Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
South 24 Parganas

কন্টেনমেন্ট জ়োন হলেও মানুষ সচেতন হবেন কি 

পুলিশ জানাচ্ছে, মাস্ক না-পরে বেরোনোয় অনেককে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে লোকজনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

—ফাইল ছবি

—ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৩
Share: Save:

প্রশাসনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে রাজ্যের যে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে ফের লকডাউন শুরু হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৫৪টি কন্টেনমেন্ট জ়োন। ওই এলাকাগুলির মধ্যে মহেশতলা, বজবজ, রাজপুর-সোনারপুর ও বারুইপুর পুরসভার অধীনস্থ বেশ কিছু জায়গা ছাড়াও রয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত ইএম বাইপাস সংলগ্ন কয়েকটি জায়গা। ওই চার পুরসভার কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন তাঁদের এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চললেও হুঁশ ফিরছে না নাগরিকদের একটা বড় অংশের। মাস্ক পরতে অনীহা তো বটেই, অটো বা বাসে দূরত্ব-বিধি না মেনেই যাতায়াত করছেন তাঁরা। দোকান-বাজারে চোখে পড়ছে লাগামছাড়া ভিড়। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে হাজারো প্রচার সত্ত্বেও এই প্রবণতা রোখা যাচ্ছে না।

পুলিশ জানাচ্ছে, মাস্ক না-পরে বেরোনোয় অনেককে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে লোকজনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ দিন সকালে বারুইপুরের জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান নিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাঁদের মুখে মাস্ক নেই, পুলিশের তরফে তাঁদের মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি, পরবর্তীকালে মাস্ক না-পরে বেরোলে তাঁদের জরিমানা করা হবে বলেও সাবধান করা হয়েছে। কিন্তু পুরকর্তারা বলছেন, কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে ওই এলাকাগুলি কড়া নজরদারিতে রাখলেও মানুষ নিজে সচেতন না-হলে কোনও প্রচারই কাজে আসবে না।

সমস্যা যে কত গভীরে, সম্প্রতি তা সামনে এসেছে মহেশতলা পুরসভার একটি ঘটনায়। গত ২৮ জুন ওই পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বৃদ্ধ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে থেকে তাঁর জ্বর ও সর্দি-কাশি ছিল। স্বামীর মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রীরও হাল্কা জ্বর দেখা যায়, সঙ্গে সর্দি-কাশি। আত্মীয়েরা ওই বৃদ্ধার করোনা পরীক্ষা করান। এ দিন সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। আপাতত ওই বৃদ্ধা আমতলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। পুরসভা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা সুকান্ত বেরা বলছেন, ‘‘এখন সমস্যা হল, মৃত বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না, জানা যায়নি। বাধ্য হয়ে আমরা এখন শ্মশানযাত্রী-সহ ওই পরিবারের আত্মীয়দের খোঁজ করছি। তাঁদের সকলের পরীক্ষা করাতে হবে।’’

এ দিন সকাল থেকে রাজপুর-সোনারপুর, মহেশতলা, বজবজ, বারুইপুর পুর এলাকার দোকান-বাজার এবং ই এম বাইপাস সংলগ্ন কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বাজার খোলা ও বন্ধের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রচার চালানো হয়েছে মাইকেও। যাত্রীরা যাতে দূরত্ব-বিধি মেনে যাতায়াত করেন, সেই সম্পর্কেও তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে দিনের শেষে এক পুরকর্তা কার্যত অসহায় গলায় বলছেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট জ়োন কোনগুলি তা জানানো, সেখানে সতর্কতামূলক প্রচার— সবই তো করা হল। ভবিষ্যতেও করা হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা কতটা মানবেন, সেই সংশয় থেকেই যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

South 24 Parganas Containment Zones Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE