চুনিলাল সিংহ। নিজস্ব চিত্র
চোখের দৃষ্টি নিভেছে চূনিলাল সিংহের। জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেও মেলেনি সাহায্য। অভিযোগ, নজর দেয়নি স্থানীয় প্রশাসনও।
জঙ্গলমহলের যুবক বছর তেত্রিশের চুনিলাল সিংহের বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের খড়িকামাথানি অঞ্চলের গোয়ালডিহা গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তিনি জন্ম থেকেই দু’চোখে কম দেখতেন। চোখের সমস্যার জন্য খড়িকামাথানি হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণির পরে আর পড়া হয়নি। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের আউটডোরের প্রেসক্রিপশনের বয়ান অনুযায়ী, তিনি এখন ১০০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তিক্ষীণতায় ভুগছেন। এখন ডান চোখে তিনি কিছুই দেখতে পান না। বাঁ চোখে কেবল আবছা আলোর নড়াচড়াটুকু বুঝতে পারেন।
চোখের চিকিৎসা ও দিনের খরচ চালানোর জন্য গত বছর নভেম্বরে জেলাশাসকের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন চুনিলাল। চলতি বছরের ৮ মে নয়াগ্রামের বিডিওকে এই বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেন জেলাশাসক। সেই সংক্রান্ত চিঠির প্রতিলিপি চুনিলালের কাছেও পাঠানো হয়। চুনিলালের অভিযোগ, ব্লক প্রশাসন থেকে তাঁর বিষয়ে কোনও অনুসন্ধান করা হয়নি। নয়াগ্রামের বিডিও সৌরেন্দ্রনাথ পতি অবশ্য বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্য বিলম্ব হয়েছিল। তদন্ত রিপোর্ট জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
চুনিলালের বাবা নিমাইচন্দ্র সিংহ ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক। তিনি মারা গিয়েছেন। চুনিলালেরা পাঁচ ভাই ও দুই বোন। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে চুনিলাল সেজ। চুনিলালের কথায়, ‘‘দাদা ও ভাইদের রোজগার তেমন নয়। ওরা আমাকে দেখবে কী করে!’’ তাঁর মা সন্ধ্যারানি স্বামীর পেনশন পান। তিনি প্রতি মাসে সেজ ছেলেকে ৫০০ টাকা করে দেন। ওই টাকা ও রেশনের চালেই কোনওক্রমে দিন কাটছে তাঁর।
দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচন থাকায় তদন্ত করা সম্ভব হয়নি। এ বার দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy