Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Drug

নেপালে গা-ঢাকা, লখনউ থেকে কোকেন-কাণ্ডের মূল পাণ্ডা ধৃত

শনিবার রাতে নিউ আলিপুর কোকেন-কাণ্ডের মূল পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছেন কলকাতা পুলিশের মাদক দমন শাখার গোয়েন্দারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২১ ০৬:৩৭
Share: Save:

নেপালে দু’মাস লুকিয়ে থেকে সদ্য ভারতে ঢুকেছিল সে। আশ্রয় নিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শনিবার রাতে সেখান থেকেই নিউ আলিপুর কোকেন-কাণ্ডের মূল পাণ্ডাকে গ্রেফতার করেছেন কলকাতা পুলিশের মাদক দমন শাখার গোয়েন্দারা। ধৃতের নাম অমৃত রাজ ওরফে নারায়ণ।

ধৃত অমৃতই নিউ আলিপুর-কাণ্ডে কোকেন সরবরাহের মূল পাণ্ডা বলে দাবি পুলিশের। রবিবার তাকে লখনউয়ের স্থানীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক ট্রানজ়িট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ধৃতকে আজ, সোমবার কলকাতায় নিয়ে এসে আলিপুর আদালতে তোলার কথা। অমৃতকে পলাতক দেখিয়ে আগেই আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা।

লালবাজার সূত্রের খবর, নিউ আলিপুরে কোকেন-কাণ্ডের পরে নেপালে গা-ঢাকা দিয়েছিল অমৃত। দেশ ছাড়তে সে সময়ে তাকে সাহায্য করেছিলেন কলকাতার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। নেপালেই গত দু’মাস লুকিয়ে ছিল অমৃত। গত ৪ মে ফের সে দেশে ফিরে আসে। এর পর থেকেই গোয়েন্দারা তার উপরে নজর রাখা শুরু করেন। প্রথমে বিহারে লুকিয়েছিল সে। সেখান থেকে যায় নয়ডায়। কখনও গেস্ট হাউস, কখনও মেসে থাকছিল সে। অবশেষে লখনউ থেকে তাকে পাকড়াও করে পুলিশ।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নিউ আলিপুরের নলিনীরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে একটি গাড়ি থেকে ৭৮ গ্রাম কোকেন-সহ বিজেপি যুবনেত্রী পামেলা গোস্বামীকে গ্রেফতার করেছিল নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। পামেলা সেই সময়ে বিজেপির হুগলির জেলার যুব নেতৃত্বের পর্যবেক্ষক পদে ছিলেন। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় পামেলার সঙ্গী প্রবীর দে এবং নিরাপত্তারক্ষী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কেও।

ওই ঘটনায় গত সোমবার আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেন গোয়েন্দারা। সেই চার্জশিটে অবশ্য পামেলা, প্রবীর এবং ওই নিরাপত্তারক্ষীর নাম নেই। তিন জনকেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, আদালতে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটে নাম রয়েছে মোট আট অভিযুক্তের। তাদের নাম রাকেশ সিংহ, জিতেন্দ্র কুমার সিংহ, সুরজকুমার শাহ, আরিয়ান দে, অমৃতা সিংহ, দেইম আখতার, ফারহান আহমেদ এবং অমৃত রাজ। এদের মধ্যে অমৃতকে পলাতক বলে দেখানো হয়েছিল চার্জশিটে। বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহকে ওই মামলার মূল চক্রী হিসেবেও দেখানো হয়েছে ওই চার্জশিটে। তদন্তকারীদের দাবি, মূলত ফাঁসানোর জন্যই রাকেশের নির্দেশেই পামেলার গাড়িতে মাদক রেখেছিল অমৃত। ঘটনার দিন আর এক অভিযুক্ত, ধৃত সুরজের স্কুটারে চেপে নিউ আলিপুরে আসে অমৃত। এর পরে পামেলার গাড়িতে উঠে ভিতরে মাদকের প্যাকেট রেখে দেয়। তবে পুলিশ আসার আগেই সে সুরজের স্কুটারে চেপে সেখান থেকে চম্পট দেয়। পরে সুরজকে জেরা করে ওই তথ্য জানতে পারেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে রাকেশের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও অমৃত এবং সুরজকে দেখা যায়।

তদন্তকারীরা জানান, পামেলাকে ভোটে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিউ আলিপুরে দেখা করতে বলেছিলেন রাকেশই। সেখানেই অমৃত সুযোগ বুঝে পামেলার গাড়িতে কোকেনের প্যাকেট রেখে দেয়। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও ঘটনার সময়ে অমৃতকে সেখান থেকে চলে যেতে দেখা গিয়েছে।

লালবাজার জানিয়েছে, এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অমৃতকে পুলিশ ওই দিন পালাতে সাহায্য করেছিল কি না, ধৃতকে জেরা করে সে কথাও জানার চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drug
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE