রাস্তার মাঝ বরাবর বড়সড় একটি গর্ত। কয়েক দিনের বৃষ্টির পরে সেটির আশপাশে আরও কয়েকটি ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কয়েক মিটার দূরে তাপ্পি দেওয়া অংশেও একই অবস্থা! পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে পরিস্থিতি এমন যে, গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কঠিন! গর্ত কাটিয়ে কোনও মতে ধীর গতিতে ছোট-বড় গাড়ি এগোলেও যানজট নিত্যসঙ্গী। এমনকি, এর জেরে মাঝেমধ্যেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ।
সম্প্রতি শহরের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে কলকাতা পুরসভা-সহ রক্ষণাবেক্ষণকারী একাধিক দফতরকে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। ট্র্যাফিক গার্ড ধরে ধরে রাস্তার এই বেহাল অবস্থার উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। লালবাজার সূত্রের খবর, বর্ষা শুরুর আগে প্রতিটি গার্ডকে নিজেদের এলাকার বেহাল রাস্তা ও অংশ উল্লেখ করে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বর্ষার সময়ে খোলা তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে এই বিষয়টিও গার্ডগুলিকে ‘সিচুয়েশন রিপোর্ট’-এ উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল। সেই মতো তালিকা তৈরি করে লালবাজারে পাঠায় গার্ডগুলি।
রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাগুলিকে লালবাজারের পাঠানো তালিকায় বেহাল রাস্তা, বিপজ্জনক ও খোলা ম্যানহোলের পাশাপাশি বাতিস্তম্ভের খোলা তার, গাছের বিপজ্জনক ডালেরও উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ড এলাকার প্রায় ৪০টি জায়গার নাম রয়েছে রিপোর্টে। এ ছাড়া, হেড কোয়ার্টার্স ও ভবানীপুর ট্র্যাফিক গার্ড এলাকার ৩৭টি, জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ড এলাকার ৩১টি, ডায়মন্ড হারবার ট্র্যাফিক গার্ড এলাকার ৩৪টি অংশের উল্লেখ রয়েছে, যেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে শহরে। উত্তরের স্ট্র্যান্ড রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, রামগোপাল রোড, কাশীপুর রোডের পাশাপাশি দক্ষিণের বীরেন রায় রোড, গার্ডেনরিচ রোড, কাঞ্চনতলা রোড, এ জে সি বসু রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় কোথাও বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে, কোথাও জোড়াতাপ্পির মেরামতিতে রাস্তা উঁচুনিচু হয়ে রয়েছে। ভুগতে হচ্ছে বাইকচালক, গাড়িচালক ও গণপরিবহণ ব্যবহার করা নিত্যযাত্রীদের।
কলকাতা পুরসভার তরফে কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকেরা। সমস্যা অনুযায়ী আলাদা আলাদা ভাবে পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি কাজ করছে বলে পুরসভার দাবি। এক মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘রিপোর্ট পাওয়া মাত্র কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকটি রাস্তা মেরামতির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ। বর্ষা এসে যাওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করা হবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)