সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনা হয়েছে। তার পরেও হুঁশ নেই। সুরক্ষাকবচ ছাড়াই সেপটিক ট্যাঙ্ক সাফাই করতে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থানার ভেকুটিয়া গ্রামে। মৃতদের নাম মানস গিরি এবং মৃত্যুঞ্জয় জানা। এ ছাড়া ওই বাড়ির মালিক কানাই জানাও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তিনি নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কানাইয়ের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে দুই শ্রমিক গিয়েছিলেন রবিবার। সাফাইয়ের কাজে হাত লাগিয়েছিলেন বাড়ির মালিকও। কিন্তু ট্যাঙ্কের ভিতরে কাজ করার সময় হঠাৎ বিষাক্ত ঝাঁঝালো গ্যাসে চার জন সংজ্ঞা হারান। প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা মানস এবং মৃত্যুঞ্জয় নামে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কানাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বৌমাও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
কানাইয়ের প্রতিবেশী সৌমেনকান্তি দাস বলেন, “হঠাৎ কানাইয়ের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে গিয়েছিলাম। ওদের বাড়ি গিয়ে দেখি সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে চার জন পড়ে রয়েছে। জ্ঞান নেই। তড়িঘড়ি ওদের উদ্ধার করে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু দু’জনকে মৃত বলে জানান ডাক্তার। কানাইও অসুস্থ। এমন ঘটনায় আমরা সকলে খুব চিন্তিত।’’ প্রতিমা দাস নামে আর এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘কানাইয়ের স্ত্রীর চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি, দু’জনে চেম্বারে প্রায় ডুবে গিয়েছে। কানাই এবং তাঁর বৌমা তখনও ছটফট করছিল। আমি বাড়ি থেকে দড়ি নিয়ে আসি। তার পর সকলে মিলে ওদের উদ্ধার করেছি।’’
বস্তুত, কয়েক দিন আগে কলকাতার উপকণ্ঠে বানতলায় ম্যানহোলে নেমে পরিষ্কার করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় আলিমুদ্দিন শেখ নামে ঠিকাদারকে। তিনিই তিন শ্রমিককে জেলা থেকে কাজের জন্য কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন এবং ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজে নামিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল প্রশাসনের অন্দরে। কিন্তু ন্যূনতম সুরক্ষা ছাড়া ম্যানহোল বা সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে সাফাই অভিযান এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যু জারি রয়েছে।