দীর্ঘ দিন মেরামতি হয়নি মহেশতলা সরকারি আবাসনের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃষ্টি হলেই ছাদ চুুঁইয়ে ঘরে জল পড়ে। তাঁদের দিন কাটে ঘরের বাইরে সিঁড়ির সামনে। মাঝারি বৃষ্টি হলেই আবাসন চত্বরে জল দাঁড়িয়ে যায়। তা সহজে নামতে চায় না।
আবাসনের বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টার উঠে দেওয়ালে শেওলা ধরেছে। কয়েকটি আবাসনের জানলা ও দরজা ভাঙা। কয়েকটির কার্নিশ ভেঙে পড়েছে। ছাদ থেকে বৃষ্টির জল নামার পাইপ অনেক জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। কোথাও সিলিংয়ের চাঙড় খসে লোহা বেরিয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আবাসনটি অনেক দিন ধরে অবহেলার শিকার। আবাসিক কমিটি সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে এখানে দু’হাজার আবাসিকের বাস। ১৯৭৮ থেকে তাঁরা এখানে রয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় কত দিন এখানে থাকতে পারবেন তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন আবাসিকরা।
মহেশতলা সরকারি আবাসনের আবাসিক কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক সিপিএমের বিমান মুখোপাধ্যায় বলেন, “সমস্যা দীর্ঘ দিনের। সম্পাদক পদে থাকার সময় সাধ্যমতো চেষ্টাও করেছিলাম। অসুস্থতার জন্য এখন আর কাজ করতে পারছি না।”
আবাসিকদের অভিযোগ, আবাসন চত্বরে আলো পর্যাপ্ত নয়। ফলে রাতে চলাচলে অসুবিধে হয়। অনেক আবাসনের সিঁড়িতেও আলো নেই। পার্থেনিয়াম গাছে ভরে গিয়েছে চত্বর। জঙ্গল, ঝোপঝাড় দীর্ঘ দিন পরিষ্কার না হওয়ায় সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব লেগেই থাকে। আবাসনের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে বাসিন্দা তন্ময় রায় জানান, জমা জলে মশার উপদ্রবও বাড়ে। বাসিন্দাদের দাবি, জমাদারেরা কাজ করতে চান না ফলে নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
আবাসনটি এলাকায় সারেঙ্গাবাদ গভর্নমেন্ট কোয়ার্টার্স নামে পরিচিত। আবাসিক কমিটি জানাচ্ছে, সরকারিভাবে এর নাম প্রান্তিকা। আবাসিকদের একাংশের দাবি, সমস্যার কথা অনেক বার স্থানীয় বিধায়ককে জানানো হয়েছে। লাভ হয়নি। মহেশতলার বিধায়ক তৃণমূলের কস্তুরী দাস বলেন, “সমস্যা মেটাতে আবাসন দফতর থেকে লোক নিযুক্ত করা আছে। তাঁরা সমস্যাগুলি নজরে রাখেন।”
আবাসন কমিটির বর্তমান সম্পাদক তৃণমূলের সুব্রত সাহা বলেন, “এখানে অনেক আবাসনের ছাদ মেরামতি করার প্রয়োজন রয়েছে। আবাসন দফতরের তরফে সম্প্রতি দশটি ছাদ মেরামতির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।’’ রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “সরকারি আবাসনের দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি সরকারি কর্মচারীদের জন্য। অন্যটি সাধারণের জন্য। সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্মিত ৩৭টি আবাসনের সংস্কার চলছে।
সাধারণের জন্য নির্দিষ্ট আবাসনে দখলদারির সমস্যা রয়েছে। তার সুরাহা করার পরে সংস্কারে হাত দেওয়া হবে।”