন্যে সোভিয়েট রাশিয়া থেকে সম্মানিতও হন। বহুবিধ নাট্যপত্রিকার সম্পাদক ছিলেন— ‘গন্ধর্ব’, ‘গ্রুপ থিয়েটার’, ‘পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পত্রিকা’। তাঁর সম্পাদনায় এ-সমস্ত পত্রের বিজন ভট্টাচার্য, সফদর হাসমি, বা অভিনেত্রীদের নিয়ে বিশেষ সংখ্যাগুলি সাড়া তুলেছিল। রাজনৈতিক থিয়েটারে সম্পৃক্ত উৎপল দত্তকে নিয়ে রচিত গ্রন্থের পাশাপাশি সম্পাদিত গ্রন্থ বাংলাদেশের থিয়েটার। দুই বাংলার নাটকেও সেতুবন্ধ ছিলেন তিনি। তাঁর উদ্যোগেই জেলায় জেলায় নাট্যোৎসবের শুরু, অনামী প্রতিভার আত্মপ্রকাশ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়মিত সেমিনার থেকে লেখালিখিতে নিবিষ্ট এই মানুষটি হঠাৎই চলে গেলেন নিঃশব্দে। জন্মেছিলেন কলকাতায়, ১৯৩৭।

মনোমোহন-স্মরণ

রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবং আনন্দমোহন বসু, মনোমোহন ঘোষ, শিবনাথ শাস্ত্রী, রাজনারায়ণ বসু, নীলকমল মিত্র প্রমুখের সহায়তায় ১৮৭৬ সালের ২৬ জুলাই অ্যালবার্ট হলে এক সভায় ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন মনোমোহন ঘোষ (১৮৪৪-৯৬)। সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে আই সি এস পরীক্ষার জন্য তিনি বিলেত যান। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন, কিন্তু ব্যারিস্টারি পাশ করে দেশে ফেরেন। আইন ব্যবসায় বিপুল সাফল্যের পাশাপাশি তিনি স্ত্রীশিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী ছিলেন। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠায় তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৩ মার্চ তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনে বিকেল সাড়ে ৫টায় আয়োজিত হয়েছে আলোচনা সভা।
‘বর্তমান ভারতীয় গণতন্ত্রে বিচারবিভাগের ভূমিকা’ বিষয়ে বলবেন বিশিষ্ট আইনজীবী অনিন্দ্যকুমার মিত্র, প্রধান অতিথি প্রাক্তন বিচারপতি শৈলেন্দ্রনাথ তালুকদার।

উত্তরণ

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, নারীর মুক্তি না ঘটলে দেশ তথা জাতির সার্বিক উন্নতি ঘটবে না। কত্থক শিল্পী সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর একক অনুষ্ঠান বঙ্কিমকৃত উপন্যাস ‘দেবী চৌধুরাণী’ অবলম্বনে ‘দেবী’তে নারীমুক্তির সেই গতিপথটাকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। নাট্যায়নে স্থান দেওয়া হয়েছে সমকালীন সমাজ প্রবাহকে। কিন্তু প্রতিপাদ্য হিসাবে চিত্রিত হয়েছে এক সাধারণ মেয়ের প্রতি মুহূর্তের অসম লড়াইয়ের কাহিনি। প্রফুল্ল থেকে দেবী চৌধুরানির উত্তরণ আসলে নারী শক্তির বিকাশের এক অভাবনীয় যাত্রা। অবিশ্বাস থেকে আত্মবিশ্বাসের এক চূড়ান্ত উদ্ঘাটন। মনে শরীরে, প্রতি মুহূর্তে পিছিয়ে পড়া, পিছিয়ে থাকা মানসিকতার প্রাচীন বন্ধন মুক্ত করে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার বাস্তব লড়াইয়ে গাঁথা এ অনুষ্ঠান। ‘স্তুতি’র আয়োজনে এটি দেখা যাবে ১৫ মার্চ, জ্ঞান মঞ্চে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সুস্মিতার চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম মেটিয়াবুরুজে। ছেলেবেলা থেকে তাঁর নাচের প্রতি এতটাই আগ্রহ যে, তিন বছর বয়সে তাঁকে নাচের স্কুলে ভর্তি করে দেন মা। এর পর তিনি আট বছর তালিম নেন গুরু বন্দনা সেনের কাছে। এখান থেকে ‘পদাতিক ডান্স সেন্টার’-এ যুক্ত হন। আঠারো বছর ধরে বিরজু মহারাজের তালিমে তিনি দেশে-বিদেশে অনেক নৃত্যানুষ্ঠান করেছেন। তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠান ‘স্তুতি’ প্রযোজিত ‘দর্পণ’, ‘চতুষ্পর্ণী’, ‘অনুভূতি’, ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ প্রভৃতি নৃত্যনাট্য প্রশংসা পেয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE