সমুদ্রে মাছ ধরার উপর এ রাজ্যে ১৫ এপ্রিল থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। সেই সময়সীমা শুরু হওয়ার পরেও কিন্তু বুধবার অনেক জায়গায় ভুটভুটি কিংবা ট্রলারে কিছু মানুষ সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার কোথাও মাছের বাজারে মিলেছে সামুদ্রিক মাছ। মৎস্য দফতরের নজরদারি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।মাছ ধরা বন্ধ থাকার সময় মৎস্যজীবীদের ভাতা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার চালু করেছে 'সমুদ্র সাথী' প্রকল্প। পরপর দুই মাস মৎস্যজীবী-পিছু পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু আবেদন জানানোর পরেও সেই সরকারি অনুদান কবে মিলবে, তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বহু মৎস্যজীবী। প্রসঙ্গত, মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। সামুদ্রিক মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য মাছ ধরার উপরে ৬১ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার।
রামনগরের দাদন পাত্র বাড়ের মৎস্যজীবী শ্রীকান্ত দাসের কথায়," শৌলা এবং জলধা থেকে কেউ কেউ সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছে বলে জানি। দিঘায় মাছের আড়ত খোলা রয়েছে। এ ব্যাপারে মৎস্য দফতরে নালিশ জানিয়েছি। কিন্তু তারা শুনছেই না। উল্টে বলছে, বাজার খোলা থাকতেই পারে!"
দিঘা ফিশারমেন এন্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাসের কথায়,"বাণিজ্যিক ভাবে হাওড়া, শিয়ালদা, পাতিপুকুরে বাজার খোলা রয়েছে। দিঘায় মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত থেকে কিছু কিছু মাছ আসে। তাই কয়েক জন আড়ত খোলা রেখেছেন।" সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্ত কুমার প্রধানকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের জবাব দেননি।পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল বলছেন," আমরা চাই, ১২০ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হোক।" তবে একে কেন্দ্র করে কেন্দ্র এবং রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তথা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারী বলছেন,"মৎস্যজীবীদের সমুদ্রসাথী প্রকল্পের টাকা নিয়ে ভাঁওতা দিচ্ছে রাজ্য।" আবার তৃণমূল প্রভাবিত কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান আমিন সোহেলের দাবি,"রাজ্য সরকার নিশ্চিত ভাবে সমুদ্রসাথী প্রকল্পের আবেদনকারীদের আর্থিক সহায়তা দেবে। নির্বাচন বিধির জন্য এটা সম্ভব হচ্ছে না।"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)