Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Woman beaten

‘মারধরের’ জেরে মৃত্যু প্রৌঢ়ার, পলাতক অভিযুক্ত মা এবং মেয়ে

বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ট্যাংরার দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডের একটি বস্তিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম গীতা মণ্ডল (৫৮)।

গীতা মণ্ডল (৫৮)।

গীতা মণ্ডল (৫৮)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৫৩
Share: Save:

মারধরের জেরে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ট্যাংরার দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডের একটি বস্তিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম গীতা মণ্ডল (৫৮)। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তরফে লক্ষ্মী মণ্ডল ও কমলা মণ্ডল নামে দুই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সম্পর্কে তারা মা-মেয়ে এবং মৃতার দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। অভিযোগ, ওই দুই মহিলা গীতার বুকে আঘাত করে। যার জেরে মাটিতে পড়ে গিয়ে জখম হন তিনি। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে গীতার মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দুই মহিলার খোঁজ চলছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।

দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডের ওই বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন গীতা। অভিযুক্ত লক্ষ্মী ও কমলাও সেখানকার বাসিন্দা। গীতার প্রতিবেশীরা জানান, কলের জল নেওয়া থেকে শুরু করে শৌচাগার ব্যবহার-সহ নানা বিষয়ে প্রায়ই ওই দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ হত। অভিযুক্তদের মধ্যে লক্ষ্মী আগে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করত। সে সব সময়ে বস্তির ভিতরে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করত বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার ট্যাংরার ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তায় লোকজনের জটলা। অভিযুক্ত দুই মহিলার গ্রেফতারি ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। গীতার স্বামী নেপাল মণ্ডল স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কার্যত শয্যাশায়ী। স্ত্রীর মৃত্যুর শোকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নেপাল বলেন, ‘‘ওই দুই মহিলা চাইত, আমার মেয়ে যেন এখানে না আসে। বুধবার তা নিয়েই ওরা অশান্তি শুরু করে। প্রথমে আমার মেয়েকে মারধর করছিল ওরা। স্ত্রী বাধা দেন। তখন স্ত্রীর বুকে ওরা খুব জোরে আঘাত করে। উনি বস্তির সরু গলির মধ্যেই পড়ে যান। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মারা যান।’’

কলকাতা পুলিশের ইস্টার্ন সাবার্বান ডিভিশনের (ইএসডি) এক পদস্থ কর্তা জানান, কমলা ও লক্ষ্মীর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে। গীতার ছেলে রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলের কথায়, ‘‘গত কাল শুধু শুধু অশান্তি শুরু করল ওরা। মায়ের বুকে এত জোরে মেরেছিল যে, মা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। মাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়েও বাঁচাতে পারিনি। আমরা চাই, পুলিশ দোষীদের খুঁজে বার করে উপযুক্ত শাস্তি দিক।’’

এ দিন বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, কমলা ও লক্ষ্মীর ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে। গীতার প্রতিবেশীরা জানান, তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পরেই মা-মেয়ে পালিয়ে যায়। গীতার স্বামী নেপালের অভিযোগ, তাঁদের এক আত্মীয়ার সঙ্গেও কয়েক বছর আগে এমনই ঘটনা ঘটায় ওই মা-মেয়ে। সেই আত্মীয়ার নাম তরলা মণ্ডল। ২০১৯ সালে ওই ঘটনা ঘটে। নেপালের অভিযোগ, ‘‘আমার স্ত্রীর মতো তরলাকেও ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল ওরা। যার ফলে তরলা মারা যায়। তার পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’’ ইএসডি-র এক পুলিশকর্তা অবশ্য দাবি করেন, তরলার বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman beaten Tangra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE