E-Paper

জমি কেলেঙ্কারি! তদন্ত চেয়ে চিঠি মমতাকে

কেমন সেই প্রক্রিয়া? চিঠিতে রয়েছে, ‘সরকারি জমি যখন কোনও মানুষকে পাট্টা হিসেবে দেওয়া হয়, তখন সেখানে মূল কথাটি লেখা থাকে, এই জমি হস্তান্তরযোগ্য নয়।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০০
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সরকারি জমি পাট্টা হিসেবে দেওয়া হয়েছে গরিব মানুষকে। পরবর্তীকালে সে জমিই রায়ত হয়ে গিয়েছে! অন্যের নামে রেকর্ডও হয়ে গিয়েছে! পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলেই অভিযোগ। তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন শালবনির বাসিন্দা সন্দীপ সিংহ। তিনি যুব তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। এক সময়ে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন? কী আবেদন রেখেছেন?

সন্দীপ মানছেন, ‘‘একটা চিঠি পাঠিয়েছি। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে। দুর্নীতি হচ্ছে। স্বপক্ষে কিছু উদাহরণ দিয়েছি। খতিয়ে দেখে যাতে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আবেদনই জানিয়েছি।’’ সূত্রের খবর, ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘সরকারি জমি দখলের একটি বড় চক্র চলছে। একাংশ ভূমি আধিকারিকের সরাসরি মদতেই এই দুর্নীতি বিপুল আকার ধারণ করেছে। জমি মাফিয়ারা সরকারি জমি দখলের নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেছে’।

কেমন সেই প্রক্রিয়া? চিঠিতে রয়েছে, ‘সরকারি জমি যখন কোনও মানুষকে পাট্টা হিসেবে দেওয়া হয়, তখন সেখানে মূল কথাটি লেখা থাকে, এই জমি হস্তান্তরযোগ্য নয়। জমির পাট্টামূল্যে ‘দং’ বলে উল্লেখ থাকে। পোর্টালে এই উল্লেখের জায়গাতে পরিবর্তন ঘটিয়েই দুর্নীতিটা করা হচ্ছে। পাট্টামূল্যে ‘দং’ লেখাটির জায়গায় ‘নীল’ (এনআইএল) লেখা হচ্ছে। পাট্টা জমি অন্য ব্যক্তির নামে রায়ত হচ্ছে। রেকর্ডও হচ্ছে। শালবনির বাঁকিবাঁধে এ ভাবে প্রচুর সরকারি জমি বেহাত করা হয়েছে বহু টাকার বিনিময়ে’।

সরকারি জমি বেহাত হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে নতুন নয়। অভিযোগ, শালবনির কাছে জাতীয় সড়কের দু’ধারের অনেক সরকারি জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। তদন্তে নেমেছিল সিআইডি। শালবনি থানায় স্বত:প্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল তারা। জালিয়াতি, প্রতারণা, ষড়যন্ত্র সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল। এক সময়ে ঘন ঘন শালবনি এবং জেলা সদর মেদিনীপুরে এসেছেন তদন্তকারীরা। বিরোধীদের নালিশ, পরে তদন্তের গতি কমে যায়।

সূত্রের খবর, কোথায়, কত সরকারি জমি পড়ে রয়েছে, ল্যান্ডব্যাঙ্ক তৈরির জন্য তা দেখতে গিয়ে এক সময়ে সরকারি নথি অনুযায়ী দেখা গিয়েছিল, শালবনিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে অনেক সরকারি জমি রয়েছে। পরে জানা যায়, ওই জমি বেহাত হয়ে গিয়েছে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘একাংশ ভূমি আধিকারিক জমি সংক্রান্ত অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। এঁদের চিহ্ণিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’’ জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘ওখানে (ভূমি দফতরে) ঘুঘুর বাসা রয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে দেখা যাবে, জমির কারবারিদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকেরা যুক্ত।’’

মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন সন্দীপ। চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুমনসৌরভ মহান্তির দফতরেও।

অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Patta midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy