টাকা তোলার অভিযোগ নিলাদ্রীর সহযোগীরা। প্রতীকী চিত্র।
চাকরি সংক্রান্ত দুর্নীতির একটি মামলায় চার বছর আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন নীলাদ্রি দাস এবং তাঁর সহযোগী অনয় সাহা পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানায় সিআইডির এক পদস্থ আধিকারিকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে সেই মামলা এখনও তমলুকে জেলা আদালতের ‘স্পেশাল কোর্টে’ বিচারাধীন। পরে সিআইডি ওই চাকরি-চক্রে জড়িত অভিযোগে ২০১৯ সালের মার্চে নীলাদ্রি ও তাঁর সহযোগী অনয়কে গ্রেফতারও করে।
জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল হাই কোর্টে জামিন পান নীলাদ্রি। বাকি অভিযুক্তরাও সকলেই শর্ত সাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন। নীলাদ্রির সহযোগী অনয়ের আদত বাড়ি তমলুক শহরের বাড়পদুমবসানে। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর দশেক আগে থেকেই কলকাতায় থাকতে শুরু করেছিলেন অনয়। ক্রিকেট খেলার সঙ্গে যুক্ত থাকায় কলকাতায় ময়দানে যাতায়াত ছিল তাঁর। তবে মাঝেমধ্যেই তমলুকে নিজের বাড়িতে আসতেন দামি গাড়ি হাঁকিয়ে। ঘনিষ্ঠদের নাকি বলতেন, শিক্ষা দফতর-সহ বিভিন্ন দফতরের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ‘হাত’ রয়েছে তাঁর। তবে বাড়ির কাছাকাছি কাউকে চাকরি দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসেনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, নীলাদ্রি র সহযোগী হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তিনজন ‘এজেন্ট’ কাজ করেছিল। ২০২৯ সালে ওই তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁরা জামিন পান। ওই এজেন্টদের মধ্যে ছিলেন পটাশপুরের বাসিন্দা সুকুমার দিন্ডা ও জয়ন্তকুমার ঘোড়ই। পটাশপুরের খতিবাড় গ্রামের বাসিন্দা জয়ন্ত ভূপতিনগর থানার ইটাবেড়িয়ায় সেনাবাহিনীতে চাকরির জন্য ট্রেনিং স্কুল চালাতেন। টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি পাইয়ে দিতেন বলেও দাবি। জয়ন্তের সঙ্গে গড়বেতা, নয়াগ্রাম, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলার এজেন্টদের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে সিআইডির দাবি। বছর পাঁচেক আগে জয়ন্তের বাড়িতে চাকরি প্রার্থীরা চড়াও হয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি চাষবাস ও ভেড়ির ব্যবসা করেন।
পটাশপুরের সরিদাসপুরের বাসিন্দা সুকুমার দিন্দাও সেনাবাহিনী-সহ বিভিন্ন দফতরের চাকরি করে দেওয়ার নামে টাকা তুলতেন বলে অভিযোগ। সুকুমারও এখন চাষবাস করছেন। ওই একই মামলায় অভিযুক্ত অমিয় পালের বাড়ি আবার নন্দীগ্রামের হরিপুরে। সেনাবাহিনীর চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলেন অমিয়। অভিযোগ, সেনাবাহিনী ছাড়াও পুলিশ, খাদ্য, বিদ্যুৎ দফতর, পুরসভা এবং প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা আদায় করা হত। তবে সুকুমার ও জয়ন্ত কারও সঙ্গেই চেষ্টা করেও এ দিন কথা বলা যায়নি।
সিআইডি তখন জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে ওইচক্রে জড়িত অভিযোগে হাওড়ার বাসিন্দা দুই এজেন্ট গৌরাঙ্গসুন্দর মান্না ও সব্যসাচী মাইতিকে গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের কাছ থেকে একাধিক চাকরিপ্রার্থীর অ্যাডমিটকার্ড ও মার্কশিট উদ্ধার হয়েছিল। দু’জনের মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করেছিল সিআইডি। ধৃতদের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই সিআইডি নীলাদ্রিকে গ্রেফতার করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy