তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের বিধায়ক কার্যালয়-সহ ৫৬টি নির্মাণকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে সেগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। অভিযোগ, সরকারি জমি দখল করে ওই বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় কাঁথির মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্যকে জমি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। যদিও উত্তমের মন্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু জানি না। নির্দেশও পাইনি।’’
কাঁথির কুমারপুর মৌজায় মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে ৯৬ নম্বর এবং ৪৭, ৭৯ নম্বর দাগের সম্পত্তি ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত। কালেক্টরেটের অধীনে থাকা ওই সম্পত্তিতে বেশ কয়েকটি অস্হায়ী দোকান, তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়, লজ নির্মাণ করা হয়। ওই কার্যালয়ে নিয়মিত জনসংযোগ সারেন পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। জমি দখল মুক্ত করতে গত বছর হাই কোর্টে ছ’টি মামলা হয়েছিল।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে ওই জমিতে যাঁরা নির্মাণ করেছিলেন তাঁদের চলতি মাসে শুনানির জন্য ডাকা হয় জেলাশাসকের দফতরে। প্রশাসন সূত্রের খবর, তিন জন দখলকারী শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন। ৫৩ জন উপস্থিত ছিলেন। নির্মাণের প্রেক্ষিতে তাঁরা কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বলে খবর। তবে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক ল্যান্ড (এভিকশন অফ আন অথরাইজড অকুপ্যান্টস) অ্যাক্ট, ১৯৬২’-র ৪(১) নম্বর ধারা অনুযায়ী নির্মাণগুলি ‘বেআইনি দখল’ বলে ঘোষণা করা হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি জমি দখল মুক্তের নির্দেশ দেন জেলাশাসক।
প্রসঙ্গত, গত জুনে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর রাজ্য জুড়ে হকার উচ্ছেদ অভিযানে নামে পুরসভাগুলি। তবে সরাসরি শাসকদলের বিধায়কের কার্যালয় ভেঙে ফেলার নির্দেশ নজিরবিহীন বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা (কাঁথি) সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেক আগেই এগুলি ভেঙে ফেলা উচিত ছিল। প্রশাসন সবকিছু জেনেও চুপ করে ছিল। এখন হাই কোর্টের চাপে বাধ্য হচ্ছে ভাঙার নির্দেশ দিচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)