বছর প্রায় শেষ হতে চললেও ডেঙ্গির প্রকোপ কমার লক্ষণ নেই। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের হার কয়েক গুণ বেড়েছে। গত ২ নভেম্বর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১০৬। ৯ নভেম্বর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪৫। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে সংক্রমিত হয়েছেন ১৩৯ জন! যা পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। গত বছর ৯ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৩৬। সেই হিসাবে এ বছর ৩০৯ জন বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি মারা গিয়েছেন নিউ টাউনের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া। অক্টোবরের শেষে উত্তর কলকাতার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা একটি শিশু ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছিল। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনই দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মাঝ নভেম্বর পর্যন্ত যত জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, তার তুলনায় এ বছর ৩৫০ জনেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
পুরসভা যে সব ওয়ার্ড ডেঙ্গিপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেগুলি হল: ছ’নম্বর বরোর ৫২, ৫৫ ও ৬২ নম্বর ওয়ার্ড, সাত নম্বর বরোর ৫৭, ৬৫, ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং ন’নম্বর বরোর ৭৪, ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯ ও ৮২ নম্বর ওয়ার্ড। ন’নম্বর বরোর ভবানীপুর, চেতলা, আলিপুরের একাংশ, একবালপুর, মোমিনপুর এবং হেস্টিংস এলাকা কলকাতা বন্দরের অধীনে। ওই বরোর অধীনে রয়েছে খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ডও (৮২)। সেখানেও ডেঙ্গির হার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পুর পতঙ্গবিদেরা জানান, ঠান্ডা পড়তে শুরু করলে ডেঙ্গির প্রকোপ কমে। কিন্তু এ বার যে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে চিন্তিত পুর স্বাস্থ্যকর্তারা। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুজোয় হওয়া লাগাতার বৃষ্টির জেরে জমা জলে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশার সংখ্যা বেড়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগে শুধু বর্ষায় ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ত। এখন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চরিত্র বদলেছে এডিস ইজিপ্টাই মশাও। ফলে, প্রায় সারা বছরই ডেঙ্গি থাকছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)