Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বন্যায় তছনছ ৬০ হাজার চারা

ফি বছরই বর্ষায় জলমগ্ন হয় ঘাটাল। তবে এ বার বাঁধ ভে‌ঙে মহকুমার প্রায় সত্তর ভাগ অংশই জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সড়ক, চাষ জমি, বাসত বাড়ি— সবই ছিল কয়েক ফুট জলের নীচে।

মৃত: নার্সারিতেই নষ্ট হয়েছে একের পর এক চারা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

মৃত: নার্সারিতেই নষ্ট হয়েছে একের পর এক চারা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:০২
Share: Save:

বাঁধ ভাঙা জলের স্রোতে ক্ষতির বহর যে কতটা প্রসারিত, তা বন্যার পরেও টের পাচ্ছে ঘাটাল। প্রাণহানি, ঘরবাড়ি ভাঙার পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রের একটা বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বন দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০-৭০ হাজার গাছের চারা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত আরও হাজার কুড়ি।

ফি বছরই বর্ষায় জলমগ্ন হয় ঘাটাল। তবে এ বার বাঁধ ভে‌ঙে মহকুমার প্রায় সত্তর ভাগ অংশই জলের তলায় চলে গিয়েছিল। সড়ক, চাষ জমি, বাসত বাড়ি— সবই ছিল কয়েক ফুট জলের নীচে।

সবুজশ্রী প্রকল্প বা জুলাই মাসে পালিত বনমহোৎসবের সদ্য লাগানো গাছের চারা চলে গিয়েছে জলের তলায়। তার উপর সবুজায়নের লক্ষ্যে জাপান ও ভারত সরকারের যৌথ উদ্যোগ ‘জাইকা’ প্রকল্পে কাজ চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে চলছে রাস্তার ধারে ধারে গাছ লাগানোর কাজ। মাস কয়েক আগেই ঘাটাল মহকুমায় ৩০ হেক্টর জমিতে ওই প্রকল্পে গাছ লাগানোও হয়েছিল। বাঁধভাঙা জলে এই সমস্ত গাছের চারাও নষ্ট হয়ে যাওয়ার উদ্বিগ্ন বন দফতর।

এই অবস্থায় পরিবেশ বাঁচাতে জরুরি সবুজায়নের লক্ষ্যে বন দফতর ঘাটাল মহকুমা জুড়ে লক্ষাধিক গাছ লাগানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তবে দফতরের ডিএফও (খড়্গপুর) অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘাটালে এখনও নতুন করে গাছের চারা লাগানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পুজোর পরই চারা লাগানো শুরু করব।” অরূপবাবু জানান, পুরনো গাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণের চেষ্টাও তাঁরা করছেন। সেই সঙ্গে এ বার মাটি উঁচু করেই গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

বন দফতর সূত্রের খবর, ‘জাইকা’ প্রকল্পে ৫৪ হাজার গাছের চারা লাগানো হয়েছিল ঘাটালে। এ ছাড়াও সবুজশ্রী প্রকল্পে সাড়ে চার হাজার এবং বনমহোৎসবে উপলক্ষে ২২ হাজার গাছের চারা ঘাটাল মহকুমা জুড়ে লাগানো হয়েছিল। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগেও লাগানো হয়েছিল হাজার হাজার গাছ। পুরসভা ও অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও নানা প্রকল্পে এখন গাছের চারা লাগিয়ে থাকে। মূলত মেহগনি, অর্জুন, নিম, গামার, কদম, আকাশমণি, আমলকি ও নানা রকমের ফুল ও ফলের চারাও লাগানো হয়েছিল বলে খবর।

লম্বায় এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতার চারা গাছগুলি জলের তলায় থাকায় প্রায় আশি শতাংশ গাছই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার উপর রয়েছে বন্যা পরবর্তী ছত্রাকের আক্রমণ। জল সরতেই বন দফতর পরিদর্শনের কাজও শুরু করেছে। ঘাটালের এক পরিবেশ কর্মী প্রবীর মাইতি বলেন, “বন্যার জলে আমার সংস্থার প্রায় ১০ হাজার গাছের চারা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মহকুমা জুড়ে নানা রকমের ফুল-ফলের গাছও নষ্ট হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

saplings ঘাটাল Ghatal flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE