ফাইল চিত্র।
গরমের তীব্রতা বাড়তেই নিচুতলার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজের সময় কমানোর নির্দেশ দিল লালবাজার। সেই অনুযায়ী, আগের মতো আট ঘণ্টার পরিবর্তে ছ’ঘণ্টা কাজ করেই ছুটি পাবেন তাঁরা।
সরাসরি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হয়েছে বলে খবর। ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের বলা হয়েছে এই নির্দেশ কার্যকর করতে। তবে ছ’ঘণ্টা কাজের পরে আদৌ ছুটি মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী নিচুতলার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের অনেকেই। গার্ডের ওসিদের অনেকেরই প্রশ্ন, ‘‘করোনার আগে ২০১৯ সালেও এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দু’ঘণ্টা কম কাজ করার জন্য বাহিনীতে যত সংখ্যক কর্মী দরকার, তা কোথায়?’’
কয়েক দিন আগেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের হাতে ওআরএসের প্যাকেট, জলের বোতল, ছাতা, মাস্ক তুলে দিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার। সেই সময়ে তাঁদের রোদচশমা এবং টুপি পরে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তখন লালবাজারের তরফে এ-ও জানানো হয়, রোদে ঠায় দাঁড়িয়ে কাজ করার প্রয়োজন নেই। মোড়ে মোড়ে থাকা কিয়স্কগুলিতে বসেও রাস্তায় চোখ রাখতে পারবেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা। এর পরেই ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে খবর।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কাজের সময় কমানোর পাশাপাশি ট্র্যাফিক কনস্টেবলদের ক্রসবেল্ট এবং চামড়ার অ্যাঙ্কলেট ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। কারণ পুলিশকর্তাদের মতে, গরমে সেগুলি পরে কাজ করতে গিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। কাজের সময় কমানোর এই নির্দেশের আওতায় আনা হয়েছে ট্র্যাফিক হোমগার্ড এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও। কিন্তু সার্জেন্ট বা অফিসারদের জন্য এমন কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। এ বিষয়ে লালবাজারের মত, সার্জেন্ট ও অফিসারেরা যে হেতু ঘুরে ঘুরে ডিউটি করেন, তাই তাঁদের তেমন সমস্যার মুখে পড়তে হয় না। কিন্তু কনস্টেবলেরা একই জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যে হেতু যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেন, তাই তাঁদের ঝুঁকি বেশি।
দক্ষিণ কলকাতার একটি ট্র্যাফিক গার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ অফিসার যদিও বললেন, ‘‘শহরের রাস্তায় যানশাসনের জন্য বহু ক্ষেত্রেই নিচুতলার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের উপরে নির্ভর করতে হয়। বর্তমানে এমন কর্মীর সংখ্যা যত, তাতে প্রতিদিনের কাজই কোনওমতে সামাল দেওয়া যাচ্ছে। এর পরে তাড়াতাড়ি ছুটি দিতে হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।’’ ইএম বাইপাস লাগোয় একটি ট্র্যাফিক গার্ডে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘দিন-রাতের ডিউটি করতে গিয়েই যেখানে কাজের সময় ১২-১৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়, সেখানে কি আদৌ ছ’ঘণ্টা কাজ করে ছুটি নেওয়া সম্ভব? এই নির্দেশ না শেষ পর্যন্ত শুধু খাতায়কলমেই থেকে যায়!’’ লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা যদিও বললেন, ‘‘নির্দেশ কার্যকর করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের। তা করা হচ্ছে কি না, নির্দিষ্ট সময় অন্তর দেখাও হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy