Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি-অসুরের সঙ্গে লড়তে ভরসা প্লাস্টিকের ছাউনি, কাঠের পাটাতন

লোহার কাঠামো দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হলেও দর্শনার্থীদের ঢোকা-বেরোনোর পথ নিয়ে কারও কারও আবার চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। কিছু পার্কে প্যাচপ্যাচে কাদা এড়াতে বসানো হচ্ছে ছ’ইঞ্চি মোটা পাটাতন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪৩
পথ: কাদা ঠেকাতে পাতা হয়েছে কাঠের পাটাতন। বুধবার, কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীনের মণ্ডপের সামনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

পথ: কাদা ঠেকাতে পাতা হয়েছে কাঠের পাটাতন। বুধবার, কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীনের মণ্ডপের সামনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কেউ তড়িঘড়ি বিশাল প্লাস্টিকের বরাত দিচ্ছেন। কেউ প্রতিমা রাখা মণ্ডপের অংশে আগেভাগে আনিয়ে রাখা প্লাস্টিকটি ছাউনির মতো টাঙিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। লোহার কাঠামো দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হলেও দর্শনার্থীদের ঢোকা-বেরোনোর পথ নিয়ে কারও কারও আবার চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। কিছু পার্কে প্যাচপ্যাচে কাদা এড়াতে বসানো হচ্ছে ছ’ইঞ্চি মোটা পাটাতন, মজুত রাখা হচ্ছে বালি, ত্রিপল।

পুজোর ক’দিন কলকাতা বৃষ্টিতে ভাসতে পারে— আবহাওয়া দফতরের এমন পূর্বাভাসের পরেই তড়িঘড়ি এমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন শহরের পুজো উদ্যোক্তারা। আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে আবহাওয়া দফতর বুধবারও জানিয়েছে, সপ্তমী থেকে দশমী ভোগাতে পারে নিম্নচাপ। অতিবৃষ্টির জেরে শহরের নিচু জায়গাগুলিতে জল জমতে পারে বলেও আশঙ্কা থাকছে। পুরসভা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দাবি করা হলেও পুজোকর্তারা বলছেন, ‘‘শুধু পুরসভা কেন, আমরাও জল-বৃষ্টি সামলে দিতে ঝাঁপাব। কিন্তু মানুষই যদি রাস্তায় না বেরোতে পারেন, তা হলে এত কিছু করে লাভ কী?’’ আর এক পুজোকর্তার মন্তব্য, ‘‘দু’বছর মানুষ পুজো উপভোগ করতে পারেননি। এ বার বৃষ্টির জন্য পুজো ভেস্তে গেলে তার চেয়ে দুঃখের কিছু হবে না।’’

বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর পুজোকর্তা গৌতম নিয়োগী বললেন, ‘‘পুজোয় বৃষ্টির খবর শুনেই আতঙ্ক হচ্ছে। মণ্ডপের আশপাশে মাঠের জল বার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাদা বালি এনে রেখেছি। কিন্তু বৃষ্টির জন্য দর্শনার্থীরা না এলে এত কিছু করে লাভ কী?’’ একই সুর মহম্মদ আলি পার্কের পুজোকর্তাদের গলাতেও। পার্কের জলাধার সংক্রান্ত জটিলতার জন্য রাস্তার দিকে সরাতে হয়েছে মণ্ডপ। এ দিনের বৃষ্টিতেই মণ্ডপের কাজ প্রায় ধুয়ে গিয়েছে। এক উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘এইটুকু বৃষ্টিতেই এমন অবস্থা! পুজোয় বৃষ্টি হলে তো মণ্ডপের কাজ বলে আর কিছুই থাকবে না!’’

হিন্দুস্থান পার্ক পুজো কমিটিরও মণ্ডপসজ্জা নিয়েই মাথাব্যথা। সেখানকার উদ্যোক্তা সুতপা দাস বললেন, ‘‘এখানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে আলতা পরা পা সেলাই মেশিন চালাচ্ছে বলে দেখানো হচ্ছে। প্রজেক্টরটি একটি বাড়ির বারান্দায় রাখা হয়েছে, ফলে চিন্তা নেই। কিন্তু যেখানে প্রজেক্টরের আলো ফেলা হচ্ছে, বৃষ্টিতে সেই কাপড়ের কী অবস্থা হবে, বুঝতে পারছি না।’’ বালিগঞ্জ কালচারালের পুজো উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিল বললেন, ‘‘জল-নিরোধক রং দিয়ে আঁকার নানা কাজ করেছি, তাই তা নিয়ে চিন্তা নেই। তবু নতুন করে বড় মাপের প্লাস্টিকের ব্যবস্থা করে রাখছি।’’ একই দাবি শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব, ত্রিধারা সম্মিলনী, নলিন সরকার স্ট্রিট এবং কাশী বোস লেনের। নলিন সরকার স্ট্রিট আবার এ দিন সন্ধ্যাতেই এত বড় প্লাস্টিক আনিয়ে রেখেছে, যা দিয়ে সম্পূর্ণ মণ্ডপ প্রায় ঢেকেফেলা সম্ভব।

হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজোকর্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘পটের কাজ করেছি আমরা। রং আর আলো ছাড়া যে থিম ফুটিয়ে তোলাই যায় না। ফলে বৃষ্টি হলে কাজ খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। খোলামেলা মণ্ডপে ঢুকে বৃষ্টি হলে দর্শক কোথায় দাঁড়াবেন, বুঝেই পাচ্ছি না।’’ দেশপ্রিয় পার্কের সুদীপ্ত কুমার জানাচ্ছেন, গত সাত-আট বছরের মতো এ বারেও পার্কে পাটাতন পেতে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখছেন তাঁরা। কুমোরটুলি পার্কের উদ্যোক্তা অনুপম দাস বললেন, ‘‘আমরাও পার্কের মাটিতে ছ’ইঞ্চি উঁচু পাটাতন পেতে থাকি। এক বার এমন বৃষ্টি হয়েছিল, আমাদের প্রতিমা দেখে বেরিয়ে দর্শনার্থীদের জল কিনে পা ধুতে হয়। পার্কের কাদায় কত জনের যে জুতো ছিঁড়েছিল! এ বার বৃষ্টি হলেও যাতে তেমন পরিস্থিতি না হয়, সে চেষ্টাই করছি।’’

Durga Puja 2022 weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy