Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩
Prosthetic Limb

কৃত্রিম পা পেলেন নিরাপত্তারক্ষী

মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে ছিল অভিজিৎ ও তাঁর পরিবারের। তাঁর স্ত্রী পার্বতী গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন।

বন্ধু: কৃত্রিম পা-সহ অভিজিৎ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

বন্ধু: কৃত্রিম পা-সহ অভিজিৎ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:০৬
Share: Save:

অতিরিক্ত আয়ের জন্য বাড়িতে বাড়িতে গাছের পরিচর্যার কাজ করতেন নিরাপত্তারক্ষী অভিজিৎ প্রামাণিক। সেই কাজ করার সময়ে ঘটে দুর্ঘটনা। তার জেরে তাঁর ডান পা হাঁটুর উপর থেকে বাদ দিতে হয়।

Advertisement

মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে ছিল অভিজিৎ ও তাঁর পরিবারের। তাঁর স্ত্রী পার্বতী গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন। সেই সামান্য রোজগারে অভিজিতের চিকিৎসা, সংসারের খরচ কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন প্রামাণিক দম্পতি। দেড় বছর পার করে শেষ পর্যন্ত তাঁদের চিন্তা খানিকটা কমেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে অভিজিতের হাতে কৃত্রিম পা তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী, স্থানীয় কোঅর্ডিনেটর বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

পার্বতী জানান, স্বামীর দুর্ঘটনার পরে তিনি বিধাননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর বাণীব্রতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিজিতের চিকিৎসার বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।

Advertisement

বাণীব্রতবাবু জানান, ছুটির দিনগুলিতে অভিজিৎ সল্টলেকে গাছ পরিচর্যার কাজ করতেন। ২০১৯-এর অগস্টে এক বর্ষার
দিনে অভিজিৎ সল্টলেকে এক জায়গায় কাজ করার সময়ে পা পিছলে উঁচু থেকে পড়ে
গিয়ে গুরুতর জখম হন। তাঁর ডান পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হয়। কিন্তু তার পরে সংক্রমণ হয়ে যাওয়ায়
তাঁর ডান পা হাঁটুর উপর থেকে বাদ দিতে হয়।

ওই দম্পতি জানান, এমন দুর্ঘটনার পরে তাঁরা প্রায় সব আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। এর উপরে আবার মহিষবাথানে অভিজিতের বাড়িতে শৌচালয়ও ছিল না। পরিবারটির পাশে দাঁড়ায় বিধাননগর পুরসভা। অভিজিতের অবস্থা বুঝে তাঁর বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করে দেয় পুরসভাই।

বাণীব্রতবাবু জানান, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার পরে কৃত্রিম পায়ের কথা ভাবা হয়। জার্মানির একটি কৃত্রিম পা প্রস্তুতকারক সংস্থার কলকাতার অফিসে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘দৈনন্দিন পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি মানুষের এমন বিপদে পাশে দাঁড়াতে পেরে ভিন্ন অনুভূতি হচ্ছে। আশা করছি, অভিজিৎ আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।’’

পার্বতী জানান, দুর্ঘটনার পরে তাঁরা বাণীব্রতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করা থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা পেয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বাড়িতে নিজস্ব শৌচালয় ছিল না। তা-ও পুরসভা করে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার স্বামী যে আবার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন, তা ভাবতে পারিনি। দমকলমন্ত্রী চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করছি, আমার স্বামী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.