Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata

Tram: শহরে ট্রামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে চালকও

বিভিন্ন ডিপোয় এই মুহূর্তে প্রায় ১৫০টি ট্রাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কয়েক বছর পরে কলকাতায় ট্রামচালক খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হবে।

আগামী বছর কলকাতার ট্রাম পা দেবে দেড়শো বছরে।

আগামী বছর কলকাতার ট্রাম পা দেবে দেড়শো বছরে। ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১১
Share: Save:

এক সময়ে সে ছিল কলকাতার গর্ব। আজ ক্রমশ কমছে সেই ট্রামের সংখ্যা। বিভিন্ন ডিপোয় এই মুহূর্তে প্রায় ১৫০টি ট্রাম অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে ট্রামচালকের সংখ্যাও। বর্তমানে চালকের সংখ্যা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে মাত্র ৬৫-তে! যার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার কর্তাদেরই একাংশের আশঙ্কা, কয়েক বছর পরে কলকাতায় ট্রামচালক খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর হবে।

আগামী বছর কলকাতার ট্রাম পা দেবে দেড়শো বছরে। তার আগে বি বা দী বাগ এবং এসপ্লানেডে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর স্টেশন নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে কয়েকটি রুটে ফের ট্রাম পরিষেবা চালু করার কথা রয়েছে। কিন্তু চালক মিলবে কি না, বড় হয়ে উঠেছে সেই প্রশ্নটাই।

ট্রাম কোম্পানি সূত্রের খবর, ৮০-র দশকের শেষে চালক ছিলেন ৯৫০-১০০০ জন। ৯০-এর দশকের শুরুতে, ট্রাম কোম্পানি বাস কিনতে শুরু করে। কিছু চালককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাস চালানোর কাজে বদলি করা হয়। তখন থেকেই কার্যত নতুন চালক নিয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। যানজটের দায় একতরফা ভাবে ঘাড়ে চাপিয়ে ট্রাম পরিষেবাকে ক্রমশ কোণঠাসা করা হলেও পরিবহণের হাল ফেরেনি। ট্রাম কোম্পানি সূত্রের খবর, ট্রামের সর্বাধিক গতিবেগ ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারে বেঁধে দেওয়া আছে। বহু রুটে বাস এবং ছোট গাড়িকে জায়গা দিতে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ শহরে বাসের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ১২ কিলোমিটার।

ট্রামের এক প্রাক্তন চালক আক্ষেপের সুরে বলছেন, ‘‘খুব কম ক্ষেত্রেই ট্রাম অন্য গাড়িতে ধাক্কা মেরেছে। বরং অন্য গাড়ি এসে ট্রামে ধাক্কা মেরেছে, এমন ঘটেছে বেশি। প্রশিক্ষণে ঠিক জায়গায় ট্রাম থামানোর দক্ষতা অর্জনের উপরে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়।’’ এক জন চালককে তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের থিয়োরি ক্লাস করতে হয়। তার পরে রয়েছে টানা ১৫ দিন হাতেকলমে শেখা।

শহর এখন টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড ও শ্যামবাজার-এসপ্লানেড রুটে ট্রাম চলে। পথে নামে টালিগঞ্জ থেকে ১২টি, গড়িয়াহাট থেকে ১০টি এবং শ্যামবাজার থেকে সাকুল্যে ৮টি ট্রাম। এসপ্লানেড থেকে খিদিরপুর রুটে ট্রাম চালানোর লক্ষ্যে সম্প্রতি ওই পথ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও বেলগাছিয়া, বি বা দী বাগ, খিদিরপুর-টালিগঞ্জ, রাজাবাজার, বিধাননগর, চিৎপুর, হাওড়া সেতু-সহ বিভিন্ন রুটে কবে ট্রাম ফিরবে, কেউ জানেন না।

ট্রামচালকদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার মধ্যেই সম্প্রতি সদ্য অবসর নেওয়া চালক এবং কর্মীদের সংবর্ধনা দিয়েছে কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের অন্যতম সংগঠক দেবাশিস ভট্টাচার্য এবং মহাদেব শী বলেন, ‘‘পৃথিবীতে পরিবেশবান্ধব গণপরিবহণ হিসেবে ট্রাম নতুন চেহারায় ফিরে আসছে। কিন্তু কলকাতায় ট্রাম উপেক্ষিত।’’ তবে ট্রামচালকের সংখ্যা কমার কথা সরাসরি মানতে চাননি পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, রুটে চাহিদার তুলনায় চালক পর্যাপ্ত রয়েছে। ভবিষ্যতে চালক তৈরির পথও খোলা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Driver Tram Ride Tram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE