প্রতীকী ছবি।
‘বন্ধু’ সেজে বিপদ যে এমন রাজপথে দাঁড়িয়ে থাকবে, ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি ডাক্তারবাবু। যত ক্ষণে বুঝলেন, তত ক্ষণে তাঁর ব্যাগ নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতী। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে বিডন স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণির মোড়ে। রাতেই জোড়াবাগান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সম্রাট বসু নামে ওই অস্থি চিকিৎসক। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
সম্রাটবাবু জানান, সোমবার সন্ধ্যা সওয়া সাতটা নাগাদ তিনি গাড়ি করে চেম্বারে যাচ্ছিলেন। বসে ছিলেন পিছনের সিটে। তাঁর পাশে ব্যাগটি রাখা ছিল। বিডন স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণির
মোড়ে সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়াতেই এক ব্যক্তি সম্রাটবাবুর চালককে জানায়, ইঞ্জিন থেকে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তার পরেই ওই ব্যক্তি চলে যায়। সম্রাটবাবুর চালক ফের স্টার্ট দিতেই গাড়ি ভরে যায় কালো ধোঁয়ায়। সেই ধোঁয়ায় দু’জনেই কাশতে শুরু করেন। কোনও মতে গাড়ি একটু এগিয়ে বাঁ দিক করে দাঁড় করান চালক। সব জানলার কাচ খুলে দেওয়া হয়। তার পরে সম্রাটবাবু ও চালক, দু’জনেই গাড়ি থেকে নেমে বনেট খুলে ইঞ্জিন পরীক্ষা করেন। কিন্তু তাতে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেননি তাঁরা।
সম্রাটবাবু বলেন, ‘‘বনেট খোলা থাকায় আমাদের সামনে আড়াল হয়ে গিয়েছিল। ইঞ্জিন স্বাভাবিক থাকায় চালক ফের গাড়ি চালু করেন। তখন কোনও সমস্যা হয়নি। আমি সিটে বসার পরেই দেখি, ব্যাগ উধাও। ব্যাগে টাকা ছাড়াও ডেবিট কার্ড, চেকবই, স্টেথোস্কোপ, রক্তচাপ মাপার যন্ত্র ছিল।’’ সন্ধ্যায় রাজপথে এমন যে ঘটতে পারে, তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বলে ওই চিকিৎসকের আক্ষেপ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ধরনের কেপমারি শহরে প্রথম নয়। তবে এর আগে সব ক’টি ঘটনা দক্ষিণ কলকাতায় ঘটেছিল। উত্তর কলকাতায় এই প্রথম। মে মাসের শেষ এবং জুনের গোড়ায় রবীন্দ্র সরোবর, বালিগঞ্জ, শেক্সপিয়র সরণি এলাকায় কয়েকটি ঘটনার পরে এ নিয়ে সব থানাকে সতর্ক করেছিল লালবাজার। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দক্ষিণ ভারতের একটি দল এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তবে তারা হিন্দিতে কথা বলছে। আগের কয়েকটি ঘটনায় কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে এর আগে কোনও ঘটনায় এমন কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে দেওয়ার কথা জানা যায়নি।
সম্রাটবাবু বলছেন, ‘‘ডাক্তার হিসেবে আমার ধারণা, নাইট্রাস অক্সাইড জাতীয় গ্যাস ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু কী ভাবে ওই গ্যাস ছড়াল, বুঝতে পারছি না। ওই গ্যাস কোনও বৃদ্ধ, শিশু, হাঁপানির রোগী অথবা হৃদ্রোগীর পক্ষে মারাত্মক হতে পারে।’’
পুলিশের একাংশের সন্দেহ, বড় কোনও দল শহরে ঢুকেছে। কয়েক জন হাজতে ঢুকলেও বাকিরা সক্রিয় রয়েছে। এর আগে দক্ষিণ কলকাতায় অপরাধ করার পরে পুলিশি সক্রিয়তা বেড়েছে, এই আঁচ করে উত্তর কলকাতায় ওই চক্র এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এর আগে দেখা গিয়েছিল, সিসি ক্যামেরা নেই তেমন জায়গা বেছেই এই ধরনের কেপমারি করছে ওই দুষ্কৃতীরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিডন স্ট্রিটের মোড়ে একটি বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ছিল। তার ফুটেজও সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনার পরে ফের লালবাজারের ওয়াচ শাখাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy