E-Paper

ইটভাটার ব্যবসায়ী খুনে ধৃত অংশীদার, খোঁজ দুই দুষ্কৃতীর

তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে রামমন্দির চত্বরে দোকানে বসে চা পান করছিলেন নাসিরুদ্দিন। সেই সময়ে সেখানে বাইকে চেপে এসে দুই দুষ্কৃতী নাসিরুদ্দিনকে গুলি করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:১৯
নাসিরুদ্দিন খান।

নাসিরুদ্দিন খান। —ফাইল চিত্র।

ব্যবসার অংশীদারের সঙ্গে টাকা সংক্রান্ত গোলমালকে কেন্দ্র করেই শনিবার রাতে নিউ টাউনে খুন হতে হল ইটভাটার এক ব্যবসায়ী নাসিরুদ্দিন খানকে। পুলিশ জানিয়েছে, ভাঙড়ের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে রাতে নিউ টাউনের রামমন্দির চত্বরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। রাতেই উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া থেকে নাসিরুদ্দিনের ইটভাটার ব্যবসার অংশীদার রফিকুল গাজি ওরফে পরাগকে গ্রেফতার করে ইকো পার্ক থানার পুলিশ। খুনের প্রধান চক্রান্তকারী সন্দেহে পরাগকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। রবিবার পরাগকে বারাসত এসিজেএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত দেয় আদালত।

তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে রামমন্দির চত্বরে দোকানে বসে চা পান করছিলেন নাসিরুদ্দিন। সেই সময়ে সেখানে বাইকে চেপে এসে দুই দুষ্কৃতী নাসিরুদ্দিনকে
গুলি করে। জখম অবস্থায় তাঁকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই খুনের কিনারায় পুলিশের একটি বিশেষ দল তৈরি হয়েছে। খোঁজ চলছে দুই দুষ্কৃতীর। পুলিশের অনুমান, পরাগ ওই দুই দুষ্কৃতীকে ভাড়া করেছিল।

ভাঙড়ের পদ্মপুকুর এলাকার বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন, পরিবারের মেজো ছেলে। মাস চারেক আগে নাসিরুদ্দিনের বিয়ে হয়েছিল। পরিবার জানিয়েছে, বছর দুই ধরে তিনি ইটভাটার ব্যবসায় জড়িয়ে যান। তখন থেকেই তাঁর ব্যবসার অংশীদার উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার বাসিন্দা রফিকুল গাজি ওরফে পরাগ।

পরিবারের অভিযোগ, ব্যবসার শুরু থেকেই লেনদেন নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে নাসিরুদ্দিনের গোলমাল চলছিল। রফিকুল প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ইটভাটা থেকে আত্মসাৎ করে। শুধু তাই নয়, গত দু’বছর ধরে কোনও হিসাব করছিল না। এই নিয়ে নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়।

নাসিরুদ্দিনের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, হিসাবে গরমিলের কথা মানতে চাইত না রফিকুল। এমনকি ওই ভাটার ম্যানেজার নাসিরুদ্দিনের পক্ষে কথা বলায়, তাঁকেও ইটভাটা থেকে সরিয়ে দেয় রফিকুল।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ইটভাটার হিসেব নিয়ে শনিবার ইকো পার্কের রামমন্দির এলাকায় ফোন করে নাসিরউদ্দিনকে ডাকে রফিকুলই। সেখানে তারা একসঙ্গে বসেই চা পান করছিল। এর পরে রফিকুল সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরেই দুষ্কৃতীরা গিয়ে নাসিরুদ্দিনকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

নাসিরউদ্দিনের বাবা সিরাজউদ্দিন খান বলেন, ‘‘আমার ছেলে রফিকুলের সঙ্গে যৌথ ভাবে ইটভাটার ব্যবসা করেছিল। কিন্তু রফিকুল ব্যবসার কোনও হিসাব ঠিক মতো দিচ্ছিল না। ৭০ লক্ষ টাকার গরমিল ছিল। ছেলে হিসাব চাইতে গেলে রফিকুল ঝামেলা করছিল। রফিকুল পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে খুন করিয়েছে।’’

ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার বিকেলে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি যান নাসিরুদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে। তার আগে সকালে মৃতের বাড়িতে যান ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা পরিষদ সদস্য হাকিমুল ইসলাম। তাঁরা জানান, নাসিরুদ্দিনের পরিবারের পাশে সব ভাবে তাঁরা রয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

New Town Murder Case police investigation Shoot out

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy