E-Paper

শহর প্লাবিত হওয়ার নেপথ্যে কি পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে ‘অবৈধ নির্মাণ’?

পূর্ব কলকাতা জলাভূমি নষ্ট এবং তা দখল করে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। অথচ, এ নিয়ে প্রশাসনের হেলদোল নেই। তৃণমূলের এক প্রাক্তন মেয়র ওই জলাভূমির উপর দিয়ে উড়ালপুল তৈরি করতেও চেয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৫৪
বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়।

বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। —প্রতীকী চিত্র।

কয়েক ঘণ্টার অতি প্রবল বৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছিল কলকাতা। উত্তরের জল নেমে গেলেও দক্ষিণ কলকাতা এবং ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকা এখনও জলমগ্ন। বড় বড় আবাসনে বিদ্যুৎ নেই, পানীয় জলের হাহাকার। বহু প্রবীণ নাগরিক রীতিমতো জীবনসঙ্কটে পড়েছেন। জল বার করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশকর্মীরা বলছেন, দক্ষিণ এবং পূর্ব কলকাতার নিকাশির মূল ব্যবস্থা ছিল পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ জলাভূমি। কিন্তু কার্যত প্রশাসনের মদতেই সেই জলাভূমিকে নষ্ট করা হয়েছে। ফলে জল বেরোনোর স্বাভাবিক রাস্তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি নষ্ট এবং তা দখল করে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। অথচ, এ নিয়ে প্রশাসনের হেলদোল নেই। তৃণমূলের এক প্রাক্তন মেয়র ওই জলাভূমির উপর দিয়ে উড়ালপুল তৈরি করতেও চেয়েছিলেন। শেষমেশ অবশ্য সেই প্রকল্প হয়নি। তবে ওই তল্লাটের অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে প্রশাসনের সদিচ্ছা কত দূর, সেই প্রসঙ্গ তুলেছে খাস কলকাতা হাই কোর্ট। গত সোমবারও পূর্ব কলকাতা জলাভূমির একটি মামলায় প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। ওই মামলায় এর আগেও পূর্ব কলকাতা জলাভূমির বেআইনি নির্মাণভাঙতে বলেছিলেন বিচারপতি সিংহ। কিন্তু জলাভূমি কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করেননি।

কলকাতার দক্ষি‌ণ ভাগের জলমগ্নতার অন্যতম কারণ যে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির নষ্ট হওয়া, সে কথা মানছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী। তিনি বলছেন, ‘‘কলকাতার স্বাভাবিক ঢাল পূর্ব কলকাতা জলাভূমির দিকে। জল জমলে সে দিকেই গড়িয়ে যাওয়ার কথা। তাই জলাভূমি নষ্ট হলে জল বেরোতে পারবে না।’’ প্রসঙ্গত, পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে একের পর এক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। হাই কোর্টের মামলাতেও উঠে এসেছে, ওই এলাকায় অবৈধ নির্মাণের তালিকায় বেসরকারি স্কুল, কলেজ, গাড়ির সার্ভিস সেন্টার, বহুতল আবাসন আছে।

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর বক্তব্য, কলকাতার স্বাভাবিক নিকাশি ব্যবস্থা ছিল পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। অতিরিক্ত জল এই জলাভূমি হয়ে বিদ্যাধরী নদী দিয়ে বেরিয়ে যেত। কিন্তু এক দিকে দখল এবং অন্য দিকে প্লাস্টিক-সহ কঠিন বর্জ্যের দূষণের ফলে জল স্বাভাবিক ভাবে বেরোতে পারছে না। তাই পাম্প চালাতে হচ্ছে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই জলাভূমি কলকাতার কিডনির মতো কাজ করে। তাই এর ভূমিকা অপরিসীম।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC drainage

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy