ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট ঘিরে বিতর্কে তাঁকে প্রকাশ্যে সর্তক করা হয়েছিল মাস দুয়েক আগে। এ বার রাজ্যসভার তরুণ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিন মাসের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করল সিপিএম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক অধঃপতন ও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে খবর ফাঁস করার। মহম্মদ সেলিম, মদন ঘোষ ও মৃদুল দে-কে নিয়ে গড়া কমিশনকে ২ অগস্টের মধ্যে রাজ্য কমিটিতে ঋতব্রত সম্পর্কে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার পরে।
রাজ্য কমিটির বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানান, ওই সাংসদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ এসেছে। ঋতব্রতকে তাঁরা ‘মূল্যবান কমরেড’ বলে মনে করেন ও তাঁর ত্রুটি সংশোধন সম্ভব বলেও বিশ্বাস করেন। তাই তাঁকে আপাতত সাসপেন্ড করে কমিশনে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে। বৈঠকে ঋতব্রত বলেন, দলই তাঁর অভিভাবক। তবে কমিশন যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে। কমিশন রিপোর্ট দেওয়ার আগেই কেন সাসপেন্ড, এই প্রশ্ন তুলে সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হননি রাজ্য কমিটির ১৩ জন সদস্য।
তদন্তের আগে শাস্তি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রাজ্য কমিটিতে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য পাঠানো হচ্ছে কমিশনে। কিন্তু তাদের কোনও রিপোর্ট পাওয়ার আগেই অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হচ্ছে। এ কেমন বিচার? এই প্রশ্নেই সিপিএমের রাজ্য কমিটিতে সরব হলেন এক ডজন নেতা। শৃঙ্খলাজনিত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য কমিটিতে এমন বিতর্ক সাম্প্রতিক কালে বিরল।
আরও পড়ুন:শিল্প আনুন সব সাহায্য দেব: মমতা
ব্যক্তিগত জীবন এবং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগসাজশ সংক্রান্ত অভিযোগে রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করার কথা আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষ দিনে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঋতব্রতকে তিনি ‘অপত্য স্নেহে’ আড়াল করেন, এমন অভিযোগও যে তাঁকে শুনতে হয়েছে— কৌশলে সেই কথাও রাজ্য কমিটিতে বলে রেখেছেন সূর্যবাবু। আর তার পরেই একের পর এক মুখ খুলেছেন ত়ড়িৎ তোপদার, নেপালদেব ভট্টাচার্য, শমীক লাহিড়ী, মানব মুখোপাধ্যায়, মইনুল হাসান, পলাশ দাস, রূপা বাগচী, রাহুল ঘোষ, গার্গী চট্টোপাধ্যায়, মৃণাল চক্রবর্তী, সায়নদীপ মিত্র ও মধুজা সেন রায়। মুখ না খুলেও সম্মতি জ্ঞাপনে বিরত থেকেছেন কল্লোল মজুমদার। এঁদের কেউ কেউ বলেন, দলের ভিতরের খবর সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করার অভিযোগ এসেছে ঋতব্রতের বিরুদ্ধে। তা হলে রাজ্যসভার জন্য সীতারাম ইয়েচুরির নামে প্রস্তাব পাঠানোর খবর আনন্দবাজারে বেরোনোর জন্য গোটা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে সাসপেন্ড করা উচিত!
বৈঠকের সভাপতি বিমান বসু অবশ্য ঋতব্রতকে বলার সুযোগ দিয়েছিলেন। ঋতব্রত খোলাখুলি বলেন, দলই তাঁকে তৈরি করেছে। দলই তাঁর অভিভাবক। কিন্তু সাংসদ হওয়ার পর থেকে দলের একটি অংশ নানা মঞ্চে তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার ‘কুৎসা’ চালাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, কমিশন দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে নিরপেক্ষ তদন্ত করবে বলে তিনি আশাবাদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy