E-Paper

ভারী বৃষ্টি, কটালের সাঁড়াশিতে সতর্কবার্তা

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বিকেল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সাথে বজ্রপাত-সহ প্রবল বৃষ্টিপাত চলে। হলদিয়া এলাকায় বজ্রপাতে চার জনের মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৪১
water logged at different areas of midnapore

ভরা কটাল আর নিম্নচাপের জেরে উত্তাল রূপনারায়ণ। পাড় ছাপিয়ে জল ঢুকছে তমলুকের সংলগ্ন এলাকায়। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে ঝোড়ো হাওয়া-সহ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। সোমবার বিকেল থেকে দফায় দফায় হালকা বৃষ্টি শুরু হলেও মঙ্গলবার থেকে রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে জেলার বিভিন্ন ব্লকে চাষের জমিতে অতিরিক্ত জল জমা ছাড়াও কিছু এলাকায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়েছে।

ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়ার সাথে পূর্ণিমার ভরা কটালের জোয়ার থাকায় জলোচ্ছ্বাস থেকেই বাঁধ রক্ষা করতে দিঘার উপকূলবর্তী সমুদ্র বাঁধ এবং হুগলি, রূপনারায়ণ, হলদি, কাঁসাই নদীর বাঁধের পরিস্থিতির উপরে নজরদারি চালাচ্ছেন সেচ দফতরের আধিকারিক-কর্মীরা। তমলুক শহরের দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া ও মহিষাদল ব্লকের দনিপুরের কাছে রূপনারায়ণ নদের বাঁধে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতর থেকে সমস্ত ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। সব ব্লকেই উদ্ধারকারী দল সহ ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরিকালীন সাহায্যের জন্য ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজরদারির জন্য বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েক দফায় বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বিকেল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সাথে বজ্রপাত-সহ প্রবল বৃষ্টিপাত চলে। হলদিয়া এলাকায় বজ্রপাতে চার জনের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতভর প্রবল বৃষ্টি হয়। জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড়ে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ২৭.২ মিলিমিটার। আর মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় গড়ে ৭২.২ মিলিমিটার বৃষ্টিত হয়েছে। অর্থাৎ দু’দিনে জেলায় গড়ে মোট ৯৯.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম এলাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ১৬২.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

দু’দিনের ভারী বৃষ্টির জেরে জেলার অধিকাংশ এলাকায় আমন চাষের জমিতে ধান রোয়ার কাজে সুবিধা হয়েছে বলে দাবি কৃষি দফতরের। তবে নন্দীগ্রাম-১, তমলুক, ভগবানপুর-১, এগরা-১ ব্লক সহ জেলার কয়েকটি এলাকায় জমিতে অতিরিক্ত জল জমার কারণে চাষের কাজে সমস্যা হচ্ছে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) প্রবীণ মিশ্র বলেন, ‘‘সোমবার থেকে জেলায় বৃষ্টির জেরে চাষের জমিতে যে পরিমাণ জল জমেছে তাতে আমন ধান রোপণের কাজে সুবিধা হয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় জমিতে জল জমায় সমস্যা হতে পারে। ব্লক কৃষি আধিকারিকদের এবিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’

ভারী বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নন্দকুমার ব্লকের কুমরআড়া গ্রামপঞ্চায়েতের অফিসে জল ঢুকে যায়। ময়নার বলাইপন্ডা বাজারের চাতাল জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তবে বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বিকেল থেকে বজ্রপাত সহ বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে হলদিয়া ব্লকে ২ জন, হলদিয়া পুরসভা এলাকায় একজন ও সুতাহাটা এলাকায় একজন মোট ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বৃষ্টির জেরে কোনও ব্লক থেকে এখনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। আবহাওয়া দফতর থেকে বুধবার বিকেলের পর পরিস্থিতির উন্নতির আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ণিমার ভরা কটালের জন্য সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা সহ জেলার সমস্ত এলাকায় ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক থাকতেবলা হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Heavy Rainfall digha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy