প্রতীকী ছবি।
পৈতৃক সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযাগ উঠল পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর থানার উত্তর গোবিন্দপুর এলাকায়।
পুলিশ জানায়, সেখানকার এক মহিলার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। স্বামীর মৃত্যুর পরে বড় ছেলের বিয়ে দেন তিনি। অভিযোগ, বড় ছেলে ও তাঁর স্ত্রী পৈতৃক সম্পত্তি মায়ের কাছ থেকে জোর করে লিখিয়ে নেওয়ার জন্য মহিলার উপরে চাপ দেওয়া শুরু করেন। অভিযোগ, মহিলার উপরে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু হয়। এমনকি মহিলার খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মহিলা জানান, তিনি এলাকায় পরিচারিকার কাজ শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, ছেলে, পুত্রবধূ এবং ছেলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন, সকলেই তাঁর উপরে সম্পত্তি লিখিয়ে নিতে নির্যাতন, মারধর করত। ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেওয়া হয়েছিল। সারা দিন কাজ করে শুধু রাতে বাড়িতে থাকতে আসতেন।
পুলিশ জানায়, রবিবার বিকেলে মহিলা বাড়ি ফেরেন। তার পরেই ছেলে ও পুত্রবধূ-সহ ছেলের শ্বশুরবাড়ির পরিজনেরা তাঁকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করা শুরু করে। তার পরে রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। রাতেই প্রতিবেশীরা বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মহিলার প্রতিবেশীদের অভিযোগ, এ দিনও পুত্রবধূর পরিজনেরা বিকেলে আসে। মহিলা বাড়ি ফিরতেই তাঁকে মারধর করা হয়। মহিলার কথায়, ‘‘আমাকে ডাইনি বলা হয়। বাড়িতে আমার কুনজর পড়ছে বলেও আমাকে গালিগালাজ করা হয়। আমি কোনও মতেই ওই বাড়ি, জমি ওদের নামে লিখে দিতে চাইনি। তাই আমার এই অবস্থা।’’ তাঁর প্রতিবেশীদের অভিযোগ, মহিলার ছেলে পেশায় রাজমিস্ত্রি। সে ওই জমি-বাড়ি দখল করে প্রোমোটারের হাতে তুলে দিতে চায়। সেই কারণেই মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছে।
রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে বড় ছেলে, তার স্ত্রী-সহ পাঁচ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মহিলাকে তাঁর নিজের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করে পুলিশ। তবে মহিলা সেখানে থাকতে রাজি হননি। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে মায়ের উপরে অত্যাচারের বিষয়টি অস্বীকার করছে মহিলার বড় ছেলে। তার পাল্টা দাবি, ‘‘মা নিজেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা কোনও অত্যাচার করিনি।’’ বিষ্ণুপুর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলে ও পুত্রবধূকে সর্তক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ফের অভিযোগ পাওয়া গেলে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy