Advertisement
E-Paper

প্রকাশ্য মঞ্চে ‘অপদার্থ’ বলে কৃষিমন্ত্রীকে ভর্ৎসনা কেষ্টর!

অনুব্রত কী ভাবে বরদাস্ত করেন অনুন্নয়নের অভিযোগ! অতএব মেজাজ বিগড়ে গেল। রোষ গিয়ে পড়ে এলাকার বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিসের উপরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ২১:৪৫
অনুব্রতর ভর্ৎসনার মুখে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

অনুব্রতর ভর্ৎসনার মুখে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

ফের বেফাঁস অনুব্রত মণ্ডল। প্রকাশ্য মঞ্চে বসে রাজ্যের মন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ বীরভূম জেলা তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সভাপতির। মাসখানেক ধরেই নিজের জেলার ব্লকে ব্লকে ঘুরে কর্মী সম্মেলন করছেন অনুব্রত। শুক্রবার ছিল রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী ক্ষেত্র রামপুরহাটের পালা। সে কর্মসূচিতে বুথস্তরের কর্মীরা অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলতেই মেজাজ হারালেন অনুব্রত। পাশে বসে থাকা আশিসকে ‘অপদার্থ’ বলে ভর্ৎসনা করলেন। এই মন্তব্যের পরে অনুব্রত এবং আশিসের মধ্যে কিছুটা তর্কাতর্কি হতেও দেখা গেল। তবে মাইক্রোফোন অনুব্রতর হাতে থাকায় আশিসের কথা স্পষ্ট শোনা যায়নি। তৃণমূলের জন্য স্বস্তি অন্তত সেটুকুই।

‘উন্নয়ন’ তাঁর খুব প্রিয় শব্দ, ভোটজয়ের ব্রহ্মাস্ত্রও। ভোট দিতে যাওয়ার সময়ে ভোটাররা দেখতে পাবেন যে, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে— এই রকম মন্তব্যও শোনা গিয়েছিল বীরভূমের ‘কেষ্টদা’র (অনুব্রতর ডাকনাম) মুখ থেকে। এ হেন অনুব্রত কী ভাবে বরদাস্ত করেন অনুন্নয়নের অভিযোগ! তাও আবার প্রকাশ্য মঞ্চে বসে! অতএব মেজাজ বিগড়ে গেল ভাল রকমই। রোষ গিয়ে পড়ল এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিসের উপরে।

রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের কর্মীদের নিয়ে এ দিন সম্মেলন করেন অনুব্রত। সেখানে বুথ ধরে ধরে হারজিতের হিসেব নিচ্ছিলেন তিনি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে যে সব বুথে তৃণমূলের হার হয়েছে, সেই সব বুথের সভাপতিদের কাছে অনুব্রত হারের কারণ জানতে চাইছিলেন। এক বুথ সভাপতি জানান, গ্রামে রাস্তা হয়নি, পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি, তাই গ্রামের মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাওয়া যাচ্ছে না। অনুব্রত তখন সেই পঞ্চায়েতের প্রধানের কাছে জবাবদিহি চান। প্রধানকে নাম ধরে সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘‘কী রেজাউল, কী বলছে? গ্রামে রাস্তা হয়নি, কিছু হয়নি। টাকা তো অনেক পেলে পঞ্চায়েত থেকে। কী কাজ করলে?’’ ওই পঞ্চায়েতকে চার বার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অনুব্রত জানান। পঞ্চায়েতটি আকারে বড় বলে অপেক্ষাকৃত বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তার পরেও কেন অনুন্নয়নের অভিযোগ উঠছে? প্রধানকে প্রশ্ন করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি।

আরও পড়ুন: শিখের পাগড়ি খুলেছে পুলিশ, মমতাকে টুইট হরভজনের

এর পরেই ছিল রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস এবং রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আনারুল হোসেনের পালা। প্রধানকে ছেড়েই অনুব্রত মুখে ফেরান আনারুল ও আশিসের দিকে। বলেন, ‘‘আর অপদার্থ আছে আনারুল আর আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ অনুন্নয়নের অভিযোগ উঠছে দেখেও তাঁরা চুপ কেন? প্রশ্ন করেন অনুব্রত। বলেন, ‘‘কথা বলছ না কেন তুমি। যদি জানতাম যে, পঞ্চায়েত টাকা পায়নি, তা হলে আমরা মানতে পারতাম। কিন্তু একবার নয়, চারবার টাকা পেয়েছে।’’

দেখুন সেই ভিডিয়ো:

অনুব্রত এই রকম ভাবে প্রকাশ্যে ধমকাবেন, তা সম্ভবত কৃষিমন্ত্রীর কাছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তাই ঘটনার আকস্মিকতায় শুরুতে কিছুই বলতে পারছিলেন না আশিস। কিন্তু পরে তিনিও মুখ খোলেন। অনুব্রতর দিকে আঙুল তুলে তিনি বেশ ঝাঁঝালো ভঙ্গিতেই কথা বলতে শুরু করেন। অনুব্রতও তাঁর কথার জবাব দিতে থাকেন। মাইক্রোফোন অনুব্রতর হাতে থাকায়, তাঁর কথাগুলো শোনা যাচ্ছিল। আশিসের কথা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। কিন্তু মন্ত্রী এবং শাসক দলের জেলা সভাপতির মধ্যে যে তর্কাতর্কি চলছে, তা বুঝতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কারওরই খুব একটা অসুবিধা হয়নি।

আরও পড়ুন: রাডার বিধ্বংসী ‘রুদ্রম-১’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ডিআরডিও-র

অনুব্রতর এই কর্মী সম্মেলনগুলো বার বারই খবরের শিরোনামে চলে আসছে। কোথাও বুথস্তরের কর্মী অনুব্রতকে মুখের উপর বলেছেন, রাস্তার অবস্থা বাম আমলের চেয়েও খারাপ। কোথাও অনুব্রত বলেছেন, যে বুথে হার হয়েছে, সেখানে উন্নয়নের কাজ বন্ধ করতে। বিতর্কের মুখে পড়ে পরবর্তী কোনও কর্মী সম্মেলনে অনুব্রত আবার বলেছেন, হার হোক, জিত হোক, উন্নয়ন কোথাও বন্ধ হলে চলবে না। কিন্তু রামপুরহাটের ঘটনা ছাপিয়ে গেল আগের সব বিতর্ককে। মনে করছেন জেলা তৃণমূলেরই একাংশ।

Anubrata Mondal Minister Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy