Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Howrah

কোভিড-বিধি তুচ্ছ করে শুরু স্কুল, মাস্ক পরাতেও নিষেধাজ্ঞা!

করোনার প্রকোপ কমলেও তা পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। এখনও সব সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

বিধি-ভঙ্গ: শিশুদের নিয়ে চলছে ক্লাস। মাস্ক নেই কারও মুখে। বুধবার, শিবপুরের শিশুতীর্থ বিদ্যালয়মণ্ডলীতে। নিজস্ব চিত্র

বিধি-ভঙ্গ: শিশুদের নিয়ে চলছে ক্লাস। মাস্ক নেই কারও মুখে। বুধবার, শিবপুরের শিশুতীর্থ বিদ্যালয়মণ্ডলীতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৯
Share: Save:

এখনও স্কুল খোলার অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। তার মধ্যেই কোভিড-বিধির তোয়াক্কা না করে শিশুদের নিয়ে ক্লাস শুরু করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হাওড়ার শিবপুরের শিশুতীর্থ বিদ্যালয়মণ্ডলী নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, স্কুল খোলেনি। শিশুরা বাড়িতে থেকে দুষ্টুমি করছে, তাই তাদের খেলাচ্ছলে
পড়ানো হচ্ছে।

করোনার প্রকোপ কমলেও তা পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। এখনও সব সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ খোলার অনুমোদনও দেয়নি রাজ্য সরকার। ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল খোলা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। এরই মধ্যে শিবপুরের ওই শিশু বিদ্যালয়ে গত ১৪ জানুয়ারি থেকে রীতিমতো ক্লাস শুরু হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, স্কুল চালু করে সেখানে শিক্ষিকারা বেলা ১১টা থেকে ২টো পর্যন্ত ক্লাস নিচ্ছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্কুলে ঢুকলে কোনও ভাবেই মাস্ক পরা যাবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মাস্ক পরলে দেহে অক্সিজেনের অভাব ঘটবে। মাস্ক পরছেন না শিক্ষিকারাও।

বুধবার দুপুরে ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, কোনও শিক্ষিকার মুখে মাস্ক নেই। ক্লাসে পাশাপাশি বসে থাকা শিশুদের মুখেও নেই মাস্ক। এমনকি, গোটা স্কুলে কোথাও নেই জীবাণুনাশের ব্যবস্থাও।

রাজ্যের সব স্কুল যখন বন্ধ, তখন সরকারি নির্দেশের তোয়াক্কা না করে কেন খোলা হয়েছে স্কুল? কেনই বা মানা হচ্ছে না কোভিড-বিধি? স্কুলের দুই শিক্ষিকা স্বাগতা চক্রবর্তী ও সর্বাণী দত্ত বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ স্কুল চালু করে দিয়েছেন, তাই আমাদের আসতে হচ্ছে। রেক্টর যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, সেটাই পালন করছি। তিনি স্কুলের মধ্যে মাস্ক না পরার নির্দেশ দিয়েছেন।’’

একই বক্তব্য স্কুলের ডেপুটি রেক্টর বীথিকা মিত্রের। তিনি বলেন, ‘‘শিশুরা দীর্ঘদিন বাড়িতে থেকে বিরক্ত হয়ে গিয়েছে। ওদের তাই স্কুলে এনে খেলাচ্ছলে পড়ানো হচ্ছে। আর রেক্টর বলেছেন মাস্ক না পরতে। সেটাই আমরা মেনে চলছি।’’

স্কুলের রেক্টর সুখরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল খোলেনি। কোচিং ক্লাস হিসেবে চলছিল। এলাকার বাসিন্দারা না চাওয়ায় সেটাও আগামী কাল থেকে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। অনেক দিন পড়ুয়ারা পড়াশোনার মধ্যে নেই, তাই ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। এটা ঠিকই যে স্কুলে মাস্ক না পরার নির্দেশ দিয়েছি। কারণ মাস্ক পরলে শিক্ষিকা বা পড়ুয়া কেউই কারও কথা বুঝতে পারবে না।’’ কিন্তু তাঁর এই নির্দেশ মানতে গিয়ে কেউ কোভিডে আক্রান্ত হলে তার দায় কে নেবে? সুখরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমি জানতাম শিশুরা কোভিডে আক্রান্ত হয় না। যদি এটা আমার অজ্ঞতা হয়, তা হলে আমারই ভুল হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE