বিসর্জন: সুভাষ সরোবরের জলে ভাসছে পুজোর ফুল ও উপচার। রবিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
শেষ রক্ষা হল না। দূষণের কবলে পড়ল সুভাষ সরোবরও। রাতভর পুণ্যার্থীদের মনোরঞ্জনে উচ্চগ্রামে বাজল ডিজে। রাত শেষে রবিবার ভোরবেলা দেদার পুজোর উপচার পড়ে দূষিত হল সরোবরের জলও।
এ দিন সকালে দেখা যায় জলে ভাসছে ফুল, মালা-সহ নানা আবর্জনা। সুভাষ সরোবরে ছট বিসর্জন নিয়ে পরিবেশ আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। কিন্তু শনিবার বিকেলে পুণ্যার্থীরা জলে নেমে পুজো দিয়ে পুজোর উপচার সঙ্গে নিয়েই সরোবরের পাড়ে উঠে আসছিলেন। ফলে মনে করা হয়েছিল পরবর্তী অনুষ্ঠানও সুশৃঙ্খল ভাবেই মিটবে। কিন্তু স্থানীয়দের একটি বড় অংশের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকে সচেতনতাও যেন ছটের মতোই সরোবরের জলে বিসর্জন দেওয়া হয়।
ওই সরোবরের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ‘ওয়েস্টবেঙ্গল অ্যাঙ্গলার্স অ্যাসোসিয়েশন’। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার ভোরে পুজো চলার সময়ে সরোবরের জলে ফুল, ঘি, দুধ, তেল-সবই ফেলা হয়েছে। পুণ্যার্থীরা কিছুই মানেননি। জলের দূষণ নিয়ে রাতে আর আদৌ কাউকে সতর্ক করা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মৎস্য শিকারিদের ওই সংগঠন। তাদের দাবি, পুরসভার পাশাপাশি রবিবার তাদের সদস্যেরাও সরোবরের জল পরিষ্কারের কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। ওই সংগঠনের সদস্য সুব্রত সেন বলেন, ‘‘ পুরসভা ছাড়াও আমাদের সংগঠনও সরোবর পরিষ্কারের কাজ করেছে।’’
কলকাতা পুরসভার ব্যখ্যা, শনি ও রবিবার ছট ছিল। দু’ দিনের আবর্জনা একসঙ্গে সাফাই করার কথা ছিল। ফলে জঞ্জাল দেখা গিয়েছে। ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যে সব আবর্জনা পরিষ্কার করে দেওয়া হয় বলে জানান স্থানীয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পবিত্র বিশ্বাস।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, শনিবার যখন দক্ষিণ কলকাতায় রবীন্দ্র সরোবরে তাণ্ডব করেছিলেন পুণ্যার্থীরা, তখন তাঁরা খানিকটা স্বস্তি বোধ করেছিলেন সুভাষ সরোবরে বিপরীত চিত্র দেখে। পুজো চলাকালীন সময়ে বিকেলে মঞ্চ বেঁধে মাইকে ঘোষণা করে পুণ্যার্থীদের জলে পুজোর উপচার ফেলতে নিষেধ করা হয়েছিল। অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতে সেই সবই বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, যে মঞ্চ থেকে পুণ্যার্থীদের সতর্ক করা হয়েছিল রাতে সেই মঞ্চেই শুরু হয় উচ্চগ্রামের শব্দের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিবেশবিদদের দাবি, ওই শব্দ গাছে থাকা পাখিদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্বয়ং কাউন্সিলর পবিত্রবাবুও। বিষয়টি অন্য একটি রাজনৈতিক দলের তত্ত্বাবধানে হয়েছে বলেই তাঁর দাবি।
কিন্তু কাউন্সিলর হিসেবে আপনি কেন শব্দ থামাতে উদ্যোগী হলেন না? উত্তরে পবিত্রবাবুর দাবি, তিনি পুলিশকে ঘটনার খবর দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও গান থামেনি।’’
এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডি সি ইএসডি দেবস্মিতা দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ভাবে ওই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে ছটপুজো সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ থানায় দায়ের হওয়ার ভিত্তিতে কয়েকটি ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy