আরও পড়ুন: ‘মসজিদের বদলে জমি নেব না’, সুপ্রিম কোর্টে পুনর্বিবেচনা চাইছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড
আরও পড়ুন:সেনা-সম্পর্ক মেরামতে তত্পর হচ্ছে বিজেপি? বাল ঠাকরের মৃত্যুবার্ষিকীতে তেমনই ইঙ্গিত
প্রায় শ’খানেক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ঘটনার যতটুকু পুনর্নির্মাণ করতে পেরেছে, তাতে জানা যাচ্ছে— ওই রাতে, সাড়ে দশটা নাগাদ, ইএম বাইপাশের কাছে পঞ্চসায়রের হোম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায় মহিলাকে। তার পর হেঁটে ২০৬ বাস স্ট্যান্ডের দিকে তাঁকে যেতে দেখা যায়। আবার সেখান থেকে ঘুরে পাশেই কমিন্ট পার্ক রোডে দেখা যায় তাঁকে। সেখানেই তিনি একটি গাড়িতে দাঁড় করান। সেই গাড়িটি তাঁকে ২০০ মিটার সামনে পিয়ারলেস হাসপাতালের সামনে নামিয়ে দেয়। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা ওই গাড়ির চালককে বেহালা যাবেন বলেছিলেন, কিন্তু চালক তাঁকে মানসিক ভাবে সুস্থ নন বুঝতে পেরে নামিয়ে দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরই নির্যাতিতা ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের দিকে এগিয়ে যান। সেখানেই থামান দ্বিতীয় গাড়িটিকে। ওই সাদা রঙের ট্যাক্সিটিই উত্তম রামের, দাবি পুলিশের। তদন্তকারীদের ইঙ্গিত, সেখান থেকে কাঠিপোতায় যেখানে তাঁকে পাওয়া গিয়েছে, সেই গোটা যাত্রাপথে অন্য কোনও ব্যক্তির উপস্থিতির হদিশ এখনও মেলেনি। তবে একই সঙ্গে পুলিশের মনে হচ্ছে, ধৃতের বয়ানেও বেশ কিছু ফাঁক রয়েছে। সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করার জন্যই রবিবার তাকে আদালতে পেশ করে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে চায়।
কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের আরও রহস্যে ফেলেছে, ওই রাতে নির্যাতিতার করা নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ। এই অভিযোগ জানানোর কথা কলকাতা পুলিশ প্রথমে জানতেই পারেনি। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই রাতে যাঁরা তাঁকে উদ্ধার করেন, তাঁরাই সন্দেহ করেছিলেন ওই মহিলার সঙ্গে যৌন নির্যাতনের মতো কোনও ঘটনা ঘটেছে। সেই সন্দেহে তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ওই মহিলাকে নরেন্দ্রপুর থানায় নিয়ে গেলে সেখানে তিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন বলে বারুইপুর পুলিশ জেলার আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই রাতে পুলিশ তাঁকে সোনারপুরের একটি হোমে রাখার ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু সেখান থেকেও ভোর ৪টে নাগাদ তিনি লুকিয়ে বেরিয়ে আসেন বলে জানা গিয়েছে। পালিয়ে তিনি সোনারপুর স্টেশন যান, তারপর যান গড়িয়াহাটে মাসির বাড়ি। সে দিনই পঞ্চসায়র থানায় গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
এ দিন সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, যেহেতু নির্যাতিতা মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন, তাই গোটা ঘটনাক্রম এবং কোথায় ঠিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তা জানার জন্য অভিযুক্তকে জেরা করতে হবে। তা ছাড়া যেহেতু মহিলার বয়ানে বার বার দু’জন অভিযুক্তের কথা উঠে এসেছে তাই দ্বিতীয় অপরাধীর হদিশ পেতে উত্তম রামকে জেরা করা প্রয়োজন। সেই সময়ই সরকারি আইনজীবী বলেন,‘‘নির্যাতিতার মেডিক্য়াল রিপোর্টে যৌন নিগ্রহের প্রমান পাওয়া গিয়েছে।”
সামনের সপ্তাহে আদালতে নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হবে। তাই পুলিশ তার আগেই গোটা তদন্ত শেষ করতে চাইছে। তাঁদের ধারণা, সোমবারের মধ্যেই গোটা রহস্য পরিষ্কার হয়ে যাবে।