মামিকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগে ভাগ্নেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পাল্টা ধৃতের দাবি, মামিই তাঁকে বেড়াতে নিয়ে যেতে বলেছিলেন। তাঁদের ভালবাসার সম্পর্ক। ওই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়়ি থানা এলাকায়।
‘নির্যাতিতা’ এবং অভিযুক্ত কেশিয়াড়ি থানা এলাকারই বাসিন্দা। ‘নির্যাতিতা’র বয়স ৩২ বছর। অভিযুক্ত ৩০ বছরের। সম্পর্কে তাঁরা মামি এবং ভাগ্নে। ২ বছরের বড় মামিকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে যৌন হেনস্থা করেছেন বলে যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১৪ নভেম্বর ‘নির্যাতিতা’র স্বামী কেশিয়াড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। তাতে তিনি জানান, স্ত্রী নিখোঁজ। গত ২০ নভেম্বর নিজেই বাড়ি ফেরেন ওই বধূ। ৬ দিন পর, ২১ নভেম্বর থানায় অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ করেন ভাগ্নের বিরুদ্ধে। ‘নির্যাতিতা’র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে শুক্রবার রাতে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ এবং ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
যদিও অভিযুক্তের দাবি ভিন্ন। শনিবার পুলিশের ঘেরাটোপে আদালতে যাওয়ার পথে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছেন তিনি। যুবকের দাবি, মামির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক। সেটাও এক-দু’দিনের নয়, চার বছরের। তিনি বলেন, ‘‘মামিমার সঙ্গে চার বছর ধরে ভালবাসার সম্পর্ক আমার। মামিমাই একদিন বলেছিল, ‘চলো, আমরা কোথাও পালিয়ে যাই। হলদিয়ায় গিয়েছিলাম আমরা।’’ ধৃতের দাবি, এখন লোকলজ্জার ভয়ে ধরা পড়ে গিয়ে তাঁর নামে নালিশ করেছেন ‘প্রেমিকা’ অর্থাৎ, মামি।
ধৃতের মা বিস্মিত। পুত্রের সঙ্গে ভ্রাতৃবধূর ‘অবৈধ সম্পর্ক’ বা পুত্রের বিরুদ্ধে ভ্রাতৃবধূর ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে বিশ বাঁও জলে তিনি। প্রৌঢ়ার কথায়, ‘‘আমি জানতাম না, ওদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। জানলে নিশ্চয়ই বাধা দিতাম। আমার ছেলেও বিবাহিত। ওর মামিমা ওকে প্রায়শই ফোন করে ডাকত চাষবাস-বাড়ির কাজে সহযোগিতা করার জন্য। আমিও আমার ভাইয়ের বৌকে খুব ভালবাসতাম। শেষে ওই ফাঁসিয়ে দিল আমার ছেলেকে!’’
অভিযোগকারিণীর স্বামী অর্থাৎ অভিযুক্তের মামা বলছেন, এখন তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। আইন-আদালতের মাধ্যমেই ফয়সালা হবে।
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানাচ্ছে, প্রাথমিক তদন্তে অপহরণের অভিযোগ তেমন জোরাল নয়। তবে ধর্ষণের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুক্রবার অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আমরা নিজেদের হেফাজতে নিয়েছি। তদন্ত চলছে। এখনই এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।’