প্রতীকী ছবি।
দাম্পত্য জীবনে টানাপড়েন ছিল। দাবি, সেই সমস্যার সমাধানে স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে সোমবার সন্ধায় গ্রামে বসেছিল সালিশি সভা। ওই সভার পরেই রাতে বাবার বাড়িতে উদ্ধার হল ওই মহিলার রক্তাক্ত দেহ। মহিষাদলের শুকলালপুরের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে তার স্বামী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুকলালপুরের বাসিন্দা শেখ দীন মহম্মদের সঙ্গে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা আসমা বিবির (১৮) বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। বিবাহ বহির্ভূত সন্দেহে দু’জনের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল বলে আসমার পরিবারের দাবি। এর সমাধানে স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল তারা। সোমবার রাতে স্থানীয় একটি ক্লাবের পাশে সালিশি সভা ডাকা হয় বলে দাবি। অভিযোগ, সভাটি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শেখ নিজামউদ্দিনের নেতৃত্বে হয়। সালিশি শেষে আসমা তাঁর বাবার বাড়িতে চনে যান। রাতে সেখানে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী দীন মহম্মদ। অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে বাড়িতেই আসমার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। আর পলাতক ছিল দীন মহম্মদ। আসমার পরিবারের অভিযোগ, তাঁর গলার নলি কাটা ছিল।
আসমার বাবা শেখ আমিরউদ্দিন বলেন, ‘‘মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিল। তাই সোমবার সালিশি সভা হয়। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ মেয়ে-স্ত্রী বাড়ি ফিরি। জামাই অনেক রাতেই বাড়ি ফিরেছিল। কথা ছিল, মঙ্গলবার সকালেই তাঁরা গেঁওখালির ভাড়া বাড়িতে যাবে। কিন্তু এ দিন সকালে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।’’ আসমার মা রোবেয়া বিবির অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর থেকে পণের জন্য চাপ দিত জামাই। মেয়ের গলা টিপে ধরত। বেশ কিছুদিন ধরে জামাই পরকীয়া জড়িয়েছিল। তা নিয়ে কলহ চরমে পৌঁছেছিল।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মৃত্যুর খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় মহিষাদল থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকেই আসমার স্বামী পলাতক ছিল। এ দিন সকালে কোলাঘাট থেকে দীন মহম্মদকে গ্রেফতার করে মহিষাদল থানার পুলিশ। এ দিন তাকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন।
গ্রামে সালিশি সভার ব্যাপারে জানতে চেয়ে ফোন করা হয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শেখ নিজামউদ্দিনকে। তবে তিনি ফোন ধরেননি। সালিশি সভা বসানোর যে দাবি উঠেছে, সে ব্যাপারে মহিষাদল ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এক মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সালিশি সভা বসানো বা তাতে আমাদের দলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য উপস্থিত ছিলেন কি না, তা জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
গোটা ঘটনায় হলদিয়ার এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘খুনের অভিযোগে মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সালিশি সভা বসানোর ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy