Advertisement
E-Paper

মুশকিল আসান একদল তরুণ

কেউ বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার, কেউ ওষুধপত্র, কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডার।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২১ ০৫:৫৩
পাশে: বাড়ি বাড়ি খাবার দিয়ে আসছেন তরুণেরা। নিজস্ব চিত্র।

পাশে: বাড়ি বাড়ি খাবার দিয়ে আসছেন তরুণেরা। নিজস্ব চিত্র।

এই করোনা- কালে দিনে- রাতে ছুটে চলেছেন একদল তরুণ। জীবন বাজি রেখে। করোনা সংক্রমিতদের পাশে থাকতে। কেউ বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার, কেউ ওষুধপত্র, কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডার। শুধু একটা মেসেজ কিংবা ফোন- কল। তাহলেই মিলছে সুরাহা। জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলছিলেন, ‘‘এই সময়ে যে ভাবে একদল তরুণ করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবা কাজ করে চলেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’

করোনা সংক্রমিতদের বাড়ি বাড়ি বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ‘মানবিক সংস্থান’ নামে মেদিনীপুরের এক সংস্থা। এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত একদল তরুণ। কেউ স্কুলশিক্ষক, কেউ চিকিৎসক, কেউ বেসরকারি সংস্থার চাকুরে। স্কুলশিক্ষক সন্দীপ সরকার বলছিলেন, ‘‘আগেও আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজ করেছি। পথশিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই করোনা সংক্রমিতদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সমাজমাধ্যমে আমরা ফোন নম্বর দিয়েছি। যাঁদের খাবার প্রয়োজন, তাঁরা আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠাচ্ছেন। আমরা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। বাড়ির সামনে গিয়ে ফোন করছি। ওঁরা বেরিয়ে এসে নিয়ে যাচ্ছেন।’’ চিকিৎসক শুভজিৎ চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘‘নিজেরা কিছু চাঁদা তুলে একটা তহবিল তৈরি করেছি। সহৃদয় কিছু মানুষকে পাশে পেয়েছি।’’ সংস্থার সম্পাদক, স্কুলশিক্ষক অনুপম রায় বলছিলেন, ‘‘আমাদের কাজকর্ম দেখে অনেকে আমাদের সঙ্গে আসতে চাইছেন। তাঁদের আমরা আসার কথা বলেছি। এলে আমাদের সুবিধা হয়। আরও তাড়াতাড়ি খাবার ডেলিভারি করতে পারা যাবে।’’

রাত জাগছেন ‘মেদিনীপুরের তরুণ কবিরা’- ও। স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। করোনা সংক্রমিতদের বাড়িতে পৌঁছচ্ছেন ওষুধপত্র, অক্সিজেন সিলিন্ডারও। অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন তরুণ কবি অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘দিন কয়েক আগের ঘটনা। একজন রোগীর প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ কিছুতেই মেদিনীপুরে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিল, ঘাটালে ওষুধটি পাওয়া যাবে। মেদিনীপুর থেকে ঘাটাল প্রায় ৬০ কিলোমিটার। তখন রাত। আমাদের দু’জন সহৃদয় পরিচিত বাইকে চলে গেলেন ঘাটালে। যথাসময়ে ওষুধ এল মেদিনীপুরে এবং পৌঁছে গেল রোগীর বাড়িতে।’’ নিসর্গনির্যাস মাহাতো বলছিলেন, ‘‘আমরা একটি কোভিড- ডেটাবেস করার চেষ্টা করেছি। মেডিসিন, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্স, হোম ডেলিভারি প্রভৃতি পরিষেবার ফোন নম্বরের। সেটা সমাজমাধ্যমেও দিয়েছি।’’ সমাজমাধ্যমে সমাজকর্মী ফাকরুদ্দিন মল্লিকের ঘোষণা, ‘যদি কোনও রকম সাহায্য লাগে যোগাযোগ করবেন। সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’ করোনা সংক্রমিতদের বাড়িতে ওষুধপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন ফাকরুদ্দিন।

এক করোনা সংক্রমিত বলছিলেন, ‘‘অক্সিজেন জোগাড় করতে পারছিলাম না। ওঁদের ফোন করে সুরাহা হয়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানুষকে ভরসা জোগাতে ওঁরা যে ভাবে পথে নেমে পড়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’’

COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy