Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Audit

‘ঝুঁকি’র পঞ্চায়েত দিয়েই শুরু অডিট

কোন পঞ্চায়েতগুলিতে ‘অডিট’ হবে? সূত্রের খবর, দফতরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় যে সব পঞ্চায়েতে ‘অডিট’ করানো ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’, সেই সব পঞ্চায়েত দিয়েই অডিট শুরু হয়েছে।

ফাইল।

ফাইল।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:১২
Share: Save:

গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোয় নিয়মিত অডিট হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। কারও দু’বছরের অডিট বকেয়া ছিল। কারও তিন বছরের। অভিযোগ, নজরদারির ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ায় কিছু পঞ্চায়েতে নাকি বিস্তর আর্থিক গোলমাল শুরু হয়েছে। দানা বেঁধেছে অস্বচ্ছতা। তাই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোয় অডিট শুরু হয়েছে।

কোন পঞ্চায়েতগুলিতে ‘অডিট’ হবে? সূত্রের খবর, দফতরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় যে সব পঞ্চায়েতে ‘অডিট’ করানো ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’, সেই সব পঞ্চায়েত দিয়েই অডিট শুরু হয়েছে। অডিটের জন্য দলও এসেছে। দলটি মেদিনীপুরে রয়েছে। জেলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত সাঁতরা মানছেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোয় অডিট শুরু হয়েছে। একে একে সব গ্রাম পঞ্চায়েতেই অডিট হবে।’’ প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, জেলা পরিষদে নিয়মিত ‘অডিট’ হয়। পঞ্চায়েত সমিতিতে নিয়মিত অডিট হয়। কিন্তু অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতে নিয়মিত ‘অডিট’ হয় না বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সূত্রের দাবি, শুধু অডিট নয়, দুর্নীতি ঠেকাতে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপও করেছে দফতর।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রত্যাশিত ফল না হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছিল শাসক দলের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায়। পরে ‘কাটমানি’ ফেরানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ ঘিরে গ্রামে গ্রামে শোরগোল পড়ে। কাটমানি ফেরত চেয়ে সরব হয় বিরোধীরা। প্রশাসনের এক সূত্র মানছে, চুরি ধরার চিরকালের উপায় হিসেব পরীক্ষা। সেই পরীক্ষাই যদি না হয় তাহলে তো সমস্যা দেখা দেবেই। বছরে দু’বার গ্রামবাসীদের নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের সভা করার কথা প্রতি সংসদে। সেখানে আইন অনুযায়ী আয়- ব্যয়ের সব হিসেব এবং অডিট রিপোর্ট পেশ করতে হয়। প্রশাসনের ওই সূত্র মানছে, প্রশাসনিক জনসভা বলে যদি কিছু থাকে তবে তা গ্রাম সংসদের সভাই। সংবিধান যাকে মান্যতা দিয়েছে। অবশ্য অনেক সংসদে নিয়মিত সভা হয় না বলে অভিযোগ।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ এখন বিরোধীশূন্য। বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির আদলে জেলা পরিষদে জেলা কাউন্সিল তৈরি হয়। যে কাউন্সিলের শীর্ষে থাকেন জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা। তাঁর গ্রাম পঞ্চায়েতে পরিদর্শনে যাওয়ার অধিকার থাকে। পরিদর্শনের জন্য জেলা পরিষদ থেকে গাড়িও পান। বিরোধী সদস্য নেই। তাই বিরোধী দলনেতাও নেই। ফলে, এই নজরদারির ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে।

সূত্রের খবর, দফতরের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় জেলার ৫টি পঞ্চায়েতে অডিট করানো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল (হাইরিক্স), সেগুলো দিয়েই অডিট শুরু হয়েছে। ওই পঞ্চায়েতগুলো হল গড়বেতা- ২ এর সারবোত, পিয়াশালা, গড়বেতা- ৩ এর কড়সা, চন্দ্রকোনা- ২ এর বসনছোড়া, বান্দিপুর।

প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, অডিট রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই পঞ্চায়েতগুলো ‘পারফরম্যান্স গ্র্যান্ট’ পায়। অডিট ঘিরে কোনও গোলমালের খবর রয়েছে না কি? জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই অডিট হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Audit Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE