Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Airport

বিদ্যুৎহীন বিমানবন্দর, মেট্রোর খনন ঘিরে অভিযোগ

এক অফিসারের দাবি, একটি ভূগর্ভস্থ জলের পাইপও ফেটে ওই এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। সেই পাইপের মুখ বন্ধ করে, পাম্প করে জল ফেলে দিয়ে শুক্রবার সকালে কাজ শুরু হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৬
Share: Save:

সাত বছর আগে কলকাতা বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল তৈরি হওয়ার পর থেকে এত বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিইএসসি-র একটি ৩৩ কেভি লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টা পরেও সংযোগ জোড়া লাগেনি। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যে নিজস্ব সমান্তরাল জেনারেটর ব্যবস্থা রয়েছে, এত দীর্ঘ সময় সেটি আগে একটানা কখনও চলেনি। তাই ওই জেনারেটর ব্যবস্থাও মাঝেমধ্যেই বিগড়েছে। এর জেরে বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার সকালে কলকাতা থেকে বেশ কিছু উড়ান ছাড়তেও দেরি হয়েছে। পরিষেবা ঠিক রাখতে অতিরিক্ত লোকবল কাজে লাগিয়ে উড়ান সংস্থাগুলি এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছেন।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যখনই জেনারেটর বিগড়েছে, তখনই বন্ধ হয়েছে কনভেয়ার বেল্ট। বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের ব্যাগ বিমান থেকে নামিয়ে ট্রলিতে চাপিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে টার্মিনালে। সেখান থেকে যাত্রীরা নিজেদের ব্যাগ চিহ্নিত করে বাইরে বেরিয়েছেন। আবার কলকাতার বাইরে যাওয়া যাত্রীদের ক্ষেত্রে বিমানের পেটে চেক-ইন ব্যাগ যে কনভেয়ার বেল্ট মারফত যাওয়ার কথা, সেটি বন্ধ হওয়ায় তাঁদের ব্যাগ আলাদা ভাবে এক্স-রে করে তার পরে ট্রলিতে চাপিয়ে পাঠাতে হয়েছে। তাতে উড়ান ছাড়তেও দেরি হয়েছে।

সূত্রের খবর, বিকল্প জেনারেটর চালু রাখতে শুক্রবার সকাল আটটার পর থেকে বেশ কিছু লিফট বন্ধ রাখা হয়। চালু রাখা হয় শুধু উপরে ওঠার এসক্যালেটর। বন্ধ রাখা হয় টার্মিনালের বেশির ভাগ আলোও। বাতানুকূল ব্যবস্থাও অনেক কম ব্যবহার করা হয়।

ঘটনার জন্য প্রাথমিক ভাবে গাফিলতির আঙুল উঠেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষের দিকে। টার্মিনাল ভবনের দোতলায় ডিপারচারে যাওয়ার যে উড়ালপুল রয়েছে তা শুরু হওয়ার মুখেই বাঁ দিকের বিশাল এলাকা ঘিরে মেট্রোর কাজ চলছে। অভিযোগ, সেখানেই যন্ত্রের সাহায্যে মাটি খোঁড়ার সময়ে মেট্রোর কর্মীরা মাটির প্রায় ৮ ফুট নীচে থাকা সিইএসসি-র কেবল কেটে ফেলেন। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা অভিযোগ করেছেন, কোথা দিয়ে সিইএসসি-র কেবল গিয়েছে তা আগে থেকেই চিহ্নিত করা ছিল। তা সত্ত্বেও কেব্‌ল কেটে গিয়েছে।

ঘটনা খতিয়ে দেখতে যৌথ তদন্ত কমিটি গড়ার কথা জানিয়েছে কলকাতা মেট্রো। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই কমিটিতে মেট্রোর প্রতিনিধি ছাড়াও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সিইএসসি-র প্রতিনিধিরাও থাকবেন। মেট্রো সূত্রের খবর, জরুরি ভিত্তিতে কেবলের একটি অংশের মেরামতি আগেই হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশের মেরামতি সিইএসসি সম্পূর্ণ করবে রাতের মধ্যেই।

এক অফিসারের দাবি, একটি ভূগর্ভস্থ জলের পাইপও ফেটে ওই এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। সেই পাইপের মুখ বন্ধ করে, পাম্প করে জল ফেলে দিয়ে শুক্রবার সকালে কাজ শুরু হয়েছে। অভিজ্ঞ কর্মীদের ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে, সিইএসসি-র আরও একটি ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে বিমানবন্দরে। তা দিয়ে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল এবং রানওয়ের দিকের আলো ও অন্যান্য সংযোগ চলে। সেই লাইন অন্য দিক দিয়ে গিয়েছে। ফলে, সেখান থেকে বিদ্যুৎ পেতে সমস্যা হয়নি।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪টে ৪৩ মিনিটে আচমকা অন্ধকার নেমে আসে টার্মিনালে। চার মিনিট পরে জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ জেনারেটর বসে যায়। তার পর থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় জেনারেটর বিগড়ে যায়। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য শুক্রবার জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে আসা পর্যন্ত একটানা কাজ করেছে জেনারেটর। সিইএসসি জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হতে আজ, শনিবার সকালও হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Airport Power cut Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE