Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪
Manipur Violence

মমতা-শুভেন্দু বাগ্‌‌যুদ্ধে তপ্ত বিধানসভা, মণিপুর নিয়ে হট্টগোল, বিজেপিকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

মণিপুরের ঘটনায় সোমবার বিধানসভায় নিন্দাপ্রস্তাব এনেছে তৃণমূল সরকার। এই নিয়ে বিধানসভায় প্রথমে সরব হন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Photo of Mamata Banerjee and Subhendu Adhikari

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪৪
Share: Save:

মণিপুর নিয়ে সোমবার উত্তপ্ত হল বাংলার বিধানসভার অধিবেশন। বিতণ্ডায় জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হিংসাদীর্ণ মণিপুরের ঘটনায় সোমবার বিধানসভায় নিন্দাপ্রস্তাব এনেছে তৃণমূল সরকার। এই নিয়ে বিধানসভায় প্রথমে সরব হন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনা সেই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্য রাজ্য নিয়ে আলোচনা করার অধিকার নেই এই রাজ্যের। সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয় এটি। তাই এই বিষয় নিয়ে আলোচনার অধিকার নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই আলোচনা হচ্ছে।’’ শুভেন্দুর পাল্টা মমতা বলেন, ‘‘দেশের জ্বলন্ত ইস্যু।’’ সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রোজ এমন হচ্ছে।’’ প্রত্যুত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাবিশ।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হতেই বিধানসভায় ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। শেষে ধ্বনি ভোটে নিন্দাপ্রস্তাব পাশ হয় বিধানসভায়।

বিধানসভায় মণিপুর নিয়ে তৃণমূলের নিন্দাপ্রস্তাবের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করতে গিয়ে বাংলায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টানেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকে পর পর রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং মৃত্যু হয়েছে।’’ এ কথা শোনা মাত্রই প্রতিবাদ জানান শাসকদলের বিধায়করা। তখন শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনাদের গুন্ডারা খুন করেছে।’’ এই সময়ই বিধানসভায় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী।

শুভেন্দুর উদ্দেশে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনি পড়ে দেখেননি (নিন্দাপ্রস্তাব)। আপনারা যদি মনে করতেন অংশগ্রহণ করতেন না।’’ ওই সময় কাগজ ছিঁড়তে যান শুভেন্দু। তা দেখে স্পিকার বলেন, ‘‘কাগজ ছিঁড়লে হবে না, শুনতে হবে শুভেন্দুবাবু।’’

বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলা এগোচ্ছে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না। বেটি পড়াও বেটি জ্বালাও। বাংলাকে গালাগালি দেয়। একশোর বেশি দল পাঠিয়েছে। এ বার থেকে আমিও টিম পাঠাব। ইঁদুর-বিড়াল কামড়ালেও কমিটি আসছে। ১০০ দিনের কাজ দেবেন না। ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলে সব কেসের বিচার হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘এই বিষয়টি (মণিপুর) আলোচনা হলে গঠনমূলক আলোচনা হবে। দেশ আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ঝগড়াঝাঁটির কথা বলছি না। মণিপুর সংবেদনশীল বিষয়।’’ মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তিনি চিঠি লিখেছিলেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমি লিখেছিলাম কারণ, আমি স্বরাষ্ট্রটা বুঝি। আমি শান্তির কথা বলতে যাচ্ছিলাম। লজ্জা করে না গুলি চালায়।’’ এই সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের অশান্তির ঘটনার প্রসঙ্গ টানেন বিজেপি বিধায়কেরা।

মণিপুরে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘আমি আমার দলের প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছিলাম। তাঁরা মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। মণিপুরকে রক্ষা করতে হবে। এটা আমাদের সাংবিধানিক কর্তব্য। দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসাবে প্রস্তাব এনেছি। বাকি বিরোধীদেরও আনতে বলব। আইন জানে সব হরিদাস পাল!’’ এই সময় বিক্ষোভের পাশাপাশি স্লোগান শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যেতে পারেন, মণিপুরে যেতে পারেন না। শান্তি এবং আলোচনার মধ্যে দিয়ে সব কিছু সম্ভব হয়। প্রধানমন্ত্রী না পারলে আমাদের দায়িত্ব দিন। আমরা শান্তি ফেরাব মণিপুরে।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে সকলকে এক হওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ‘‘প্রথা মেনে আমরা ভোটাভুটি চেয়েছিলাম। কিন্তু স্পিকার আমাদের দাবি না মেনে ধ্বনি ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমরা বেরিয়ে এসেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee subhendu adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE