Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বীরভূমে কাটল তাল, হাল ছাড়ছেন সীতারামও

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ফের অন্য রকম নির্দেশ দিলে তবেই এগোনোর রাস্তা থাকবে।

বাম-কংগ্রেস সমঝোতা নিয়ে গোটা ঘটনাপ্রবাহে ক্ষুব্ধ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।

বাম-কংগ্রেস সমঝোতা নিয়ে গোটা ঘটনাপ্রবাহে ক্ষুব্ধ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৩
Share: Save:

আসন ধরে ধরে জট ছাড়ানোর চেষ্টা চলছিল দু’পক্ষে। কিন্তু ‘সম্মানে’র লড়াই বেধে গেল বীরভূমের প্রার্থী নিয়ে। শেষ পর্যন্ত বাম-কংগ্রেস সমঝোতার প্রক্রিয়ায় ইতি হয়ে যেতে পারে সেই ‘সম্মানে’র প্রশ্নেই। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও গোটা ঘটনাপ্রবাহে ক্ষুব্ধ। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ফের অন্য রকম নির্দেশ দিলে তবেই এগোনোর রাস্তা থাকবে।

বামফ্রন্ট শুক্রবার যে ২৫ আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল, তাতে বীরভূমে নাম ছিল চিকিৎসক রেজাউল করিমের। তাঁর নামের পাশে অবশ্য দলের উল্লেখ ছিল না। মাসদুয়েক আগেই প্রদেশ কংগ্রেসের চিকিৎসক সেলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন রেজাউল। নিজের দলের শাখা সংগঠনের প্রধানের নাম অন্য দলের প্রার্থী তালিকায় দেখে শনিবার রেজাউলকে ওই পদ ও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ক্ষোভ জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও।

বামেদের ২৫ আসনের তালিকা প্রকাশের পরে শুক্রবার বেশি রাতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সোমেনবাবু। সেখানে বীরভূম আসন নিয়ে আলোচনায় সূর্যবাবু বলেন, কংগ্রেস চাইলে রেজাউলকে নিজেদের প্রতীকে দাঁড় করাতে পারে। কিন্তু সোমেনবাবু বলেন, বামেদের তালিকায় থাকা আসনের প্রার্থীকে কংগ্রেস প্রতীক দিতে পারে না। হয় সিপিএম নিজের প্রতীকে রেজাউলকে প্রার্থী করুক। নয়তো বীরভূম কংগ্রেসকে ছেড়ে দিলে তারা অন্য প্রার্থী দেবে। কারণ, কংগ্রেসে থেকেও সিপিএমের কাছে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে রেজাউল ‘অসততা’ করেছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিধান ভবনে শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচন কমিটির বৈঠকেও সোমেনবাবু বীরভূম-বিতর্ক উত্থাপন করে প্রশ্ন তুলেছেন, কংগ্রেসের জন্য সিপিএম প্রার্থী ঠিক করে দিয়ে প্রতীক দিতে বলবে— এ আবার কেমন কথা? বৈঠকের পরেই রেজাউলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সিপিএমের তরফে প্রকাশ্যে কেউ অবশ্য এই বিতর্কে মুখ খোলেননি। তবে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের বীরভূমের নেতা এবং পেশায় চিকিৎসক রামচন্দ্র ডোমের সঙ্গে আলাপের সূত্রে রেজাউলের নাম এসেছিল। কংগ্রেসের কাউকে ভাঙিয়ে আনা কখনওই উদ্দেশ্য ছিল না।’’

সিপিএম প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেও জলপাইগুড়ি আসনের দাবি ছাড়েনি কংগ্রেস। নির্বাচন কমিটির বৈঠকে দলের নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রস্তাব দেন, কর্নাটক, তামিলনাড়ু-সহ কোনও রাজ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস জোট করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রেও এআইসিসি-কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে বেশি রাতের খবর, প্রদেশ কংগ্রেসের ‘বিদ্রোহে’র ইঙ্গিত পেয়ে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক! কংগ্রেস অদূরদর্শিতা দেখাচ্ছে। কাদের কথায় এ সব হচ্ছে, কে জানে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE