এক স্কুল পরিদর্শক অবসর নিয়েছেন জানুয়ারি মাসে। তাঁর জায়গায় নতুন কেউ আসেননি। যাঁর কাঁধে আপাতত ওই দায়িত্ব, তিনিও এই মুহূর্তে ছুটিতে। এই টালবাহানায় চলতি মাসের ১০ তারিখ পেরিয়ে গেলেও বেতন মেলেনি কলকাতা, বিধাননগর-দমদম-ব্যারাকপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকার প্রায় ৬০০ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের। এমনকী যাঁরা বদলি হয়ে ইতিমধ্যেই অন্য স্কুলে চলে গিয়েছেন, ফাইল সই না হওয়ায় তাঁদেরও বেতন বন্ধ প্রায় তিন মাস। একই সময় ধরে মিলছে না অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পেনশনও।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় স্কুল শিক্ষা দফতরের অধীনে দু’টি পরিদর্শক অফিস রয়েছে। একটি ব্যারাকপুরে, অন্যটি বারাসতে। বিধাননগর, দমদম, ব্যারাকপুর, নৈহাটি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ৩৯৪টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল আছে ব্যারাকপুর স্কুল পরিদর্শকের অধীনে। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি অবসর নিয়েছেন ব্যারাকপুরের স্কুল পরিদর্শক রিক্তা দে। কিন্তু তার পর থেকে সেই পদে কেউ যোগ না দেওয়ায় গোটা ব্যারাকপুর বিভাগটি দেখার দায়িত্ব বারাসতের স্কুল পরিদর্শককে হস্তান্তর করে স্কুল শিক্ষা দফতর।
কিন্তু সেই সময় থেকেই অসুস্থতার জন্য কাজে যোগ দিতে পারছেন না বারাসতের স্কুল পরিদর্শক মলি মুখোপাধ্যায়। ফলে, ব্যারাকপুর ও বারাসতের যৌথ দায়িত্ব ফের হস্তান্তর করা হয় উত্তর ২৪ পরগনার প্রাথমিক বিভাগের স্কুল পরিদর্শকের হাতে।
স্বভাবতই অভিযোগ উঠেছে, এই টালবাহানায় থমকে গিয়েছে ব্যারাকপুরের স্কুল পরিদর্শক অফিসের যাবতীয় কাজ। দমদম বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রধান শিক্ষক কা়ঞ্চন মৈত্রের কথায়, ‘‘এখনও আমাদের স্কুলের শিক্ষকদের বেতন হয়নি। পরিদর্শক না থাকায় আমাদের মতো প্রচুর স্কুলের নানাবিধ কাজ আটকে রয়েছে।’’
আরও অভিযোগ, আপস বদলির (মিউচুয়াল ট্রান্সফার) ক্ষেত্রে ‘লাস্ট পে সার্টিফিকেটে’ সই না হওয়ায় বেতন বন্ধ প্রায় ২৭ জন শিক্ষকের।
মাস দু’য়েক হল বদলি নিয়ে হাবরা কলশূর হাইস্কুলে যোগ দিয়েছেন মুরশিদুল ইসলাম। তিনি জানান, এক দিকে তাঁদের নিয়মিত স্কুলে হাজিরা দিতে হচ্ছে। অন্য দিকে, কাগজপত্র ঠিক করার জন্য মাঝেমধ্যেই এক বার ব্যারাকপুর, এক বার বারাসতে পরিদর্শক অফিসেও ঘুরতে হচ্ছে। কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। মেলেনি বেতনও। একই সমস্যার জন্য আটকে ৫৫ জনের পেনশন ফাইলও।
যিনি আপাতত ব্যারাকপুর এবং বারাসত বিভাগের যৌথ দায়িত্বে, উত্তর ২৪ পরগনার সেই স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) স্মৃতা চন্দ বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই পরিদর্শক কাজে যোগ দেবেন। তবে সব কাজই হচ্ছে।’’ দেরিতে বেতনের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বেতন-প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই অনলাইনে শিক্ষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেতন ঢুকে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy