Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Panskura

সৌরবিদ্যুতের স্কুলেও বিলের অঙ্ক ৪৭ হাজার

মাস ছ’য়েক আগে ফেব্রুয়ারিতে পাঁশকুড়ার উসৎপুর সৌদামিনী বিদ্যামন্দিরে সৌর প্যানেল বসানো হয়। সেই বিদ্যুতেই চলছিল স্কুলের সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

বিদ্যুতের খরচ কমাতে স্কুলে বসানো হয়েছে সৌর প্যানেল। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই প্যানেল থেকে উৎপন্ন সৌরবিদ্যুৎ থেকেই মেটে স্কুলের বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু এর পরেও স্কুলে অস্বাভাবিক বিদ্যুতের বিল আসছে বলে অভিযোগ করেছেন পাঁশকুড়ার দু’টি স্কুলের কর্তৃপক্ষ।

মাস ছ’য়েক আগে ফেব্রুয়ারিতে পাঁশকুড়ার উসৎপুর সৌদামিনী বিদ্যামন্দিরে সৌর প্যানেল বসানো হয়। সেই বিদ্যুতেই চলছিল স্কুলের সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ঠিক তিনমাস পর বিদ্যুৎ দফতর স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে ৩২ হাজার ৩০০ টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেন। সেটি এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের বিদ্যুৎ খরচের অগ্রিম বিল।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সেবার বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক ১০ হাজার ৩২৫ টাকা জমা করতে বলেন স্কুলকে। সেই মতো স্কুল ওই টাকা জমা করে দেয়। ওই আধিকারিক বাকি বিলটি যে কোনও ভাবে খারিজের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছিলেন— এমনই দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। এর মধ্যেই সম্প্রতি স্কুলে জুলাই, অগস্ট এবং সেপ্টেম্বরের বিদ্যুতের অগ্রিম বিল বাবদ ৪৭ হাজার ২১৪ টাকার একটি ম্যাসেজ এসেছে স্কুলের রেজিস্টার করা মোবাইল নম্বরে। ফের বিপুল পরিমাণ বিল দেখে কার্যত দিশেহারা স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই বিষয়ে তাঁরা বিদ্যুৎ দফতরে যোগাযোগ করলে তাঁদের লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা বলা হয়।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, তাঁদের সৌর প্যানেলটি ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। স্কুলে দৈনিক বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় সর্বাধিক আড়াই কিলোওয়াট। অর্থাৎ অতিরিক্ত সৌর বিদ্যুৎ তারের মাধ্যমে চলে যায় বিদ্যুৎ দফতরের ফিডারে। তার পরেও এত বিল কী করে হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন শিক্ষকেরা। বিদ্যালয়ের তরফে অনন্ত দাস বলেন, ‘‘গত বছর বিদ্যালয়ের মোট বিদ্যুৎ খরচের বিল ছিল ২৫ হাজার টাকা। সৌরবিদ্যুৎ চালু হওয়ায় ভেবেছিলাম স্কুলের কিছুটা হলেও টাকা বাঁচবে। কিন্তু এখন তো দেখছি উল্টো ছবি। কীভাবে এত টাকার বিল দেওয়া হবে, তা ভেবে পাচ্ছি না।’’

একই অভিযোগ পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রকাশকুমার ঘনারও। তিনি বলেন, ‘‘মাস ছয়েক আগে আমাদের স্কুলে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার তিন মাস পর একটি ৩০০ টাকার বিল পেয়েছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি যে বিল এসেছে, তার পরিমাণ ৩৪ হাজার ১২৭ টাকা।’’ প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরের তরফে বলা হচ্ছে এটি নাকি বকেয়া বিল। বিলেও লেখা রয়েছে, এটা আউট স্ট্যান্ডিং বিল। কিন্তু স্কুলের তরফে কোনও বিল জমা দেওয়া বাকি নেই। আমি বিলটি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরে যোগাযোগ করি। ওঁরা বলেছেন, এই বিল দিতে হবে। কিন্তু এতো টাকার বিল দেওয়ার মত স্কুলের ক্ষমতা নেই।’’

কিন্তু সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ হওয়ার পর কীভাবে এত বেশি টাকার বিদ্যুৎ বিল এল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে কথা বলা হয়েছিল বিদ্যুৎ দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা শ্যামলকুমার হাজরার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘সৌর বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও বিদ্যুতের বিল আসতেই পারে। তবে কীভাবে এত টাকার বিল এল, তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panskura Solar Power Huge Electricity Bill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE