Advertisement
E-Paper

কম্পনের শক্তি ছিল হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার আড়াই গুণ!  

খড়্গপুর আইআইটি-র সিসমোগ্রাফ যন্ত্রে ধরা পড়েছে, কম্পন কলকাতার দিকে আসার পথে একসময় তার মাত্রা দুই-য়ে নেমে গিয়েছিল। কলকাতায় এসে তা কিছুটা বাড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০০

তিন বছর আগে নেপালের দু’টি ভূমিকম্পে নির্গত শক্তির পরিমাণ ছিল ৬টি পরমাণু বোমার শক্তি। আর বুধবার সকাল ১০টা বেজে ১৯ মিনিটে অসমের কোকরাঝাড়ে ৫.৬ মাত্রার (রিখটার স্কেলে) যে ভূমিকম্প কেন্দ্রীভূত হল, তাতে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার আড়াই গুণ শক্তি নির্গত হয়েছে বলে ভূবিজ্ঞানীদের প্রাথমিক হিসেব।

নেপালের ওই ভূমিকম্প মাটির তলায় থাকা বিভিন্ন পাতের খাঁজ (হিঞ্জ) ও চ্যুতি (ফল্ট)-গুলিকে ভয়ঙ্কর ভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই সব সময় অস্থির হয়ে রয়েছে মাটির নীচের পাতগুলি। সে কারণে এ দিন কোকরাঝাড়ের সঙ্গে কেঁপে উঠেছে শিলিগুড়ি, রামপুরহাট, এমনকি কলকাতাও। যদিও কলকাতার অধিকাংশ মানুষই দিনের ভূমিকম্প অনুভব করতে পারেননি। কারণ, শহরে অনুভূত কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল মাত্র তিন। তবে কোকরাঝাড়ে রাধাগোবিন্দ মন্দিরের চূড়া ভেঙেছে। ফাটল ধরেছে বড়োল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের দেওয়ালে।

খড়্গপুর আইআইটি-র সিসমোগ্রাফ যন্ত্রে ধরা পড়েছে, কম্পন কলকাতার দিকে আসার পথে একসময় তার মাত্রা দুই-য়ে নেমে গিয়েছিল। কলকাতায় এসে তা কিছুটা বাড়ে। আইআইটি খড়্গপুরের ভূপদার্থবিদ্যা বিভাগের ভূবিজ্ঞানী শঙ্কর কুমার নাথের ব্যাখ্যা, ‘‘কলকাতার ভূস্তরে পলিমাটির স্তর আছে। তাতেই কম্পনের মাত্রা বাড়ে।’’

বৃহত্তর কলকাতার কোন কোন এলাকা কতটা ভূমিকম্পপ্রবণ, সেই সমীক্ষার কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে খড়্গপুর আইআইটি। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘কলকাতার নীচ দিয়ে যে ইয়োসিন হিঞ্জ গিয়েছে, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৩৪-৩৫টি ফল্ট বা চ্যুতি। এর মধ্যে পিংলা ফল্ট থেকে ২০০৫ সালে মেদিনীপুরে ৩.৪ এবং ৪.২ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। গড়ময়না-খণ্ডঘোষ ফল্ট থেকে গত ২৮ অগস্ট হুগলিতে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।’’ এ দিনের ভূমিকম্প খাঁজ এবং চ্যুতিগুলির অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছেন ভূবিজ্ঞানীরা।

ভূবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, ভারতীয় উপমহাদেশে মাটির তলায় দু’টি প্রধান পাথরের স্তর রয়েছে— ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেট। ভূতাত্ত্বিক কারণে ইন্ডিয়ান প্লেট (পাত)-টি ধীরে ধীরে ঢুকে যাচ্ছে ইউরেশিয়ান প্লেট (পাত)-এর নীচে। নেপালের ওই ভূমিকম্পের ফলে বিহারের নীচের পাতের একটি অংশ নেপালের নীচে চলে যাওয়ায় গাঙ্গেয় উপত্যকা, পূর্ব হিমালয় উপত্যকা এবং অসম উপত্যকা অতিরিক্ত ভূমিকম্পপ্রবণ হয়ে উঠেছে। সেকারণে, উত্তর পূর্বাঞ্চলে ৯.২ মাত্রার ভূমিকম্প পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভূবিজ্ঞানী-গবেষকেরা।

Earthquake Assam Energy Tremor Hirosima Atom Bomb
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy