ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য দ্রুত বিধানসভার অধিবেশন ডাকার দাবিতে ফের সরব হল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। সেই সঙ্গেই তাদের প্রশ্ন, তৃণমূলের ভিতরে একের পর এক ‘বেসুর’ শোনা যাচ্ছে বলেই কি অধিবেশন ডাকতে ভরসা পাচ্ছে না শাসক পক্ষ? সে ক্ষেত্রে অধিবেশন ডেকেই আস্থা ভোট নেওয়ার দাবি জানিয়েছে জোট-শিবির।
বাম ও কংগ্রেসের এমন দাবির প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে বিজেপিকে সাহায্য করার অভিযোগে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। আবার বিজেপির অভিযোগ, আস্থা ভোটের কথা বলে আসলে তৃণমূলকেই সহায়তার রাস্তা খুলে দিতে চাইছে বাম ও কংগ্রেস! আর জোট-শিবিরের বক্তব্য, বিজেপি বা তৃণমূল, কাউকে সহায়তা করার দায়ই তাদের নেই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অতীতে তারা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। এ বার অনাস্থা প্রস্তাবের কথা তারা বলছে না। তারা চায়, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করার লক্ষ্যে বিধানসভার অধিবেশন ডাকার পথে তৃণমূলের শিবিরে আস্থার অভাবই যদি কারণ হয়, তা হলে আস্থা ভোট নিয়ে সংশয় দূর করা হোক।
অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বর্ষশেষের দিনে ফের চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। একই দাবিতে গত তিন মাসে এই নিয়ে তাঁদের চতুর্থ চিঠি হল। মান্নান বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এতগুলো রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন ডেকে পদক্ষেপ করতে পারলে আমাদের রাজ্যে হচ্ছে না কেন? আমরা এত দল বদল দেখছি, বিজেপি এবং তৃণমূলের নানা রকম দাবির কথা শুনছি। তা হলে বিধানসভায় আস্থা ভোট নেওয়া হোক। তখনই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কে কোথায় দাঁড়িয়ে!’’ একই সুরে বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘কৃষি আইনের প্রতিবাদ এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা দরকার। তৃণমূল বাইরে নানা কথা বলছে কিন্তু বিধানসভা ডাকা হচ্ছে না। তৃণমূলের মধ্যে এত বেসুর বেরোচ্ছে বলেই কি সরকার অধিবেশন ডাকতে চাইছে না? নিজেদের বিধায়কদের উপরেই কি শাসক পক্ষের ভরসা নেই? অধিবেশন ডেকেই সহকর্মীদের অবস্থান যাচাই করে নিন!’’
এই বক্তব্যের কথা শুনে তৃণমূলের লোকসভার সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি যে জোট বেঁধেই এগোচ্ছে, এ তো তারই প্রমাণ! আমরা জানি, যে ভোটেও তিন দল এক হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়বে। কিন্তু সরকার যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে, তা দেখাতে নিজেদের গরিষ্ঠতার প্রমাণ নিয়ে ওঁরা বরং রাজ্যপালের কাছে যান!’’ আবার বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘প্রাসঙ্গিক হতে চেয়ে বাম ও কংগ্রেস নানা কথা বলছে। আসলে তারা আস্থা ভোটের কথা বলে তৃণমূলকেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ দিতে চায়। তারা তৃণমূলকেই সাহায্য করতে চাইছে কিন্তু বাংলার মানুষ এই চক্রান্তকে প্রতিহত করবেন।’’
তর্কের খাতিরে, আস্থা ভোট হলে বাম ও কংগ্রেস কী করবে? মান্নান ও সুজনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিরোধী দল হিসেবে সরকারের উপরে আমাদের যে আস্থা নেই, সেটা তো ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত। বিজেপির কথা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy