বেহাল: কেষ্টপুর খালে ‘চর’। শুক্রবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
নদীতে নয়। চর জেগেছে খালে।
কেষ্টপুর খালে জেগে ওঠা নোংরার চর দেখে অবাক সল্টলেকের বাসিন্দাদের অনেকেই। সম্ভাব্য আর একটি ঘূর্ণিঝড়ের আগে যা দেখে ফের বাড়িতে জল জমার আশঙ্কা করছেন খালের আশপাশের বাসিন্দারা।
গত দু’-তিন মাসে নিম্নচাপ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে একাধিক বার জলমগ্ন হয়েছে সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তা। প্রতি বারেই বিধাননগর পুরসভা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খালের দুরবস্থা নিয়েই। খাল সংস্কার করা হয়েছে বলে সেচ দফতরও প্রতি বার দাবি করেছে। কিন্তু কেষ্টপুর খালে জেগে ওঠা চর দেখে প্রশ্ন উঠছে পলি তোলার কাজের গতি নিয়েও। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেচ দফতরকে বর্ষার আগে খাল সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কেষ্টপুর ও ইস্টার্ন ড্রেনেজ— এই দু’টি খালের উপরে সল্টলেকের নিকাশি ব্যবস্থা বহুলাংশে নির্ভরশীল। আমপান, ইয়াসের পরে এ বার ভ্রুকুটি ঘূর্ণিঝড় ‘জ়ওয়াদ’-এর।
আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। দু’-তিন ধরে বৃষ্টির পূর্বাভাসও রয়েছে। ফলে আবারও কেষ্টপুর খালের জলধারণ ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। অনেকগুলো পাম্পও বসানো হয়েছে। তবে তেমন বৃষ্টি হলে আমাদের সকলকেই কষ্ট করতে হবে।’’
সল্টলেকে ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের দিক থেকে সামান্য এগোলেই যে ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে, সেখান দিয়ে পারাপারের সময়েই চোখে পড়বে ওই চর। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই চর আসলে জমাট ময়লা। স্থানীয়দের একাংশ অবশ্য চর জেগে ওঠার পিছনে বাসিন্দাদের ভূমিকাকেও দায়ী করেছেন। অভিযোগ, নিকাশির জল বহনকারী খালে আবর্জনা, প্লাস্টিক ফেলেন স্থানীয়দের অনেকেই। তার জেরেই দ্রুত মজে যায় খাল।
বিধাননগর পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ জানান, নাব্যতা কমে যাওয়ায় কেষ্টপুর খালের জলের তল অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে। তার জেরে ভারী বৃষ্টিতে সল্টলেকের জল কেষ্টপুর খালে পড়তে বাধা পায়। জল খালে পড়ার বদলে ‘ব্যাক-ফ্লো’ করে।
গত নিম্নচাপে এই কারণেই কেষ্টপুর খাল সংলগ্ন অনেকগুলি ব্লকের রাস্তায় জল জমে যায়। নোংরা জল বাড়ির ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের ট্যাঙ্কেও ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘খাল সংস্কার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এসেছে। ইতিমধ্যেই আমরা একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছি। আগামী বর্ষার আগেই কেষ্টপুর, আপার ও লোয়ার বাগজোলা-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ খালগুলির নিকাশির সংস্কার সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy