E-Paper

সন্দেশখালি যাচ্ছেন মমতা, হাতে প্রকল্প

রেশন দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-র উপরে হামলার ঘটনায় বিদায়ী বছরে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:১০
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

অশান্তির প্রায় এক বছর পর সন্দেশখালিতে সরকারি বিলি-বণ্টন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩০ ডিসেন্বর তাঁর ওই কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে। সরকারি একাধিক প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি ১০০ জন প্রাপকের হাতে তিনি তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রেশন দুর্নীতির তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-র উপরে হামলার ঘটনায় বিদায়ী বছরে আলোড়ন তৈরি হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে। গত ৫ জানুয়ারি স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের দলবলের বিরুদ্ধে তদন্তকারী আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। ভোটের বছরে তা নিয়ে উত্তাপ ছড়ায় রাজনীতিতেও। ঠিক সেই সময়েই এলাকার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দাবিও তোলেন। মমতাও জানিয়েছিলেন, ভোটের পরে এলাকায় যাবেন তিনি। সেই প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘নির্বাচনের সময়ে অনেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, দিদি, আপনি গেলেন না? তখন বলেছিলাম, পরে যাব।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘তাতে কার কী এসে গেল! তা ছাড়া,, যখন সেখানকার মানুষের প্রয়োজন ছিল, তখন তিনি যাননি! এখন যাচ্ছেন রাজনীতি করতে।’’

রাজনৈতিক দড়ি টানাটানিতে সাম্প্রতিক অতীতে অন্যতম উল্লেখযোগ্য পর্ব ছিল সন্দেশখালির বিক্ষোভ। স্থানীয় মানুষের একটা বড় অংশ তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বিরুদ্ধে লুট, সন্ত্রাস, জমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে পথে নেমে পড়েন। সেই সঙ্গেই একাধিক জায়গায় নারী নিগ্রহের অভিযোগও ওঠে। স্থানীয় মানুষের সেই বিক্ষোভে পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল ও স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। জেলা, রাজ্য ছাড়িয়ে বিষয়টিকে জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে যান বিজেপির নেতারা। ভোটের আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারাসত-সহ একাধিক সভায় সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল ও প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছিলেন। পরে অবশ্য একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে তৃণমূল দাবি করে, ভোটের আগে টাকা ছড়িয়ে ‘কুৎসা-প্রচার’ চালিয়েছে বিজেপি। সেই সূত্রে রাজ্য জুড়ে শাসক-বিরোধী ভোটের প্রচারে সন্দেশখালি হয়ে অন্যতম উঠেছিল প্রধান বিষয়।

সন্দেশখালির মানুষের সেই বিক্ষোভে প্রাথমিক ভাবে বেকায়দায় পড়ে গিয়েছিল তৃণমূল। পরিস্থিতি সামাল দিতে মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের দফায় দফায় সন্দেশখালিতে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে খুব মসৃণ জয় পেয়েছিল তৃণমূল। শুধু তা-ই নয়, কাছাকাছি এলাকায় হাড়োয়া বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেও বড় জয় পেয়েছে শাসক দল। রাজনৈতিক ভাবে ‘অনুকূল’ সন্দেশখালিতে এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে। নবান্নে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেখানে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, আবাস ইত্যাদি প্রকল্পের প্রায় ২০ হাজার মানুষ সুবিধা পাবেন। তার মধ্যে ১০০ জনের হাতে তিনিই তা সরাসরি তুলে দেবেন। তার আগে ২ জানুয়ারি নবান্ন সভাঘরে রয়েছে রাজ্য স্তরের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক।

তবে বিজেপির শমীকের বক্তব্য, ‘‘তার মানে পরিষেবা স্বাভাবিক ভাবে মানুষ পাচ্ছেন না। বিডিও, এসডিও-রা পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রীকে একটা প্রান্তিক এলাকায়, ব্লকে যেতে হচ্ছে!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee sandeshkhali

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy