Advertisement
E-Paper

রোগীদের দুর্দশায় ক্ষুব্ধ পরিদর্শকেরা

শনিবারের সকাল। পাভলভ মানসিক হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতেই ছুটে এসে তাঁকে ঘিরে ধরলেন এক দল রোগিণী। ‘‘আমরা বাড়ি যাব দিদি। যেতে দিচ্ছে না। নিয়ে যাচ্ছে না কেউ।’’ তাঁদের মধ্যেই কয়েক জন হাত ধরে ওয়ার্ডের ভিতরে নিয়ে গেলেন পরিদর্শক দলের প্রধান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব ধরিত্রী পণ্ডাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০১:০৮

শনিবারের সকাল। পাভলভ মানসিক হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতেই ছুটে এসে তাঁকে ঘিরে ধরলেন এক দল রোগিণী। ‘‘আমরা বাড়ি যাব দিদি। যেতে দিচ্ছে না। নিয়ে যাচ্ছে না কেউ।’’ তাঁদের মধ্যেই কয়েক জন হাত ধরে ওয়ার্ডের ভিতরে নিয়ে গেলেন পরিদর্শক দলের প্রধান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব ধরিত্রী পণ্ডাকে। ‘‘দেখুন না, সন্ধেবেলা আমাদের ঘরে ঢুকিয়ে দেয় এক বোতল জল দিয়ে। পরদিন সকাল ছ’টা পর্যন্ত ওয়ার্ড থেকে আর বেরোনো যাবে না। ওয়ার্ডের ভিতরে খাবার জলের কল নেই। এত গরমে এক বোতল জলে হয়? আপনি একটু বলে দিন না।’’
রোগিণীদের কথায় দৃশ্যতই তখন অস্বস্তিতে সেখানে উপস্থিত রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে, স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী-সহ একাধিক প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্তা। স্তম্ভিত ধরিত্রীদেবী তখনই তাঁদের খাবার জলের ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বললেন। নোটও নিলেন। এই গ্রীষ্মে কেন সন্ধেবেলা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত মাত্র এক বোতল জলই ভরসা প্রতি রোগীর? এটা কি মানবিক? স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর জবাব, ‘‘উনি (ধরিত্রীদেবী) কী বলেছেন ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন। ওঁরা সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট দেবেন। তার ভিত্তিতে কেন্দ্র যা নির্দেশ দেবে, তা-ই করব।’’

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভারতের সব মানসিক হাসপাতালেই এই ধরনের পরিদর্শন চলছে। গত শুক্রবার বহরমপুর মানসিক হাসপাতালে যান পরিদর্শকেরা। শনিবার সকাল দশটা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা পাভলভ ঘুরে দেখেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের উচ্চপদস্থ অফিসার সুজয় হালদার এবং স্টেট লিগাল সেলের তরফে অমরেশ দে।

খাবার জল ছাড়া পাভলভের আরও কিছু ব্যবস্থা নিয়ে এ দিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন ধরিত্রীদেবী। কেন ক্রমশ সুস্থ হতে থাকা রোগীদের জন্য ভলিবল বা ফুটবল খেলার ব্যবস্থা নেই, তোলেন সেই প্রশ্ন। রোগী সংক্রান্ত তথ্য মজুত রাখার ব্যবস্থা ও হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখেও পরিদর্শকেরা বিরক্ত হন। নতুন ভবন হওয়া সত্ত্বেও কেন চার দিকে এত ময়লা, সেই প্রশ্ন ওঠে। তবে রোগিণীদের নিয়ে চালানো লন্ড্রি ও চা-ঘরের প্রশংসা করেন তাঁরা। এ দিন দুপুর দু’টোর পরে পরিদর্শকেরা লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালে যান। সেখানে শৌচাগার দেখে ক্ষুব্ধ হন পরিদর্শকেরা। পরে ধরিত্রীদেবী বলেন, ‘‘সার্বিক ভাবে হাসপাতালগুলির অবস্থা মন্দের ভাল। তবে জল ও শোচাগারের দিকে নজর দিতে হবে। আমরা রাজ্যের কর্তাদের জানিয়েছি। তাঁরা ব্যবস্থা করবেন কথা দিয়েছেন।’’ ওই দুই হাসপাতালে যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কাজ করে, তাদের তরফে রত্নাবলী রায় বলেন, ‘‘নিয়মিত এমন নিরপেক্ষ পরিদর্শন দরকার। দরকার মনোরোগীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের খুঁটিনাটি পরিকল্পনা। তা হলে এঁদের সঙ্গে কয়েদিদের মতো ব্যবহার করা বা চিকিৎসায় গাফিলতি করার আগে সবাই দশ বার ভাববে।’’

Mental Hospital Pavlov Mental Hospital Special inspection central health health officer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy