Advertisement
E-Paper

সিসি ক্যামেরা ঠিক কোন দিকে ঘোরানো? অনামিকার সেই মুহূর্তের ছবি কি মিলছে? কী কী দেখা গেল যাদবপুরে পৌঁছে

বৃহস্পতিবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ইংরেজি বিভাগের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলকে। পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে হাসপাতাল।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩৪
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর দেহ ঘিরে রহস্য।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর দেহ ঘিরে রহস্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

চার নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে ঠিক ডান দিকে কলা বিভাগের ইউনিয়ন রুম। তার পাশ দিয়ে পুকুরের ধার ঘেঁষে যে রাস্তা চলে গিয়েছে, সেটাই ঘটনাস্থল। বৃহস্পতিবার রাতে সেই পুকুর থেকেই উদ্ধার করা হয় ইংরেজি বিভাগের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলকে। পরে যাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কেপিসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, ঘটনাস্থল ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। তার ধারেকাছে আপাতত কারও যাওয়ার অনুমতি নেই। পাশে পুকুর সবুজ, পানায় ভরা। ঘটনাস্থলের সামনে একটি ভাঙা মদের বোতলও পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে ঘটনাস্থলের কাছে পড়ে ভাঙা মদের বোতল।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে ঘটনাস্থলের কাছে পড়ে ভাঙা মদের বোতল। —নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ দিনের। ২০২৩ সালে মেন হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর কর্তৃপক্ষ কিছুটা তৎপর হয়েছিলেন। বাড়তি অনেক সিসি ক্যামেরা তখন থেকেই রয়েছে ক্যাম্পাসে। চার নম্বর গেটের সামনেও মোট তিনটি সিসি ক্যামেরা দেখা গেল। কিন্তু একটিরও মুখ পুকুরের দিকে ঘোরানো নেই। অর্থাৎ, ঘটনাস্থল কোনও সিসি ক্যামেরাতেই পুরোপুরি দেখা যাওয়ার কথা নয়। ধরা পড়া সম্ভব নয় ঘটনার মুহূর্ত। যদিও সে দিকে কারা কখন যাতায়াত করেছেন, তার হদিস মিলতে পারে।

ঘিরে রাখা হয়েছে ঘটনাস্থল।

ঘিরে রাখা হয়েছে ঘটনাস্থল। —নিজস্ব চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরের ঠিক উল্টো দিকে কলা বিভাগের বিল্ডিং। সেখানে যে সিসি ক্যামেরাটি রয়েছে, তার মুখ চার নম্বর গেটের দিকে ঘোরানো। এ ছাড়া, ইউনিয়ন রুমের কাছে এবং সিকিউরিটি রুমের কাছে একটি করে ক্যামেরা বসানো রয়েছে। চার নম্বর গেট দিয়ে সোজা যে রাস্তা চলে গিয়েছে, তা দেখা যাবে ওই ক্যামেরায়। কিন্তু পাশের পুকুরটি দেখা যাবে না। তবে পুকুরের রাস্তার দিকে কেউ যাতায়াত করলে তা ক্যামেরায় দেখা যাবে সহজেই। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ২০ নাগাদ ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা পুকুরে কাউকে ভাসতে দেখেন। তার পর তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাতেই যাদবপুর থানায় খবর দেন। খবর দেওয়া হয় ছাত্রীর পরিবারকে। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা ক্লাবের একটি অনুষ্ঠান চলছিল। তবে ঘটনার সময়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছিল না চলছিল, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরের উল্টোদিকে সিসি ক্যামেরা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরের উল্টোদিকে সিসি ক্যামেরা। —নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশই ক্যাম্পাসের ভিতরে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিরোধী। ক্যাম্পাসের পোস্টার থেকেও তার প্রমাণ মিলল। যে পুকুর থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে, ঠিক তার সামনেই একটি পোস্টারে কর্তৃপক্ষ লিখে দিয়েছিলেন, ‘‘এই পুকুরে স্নান করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ’’। এই লেখার উপর একটি কাগজ আলাদা করে সেঁটে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা, ‘পরিকাঠামো শুকিয়ে কাঠ, সিসিটিভি-তে ৬৮ লাখ’। নজরদারি মানেই নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নয়, তা-ও বোঝানো আছে ওই কাগজে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরপাড়ে পোস্টার।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরপাড়ে পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।

রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, এখনও সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। কী করে ওই ছাত্রী পুকুরে পড়লেন, স্পষ্ট নয়। পুলিশ আপাতত অপেক্ষা করছে তাঁর দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য। এ ছাড়া শুক্রবার ক্যাম্পাসে যেতে পারে ফরেন্সিক দল। তারা প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করতে পারে। এখনও পর্যন্ত ছাত্রীর পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Jadavpur University Student Death jadavpur police station Kolkata Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy